একজন চাকরিপ্রার্থীর একটি সুন্দর ও সঠিক জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) তৈরি করা খুব দরকারি। অনেকে আছে, তাড়াহুড়ো করে কোনোরকমে একটি জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে নিয়োগদাতার কাছে পাঠিয়ে দেয়। মনে রাখবেন, এ রকম কিছু করলে যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। ভালো হয়। আগেই যদি একটি জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে রাখেন।
১· চাকরিপ্রার্থীদের কেউ কেউ মনে করেন, জীবনবৃত্তান্ত বড় হলে ভালো। তাঁরা পাঁচ বা ছয় পৃষ্ঠা পর্যন্ত জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নিয়োগদাতা আপনার জীবনবৃত্তান্ত দেখার জন্য বড় জোর ৫০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট সময় দেবেন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বড় করলে আপনার অভিজ্ঞতা, যোগ্যতার দিকটি খুঁজে বের করতে তাঁর সময় লাগবে। এতে তিনি বিরক্তও হতে পারেন। তাই জীবনবৃত্তান্ত হতে হবে সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট। সদ্য পাস করা একজন প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত দুই পৃষ্ঠার বেশি না হওয়াই ভালো।
২· বাক্যগঠনগত ভুল, এমনকি একটি বানান, দাড়ি, কমা-কোনো ধরনের ভুল যেন না হয়। জীবনবৃত্তান্ত তৈরির পর খুবই সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে ভালো ইংরেজি ও বাংলা জানেন, এমন কাউকে দিয়ে দেখিয়ে নিন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যত বেশি বা ভালো হোক না কেন, যত অভিজ্ঞতা আপনার থাকুক না কেন, জীবনবৃত্তান্তে ভুল হলে শুরুতেই আপনার ব্যাপারে নিয়োগদাতার নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। সাক্ষাৎকারের জন্য তিনি আপনাকে নাও ডাকতে পারেন।
৩· জীবনবৃত্তান্তে থাকুক যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঠিক প্রতিফলন। জীবনবৃত্তান্ত তৈরির পর খেয়াল করুন, আপনার সম্পর্কে অতিরিক্ত বা বাড়াবাড়ি রকমের কিছু বলা হয়েছে কি না। কম্পিউটারে দক্ষতা এবং সাবলীল ইংরেজি বলা ও লেখার বিষয়গুলোতে খেয়াল করুন। যা পারবেন না তা লিখবেন না।
৪· জীবনবৃত্তান্ত আকর্ষণীয় হতে হবে। তবে বেশি আকর্ষণীয় করতে গিয়ে রঙিন কালির ব্যবহার না করাই ভালো। নিয়োগকর্তার নজরে বিশেষ কিছু আনতে চাইলে ওই জায়গাটা আন্ডারলাইন করতে পারেন। বোল্ডও করতে পারেন। তবে অনেক নিয়োগকর্তা আন্ডারলাইন বা বোল্ড বিশেষ পছন্দ করেন না। স্বাভাবিক অবস্থাকেই তাঁরা গুরুত্ব দেন। জীবনবৃত্তান্ত লিখুন একেবারে সাদা কাগজে, দেখতে সুন্দর এমন ফন্টে।
৫· জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে রাখলে পরে শুধু নির্দিষ্ট জায়গা পরিবর্তন করে কাজে লাগানো যায়। খেয়াল রাখবেন, আপনি যে পদের জন্য আবেদন করছেন, চাকরিদাতার শর্ত অনুযায়ী আপনার জীবনবৃত্তান্তটি সেভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে কি না। আর খেয়াল রাখবেন রেফারেন্সের বিষয়টি। পারলে এমন ব্যক্তিকে রেফারেন্স হিসেবে দিন, যিনি ওই ক্ষেত্রে (ফিল্ড) পরিচিত। যাঁকে বা যাঁদের আপনি রেফারেন্স হিসেবে দিচ্ছেন, তাঁদের আগেই জানিয়ে রাখবেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যারিয়ার ফোর গ্রাজুয়েটস ডট অরজি অবলম্বনে
জাফির জামান
সূত্রঃ প্রথম আলো, জুন ২৭, ২০০৯
Leave a Reply