সুর তাল লয়ের মিলনে যেমন হয় গানের সৌন্দর্য তেমনি মুখ, চোখ, হাত, পা, নখ আলাদা আলাদাভাবে সুন্দর হয়ে উঠলে ফুটে ওঠে পুরো সৌন্দর্য। অর্থাৎ সৌন্দর্য বিচারে আপনার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাপারই হতে হয় ঠিকঠাক। আর তাই আপনার হাতের ও পায়ের নখগুলো হতে হবে পরিমাপমতো ও সুসজ্জিত। নখের এখনকার ফ্যাশনের পাশাপাশি নখের যত্ন নিয়ে বলেছেন রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন।
নখের ফ্যাশন
বেশ অনেক দিন ধরেই নখের নানা রকম ফ্যাশন চলছে। অনেকে লম্বা স্কয়ার বা চারকোনা, আবার অনেকে ছোট ও চারকোনা আকারে নখ রাখেন। তাতে করেন ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিওর। তরুণীরা অনেকে ডিম্বাকার অথবা সামনের দিকটা একটু তীক্ষ্ন করে নখ রাখতেও পছন্দ করছেন। আর নখের সাজে ব্যবহার করছেন স্বচ্ছ বা রঙিন নেইলপলিশ।
ধরন বুঝে নখ
ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধরন বুঝে নখ রাখা উচিত। যাঁদের নখ পাশে চওড়া বা চ্যাপ্টা, তাঁরা চারকোনা আকারে নখ রাখতে পারেন। যাঁদের নখ ছোট তাঁরা একটু লম্বা ও তীক্ষ্ন করে নখ রাখলে ভালো দেখাবে। অথবা ডিম্বাকারও রাখতে পারেন।
নখের সাজ
বেশ কিছুদিন আগ পর্যন্ত অনেকেই বিভিন্ন ধরনের নেইলপলিশ, পাথর, গ্লিটার, চাঁদ, তারা, ফুল, প্রজাপতিসহ নানা আকৃতিতে নখ সাজাতেন। তবে আজকাল বেশির ভাগ মেয়েই হাতের নখে পোশাকের রং অনুযায়ী এক রঙের নেইলপলিশ বেছে নিচ্ছেন। অনেকে আবার ন্যাচারাল বা স্বচ্ছ রাখতেই পছন্দ করছেন। ফ্রেঞ্চ ম্যানিকওরের পাশাপাশি এখন আগের মতো গাঢ় রঙের নেইলপলিশের ফ্যাশন এসেছে। যেমন আজকাল লাল, মেরুন, ম্যাজেন্টা, কপার প্রভৃতি রঙের নেইলপলিশের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। তবে যাঁরা অফিস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তাঁরা স্বচ্ছ বা ন্যাচারাল রঙের নেইলপলিশ ব্যবহার করলেই ভালো দেখাবে। আবার পার্টি কিংবা অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় জমকালো পোশাকের সঙ্গে গাঢ় রংটাই বেশি ভালো লাগবে। এ ক্ষেত্রে নেইলপলিশটা অবশ্যই যেন ভালো ব্র্যান্ডের হয়।
নখের যত্ন
নখের সাজের পাশাপাশি নখের যত্নেরও প্রয়োজন রয়েছে। সপ্তাহে অন্তত একদিন গরম পানিতে শ্যাম্পু এবং লবণ দিয়ে পাঁচ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পছন্দমতো আকারে নখ ফাইল করে নখের ওপর ভ্যাসলিন বা ম্যাসাজ ক্রিম লাগিয়ে পুশার দিয়ে হালকাভাবে মরা চামড়া তুলে ফেলুন। তারপর কাটার দিয়ে কেটে পরিষ্কার করুন। আপনি ক্রিম দিয়েও ম্যাসেজ করতে পারেন। ম্যাসেজের পর নেইলপলিশ লাগান। এ ক্ষেত্রে তিন দিন পরপর দুই দিনের বিরতি দেওয়া ভালো। অর্থাৎ এই দুই দিন নখে নেইলপলিশ লাগাবেন না। লাগালে নেইলপলিশের রাসায়নিক প্রভাবে নখ হলুদ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া নানা প্রকার ছত্রাকেরও সংক্রমণ হতে পারে। আলসেমি করে নেইলপলিশ না উঠিয়ে তার ওপর আরেক প্রলেপ লাগালে আস্তে আস্তে অতিরিক্ত পলিশ জমে নখের এনামেল নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
যাঁদের নখের ও হাতের চামড়া খুব রুক্ষ তাঁরা প্রতিদিন জলপাই তেল ঘড়ির কাঁটার দিকে অথবা বিপরীতে ম্যাসাজ করুন। যাঁরা ঘরে কাজ করেন অর্থাৎ সবজি কাটার পর নখে যে দাগ হয় তাতে একটু লেবু ঘষে নিতে পারেন। সপ্তাহে দুই-তিন দিন তেলের সঙ্গে মোটা দানার চিনি মিশিয়ে হাত, পা ও নখে ঘষতে পারেন।
অনেকের নখ খুব সহজে ভেঙে যায়, তারা যথাসম্ভব পানিটা এড়িয়ে চলুন। এ ক্ষেত্রে কাজের সময় হাতে গ্লভস ব্যবহার করতে পারেন। নখের যত্নের পাশাপাশি গোসলের সময় নখগুলো নেইল ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করুন। কারণ সৌন্দর্যের পূর্বশর্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা।
শান্তা তাওহিদা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২৩, ২০০৯
Leave a Reply