সেদিন এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেছি। বাড়িতে ঢুকে ডাইনিং স্পেসের সামনে যেতেই দেখি, বন্ধুর মা খাবার টেবিলের ওপর চমৎকার একটি হালকা সবুজ চেক কাপড় বিছিয়ে মাপজোক করছেন। হেসে বললেন, ‘দেখো তো মা, টেবিল ক্লথের ঝুলটা ঠিক আছে কি না?’ খালাম্মার টেবিল ক্লথ দেখে পুরোনো দিনে ফিরে গেলাম। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন প্রায় সব বাড়িতেই পড়ার টেবিল, খাবার টেবিলে নানা রকমের টেবিল ক্লথ বিছানো দেখতে পেতাম। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে টেবিল ক্লথের চলটা হারিয়েই গিয়েছিল বলতে গেলে! এর পরিবর্তে চলে এসেছিল টেবিলের ওপর গ্লাস টপ বা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের টেবিল কভার। কিন্তু এখন আবারও চল এসেছে টেবিল ক্লথের। আজকাল প্রায় বাড়িতেই দেখা যাচ্ছে ডাইনিং টেবিলের ওপর চমৎকার সব টেবিল ক্লথ, যার কোনোটি প্রিন্টেড, এমব্রয়ডারি করা, আবার কোনোটি হয়তো খাবার ঘরের পর্দার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে তৈরি। আজকাল অন্দরসজ্জার ব্যাপারে গৃহিণীরা অত্যন্ত সচেতন। আর এ কারণেই বিভিন্ন দোকানে গৃহিণীদের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী গৃহস্থালির প্রায় সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে।
আপনি যদি আপনার খাবার ঘরের টেবিলটির জন্য একটি সুন্দর টেবিল ক্লথ কিনতে চান, তাহলে চলে যেতে পারেন আড়ং, প্রবর্তনা, বাংলার মেলা বা গুলশান মার্কেটে। এখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন ডিজাইন ও নানা মাপের টেবিল ক্লথ। আর যদি খরচ বাঁচাতে চান, তাহলে আপনার সাধ্য অনুযায়ী নিজেই ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারেন পছন্দ অনুযায়ী টেবিল ক্লথ। ঘরে বসে টেবিল ক্লথ তৈরি করতে হলে কাপড় কিনতে সোজা চলে যান চাঁদনী চক মার্কেটে। এখানে বিছানার চাদর, পর্দা ইত্যাদির জন্য সম্পূর্ণ সুতি, একটু ভারী ও সাড়ে তিন হাত বহরের (তাতে জোড়া পড়বে না) একরঙা, প্রিন্টেড, চেক স্ট্রাইপ বিভিন্ন রকমের কাপড় পাওয়া যায় এবং দামও কম। আপনি টেবিলের মাপ অনুযায়ী কিনতে পারেন কাপড়। ঘরে সেলাই মেশিন থাকলে নিজেই টেবিল ক্লথের চারপাশ সেলাই করে নিন। আর সেলাই মেশিন না থাকলে যেকোনো দর্জিকে দিয়ে অল্প মজুরিতে এ কাজ করিয়ে নিতে পারেন। আর যদি আপনার টেবিল ক্লথটি আরও একটু আকর্ষণীয় করতে চান, তাহলে এক রঙের যেকোনো কাপড়ের ওপর ব্লকপ্রিন্ট, অ্যাপ্লিক বা এমব্র্রয়ডারিও করাতে পারেন। এগুলো করাতে বেশি দূরে যেতে হবে না। আপনার পাশের ফ্ল্যাট বা পাশের বাড়িতেই পেয়ে যাবেন কোনো একটি বুটিক, যেখান থেকে অনেক কম খরচে এগুলো করিয়ে নিতে পারবেন। টেবিল ক্লথের পাশাপাশি আরেকটি জিনিস জুড়ে দিতে চাইছি, তা হলো ন্যাপকিন। টেবিল ক্লথের সঙ্গে ম্যাচিং করে আপনি ডিনার ও টি ন্যাপকিনও তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। তাহলে খাবার পরিবেশনের সময় আপনার ডাইনিং টেবিলটি হয়ে উঠবে আরও আকর্ষণীয়।
তবে আর দেরি কেন, আপনার মনের মতো টেবিল ক্লথটি বন্ধুবান্ধবকে ডেকে দিন একটি ডিনার অথবা লাঞ্চে!
গাজী শারমীন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৬, ২০০৯
Leave a Reply