গ্রীষ্মের ঝলসানো গরমকে উপেক্ষা করে প্রকৃতি সেজেছে লাল আর হলুদ ফুলে। প্রকৃতির এই বৈচিত্র্যের সঙ্গে তাই আপনার সাজটাও হওয়া চাই মানানসই। গ্রী্নে আপনার সাজ কেমন হবে, তা নিয়ে বলেছেন রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান।
গ্রী্নে গরম, ঘাম আর ধুলোবালির জন্য আপনার ত্বকের চাই বাড়তি যত্ন। সুন্দর থাকার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ত্বক পরিচর্যা। পাশাপাশি এই গরমে আপনার ত্বককে আরও বেশি সজীব করে তোলার জন্য করতে পারেন হালকা ও স্মিগ্ধ মেকআপ। তবে গরমের দিনে যত কম মেকআপ করা যায়, ততই ভালো। কারণ, গরমের সময় ত্বকের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুব্যবস্থা থাকা উচিত।
আপনার যদি প্রতিদিনই মেকআপ করার প্রয়োজন হয়, তাহলে কিছুটা রঙিন আভাযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। আবার যদি আপনি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতেই চান, তাহলে ম্যাটিফায়িং ফাউন্ডেশন লাগান। এতে ত্বক কম ঘামবে এবং কম তৈলাক্ত হবে। একই সঙ্গে ত্বককে সজীব দেখাবে। এর ওপর প্রয়োজনে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষ করে মুখের টি-জোনে (কপাল ও নাক), যেখানে সাধারণত ঘাম বেশি হয়। কেননা, গরমের মেকআপে একধরনের ম্যাট-ভাব আসবে। আর সকালে বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
গরমে ঘামে অনেকের মেকআপই গলে ছড়িয়ে যায়। এ জন্য মেকআপের শুরুতে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। তেল ছাড়া (অয়েল ফ্রি) ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। এরপর পাঁচ থেকে ১০ মিনিট একটি বরফ কিউব ঘষে নিন। তৈলাক্ত ত্বক হলে এরপর অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ব্যবহার করুন। যাঁদের ত্বক শুষ্ক থেকে স্বাভাবিকের মধ্যে, তাঁরা টোনার ব্যবহার করতে পারেন। মেকআপের বেইজ হিসেবে ওয়াটার বেইজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ত্বকে কালো দাগ থাকলে তা কনসিলার ব্যবহার করে ঢেকে দিন। এর ওপর লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে চেহারায় একটা স্বাভাবিক আভা ফুটে উঠবে। অথবা শুধু চোখের নিচের অংশে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে এটুকুই পুরো মুখে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর চোখের পাতায় লাগান হালকা বাদামি শ্যাডো। শীতের সময় যে ফাউন্ডেশন আপনার ত্বকে মানিয়ে গিয়েছিল, গরমের দিনে হয়তো দেখা যাবে আগের তুলনায় এক অথবা দুই শেড গাঢ় ফাউন্ডেশন নিতে হচ্ছে। তবে খেয়াল রাখুন, এই শেড যেন আপনার গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই হয়। ওয়াটারপ্রুফ মাশকারা ও পেনসিল আইলাইনার ব্যবহার করুন। দিনের বেলার মেকআপে চোখের নিচের পাতার আইলাইনার ও মাশকারা ব্যবহার না করাই ভালো। ব্রোঞ্জ, সোনালি, সোনালি-সবুজ অথবা কাঁচা সবুজ রঙের আইশ্যাডোর সঙ্গে কালচে বাদামি অথবা বাদামি মাশকারা ব্যবহার করলে গরমের মেকআপটা সম্পূর্ণতা পাবে। ব্লাশন ব্যবহারে সাবধান ও পরিমিত হন। হাতের সাহায্যে ব্লাশন লাগালে বেশ একটা স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য আসবে। তবে দিনের বেলায় ব্লাশন এড়িয়ে যেতে পারলে ভালো হয়। ম্যাট অথবা পাউডার ধরনের লিপস্টিক না লাগিয়ে গ্লসি ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ গোলাপি, কোরাল, তামা অথবা বিভিন্ন ফলের রং বেছে নিতে পারেন। লিপ ব্রাশ ব্যবহার না করে আঙুল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন।
ওয়েট টিস্যু পেপার দিয়ে বারবার ঘাম হওয়া ও তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া স্থানগুলোতে হালকা চাপ দিয়ে নিতে পারেন। গরমে মেকআপ যেমন যত্নসহকারে করতে হবে, তেমনি মেকআপ তুলে ফেলতেও বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। সঠিকভাবে মেকআপ পরিষ্কার না করা হলে ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনার ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী ক্লিনজিং ফোমিং অথবা স্টিমুলেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে মেকআপ অবশ্যই তুলে ফেলবেন। তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। আর প্রচুর পানি খাওয়া ও নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৬, ২০০৯
Leave a Reply