বাড়ি থেকে বের হতে হবে মনে হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন চট্টগ্রামের রোকেয়া (ছদ্মনাম)। মোটেও ঘরকুনো মেয়ে নন তিনি। বরং পড়াশোনার পাশাপাশি গান করা, নাটক করা তাঁর শখ। শিশুদের সংগঠন শিশু পরিষদের সক্রিয় সদস্য তিনি। প্রয়োজনে টিউশনিও করতে হয়। ঘর থেকে বের না হলে কি আর চলে? তবু একা বের হতে ভয়। এক বিকেলে বের হলেন বোনকে নিয়ে। ক্ষণিক বাদেই বুঝতে পারলেন, কে যেন অনুসরণ করছে ছায়ার মতো। পেছন থেকে সেই বখাটের আওয়াজ, ‘দাঁড়াও, তোমার সঙ্গে জরুরি কথা আছে···তোমাকে আমার খুব পছন্দ···!’ শুধু পিছু হাঁটাতেই থেমে থাকে না বখাটের উৎপাত। কথা না শুনলে অপহরণ করবে, তুলে নিয়ে যাবে এ রকম হুমকিও দেয় যখন-তখন। আতঙ্কে কুঁকড়ে থাকেন রোকেয়া।
আসা-যাওয়ার পথে পাড়ার ছেলেদের বাঁকা চাহনি, শিস বাজানো, বাজে ইঙ্গিত প্রতিনিয়তই তাড়িয়ে বেড়ায় কিশোরীদের। উত্ত্যক্ততা রোধ করতে কিশোরীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। ‘ইভ টিজিং একটি জঘন্য অপরাধ, সোচ্চার হোন, প্রতিরোধ করুন’-এ ্লোগান নিয়েই ৬ মে চট্টগ্রামের রহমানিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে প্রচারাভিযান শুরু করেছে সিএমপি; সহযোগিতায় সেভ দ্য চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়া।
সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) বনজ কুমার মজুমদার বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ ছাত্রীর মধ্যে পুলিশের নম্বরসংবলিত প্রচারপত্র, পোস্টার, স্টিকার বিতরণ করেন। তিনি বলেন, কোনো ছাত্রী উত্ত্যক্ত হলে তার নাম ও ৩৭৩ লিখে পুলিশের উল্লেখ করা যেকোনো নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে সহযোগিতা চাইতে পারবে। এরপর পুলিশ কর্তৃপক্ষই ফোন করে জেনে নেবে বিস্তারিত। যেকোনো অবস্থায় অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে। পর্যায়ক্রমে আরও ২০টা স্কুলে গিয়ে ছাত্রীদের সহযোগিতা করার কথা বলা হবে এবং প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২০, ২০০৯
Leave a Reply