এক পাশে শহীদ মিনার, আরেক পাশে লাল-সবুজের পতাকা। একদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষের ঢল, আরেক দিকে সিডর-পরবর্তী সুন্দরবনের জেগে ওঠা। এসবই মূর্ত হয়েছে শিল্পীদের হাতে। তবে রং-তুলিতে আঁকা ক্যানভাসে নয়। এসবই শিল্পীরা তৈরি করেছেন ফুল দিয়ে। পুষ্পশিল্পী-আরও খোলাসা করে বলতে চাইলে ইকেবানা-শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় অপরূপ সুন্দর ফুলের তৈরি এই প্রতিকৃতিগুলো যেন সেদিন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। আয়োজনটা ঢাকার ইউনেসকো ক্লাবের পুষ্প প্রদর্শনী।
জাপানি ফুল সাজানোর একটি পদ্ধতি হলো ইকেবানা। পৃথিবীজুড়ে এই ইকেবানার বন্দর রয়েছে। রয়েছে বাংলাদেশেও। সেদিনের পুষ্প প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিল ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা ৭৫ জন প্রতিযোগী। সকালে বাণিজ্যমন্ত্রী লে· কর্নেল (অব·) মুহাম্মদ ফারুক খান প্রদর্শনীর উদ্বোধন করার পর প্রতিযোগীরা শুরু করে ফুল দিয়ে ইকেবানা তৈরি। প্রদর্শনী ততক্ষণে লোকে লোকারণ্য। একেবারে আবালবৃদ্ধবনিতা সব শ্রেণীর মানুষেরই ছিল উপচে পড়া ভিড় আর প্রবল আগ্রহ। একেবারে দেশি ফুল দিয়ে তৈরি ইকেবানাগুলো দেখে মুগ্ধ হচ্ছিল দর্শনার্থীরা। নয় সদস্যের বিচারক প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন ইকেবানা বিশেষজ্ঞ মালেকা খান। কথায় কথায় জানা গেল, ইকেবানা মূলত জাপানি বলে পরিচিত হলেও এটি আসলে এসেছে চীন দেশ থেকে। তিনি আরও বললেন সম্ভাবনার কথা। কারণ, ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার, তা তো ইকেবানা-শিল্পের জন্যও প্রয়োজন। অবশেষে প্রতিযোগীদের পুরস্কারের পালা। শিক্ষাসচিব সৈয়দ আতাউর রহমান ও জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মি· ওমুয়া হিরোসি পুরস্কার তুলে দিলেন ১০ বিজয়ীর হাতে। এ সময় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী। আর পুরো অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ইউনেসকো ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী।
ফয়সাল সন্ধী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১০, ২০০৯
Leave a Reply