অনেকেই জানেন পিটুনিয়া ফুল ফোটে গ্রী্ন ও বর্ষাকালে। আসলেও তাই। কিন্তু পুষ্পবিজ্ঞানের কল্যাণে এখন শীতেও পিটুনিয়া ফুটছে। পিটুনিয়ার এমন কিছু হাইব্রিড জাত এসেছে যেগুলো গ্রী্নের চেয়ে শীতেই ভালো ফুল দেয়। বাণিজ্যিক কারণে সেসব জাত এখন আমাদের দেশে চলে এসেছে। এ এক নতুন সংযোজন। বাহারি রূপের প্রচুর ফুল দেওয়া যেসব পিটুনিয়া ফুলের ছবি বইপুস্তক আর ক্যালেন্ডারে দেখে এসেছি, সেসব ফুল এখন এই সমতল বাংলার মাটিতে অনায়াসে ফুটছে।
সাধারণ জাতের পিটুনিয়া ফোটে বছরের যেকোনো সময়। সেগুলো ছোট আকারের ফুল দেয়, দেখতেও ততটা আকর্ষণীয় নয়। কিন্তু মাল্টিফ্লোরা ও গ্রান্ডিফ্লোরা প্রকৃতির পিটুনিয়া ফুল দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। গ্রান্ডিফ্লোরাও ফোটে গরমের দিনে বা বর্ষাকালে। সাধারণ জাতের পিটুনিয়া ফুল দেখতে মাইকের মতো, ছোট ও একরঙা সিঙ্গল পাপড়ির। গোলাপি, লাল, হলদে, বেগুনি ইত্যাদি নানা রঙের পিটুনিয়া ফোটে। সাদা পিটুনিয়াও আছে। তবে একরঙা ফুলের মধ্যে অন্য রঙের মিশেল দিয়ে এখন নতুন অনেক জাতের পিটুনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি জাত এ দেশে শীতকালে বেশ ভালো ফুল দিচ্ছে-চেরি ফ্রস্ট ও আলট্রা ব্লু স্টার। চেরি ফ্রস্ট জাতের পিটুনিয়া ফুলের বৈশিষ্ট্য হলো এর পাপড়ির কিনারা সাদা। পুরো ফুলের যুক্ত পাপড়ির প্রান্তে তাই একটা সাদা বর্ডার দেখা যায়। পাপড়ির কিনারা কোঁচকানো। নীলচে রঙের চেরি ফ্রস্টকে বলা হয় ব্লু ফ্রস্ট আর টকটকে লাল রঙের ফুল ফোটা চেরি ফ্রস্ট জাতের পিটুনিয়াকে বলা হয় ফায়ার ফ্রস্ট। উভয় জাতের ফুলের কেন্দ্রস্থল সাদাটে। পূর্ণভাবে ফোটা ফুলের পাপড়ির বিস্তার প্রায় সাড়ে তিন ইঞ্চি। সাধারণ পিটুনিয়ার চেয়ে ফুল আকারে বড়।
আলট্রা ব্লু স্টার জাতের পিটুনিয়া ফুলের পাপড়িতেও সাদা দাগ আছে। তবে সে দাগ চেরি ফ্রস্টের মতো পাপড়ির কিনারা বরাবর নয়, পাপড়ির ঠিক মাঝখানে লম্বালম্বিভাবে। পাঁচটি সংযুক্ত পাপড়ির এ জাতের পিটুনিয়া ফুলের পাঁচটি সাদা রেখা ফুলের মাঝখান থেকে এমনভাবে উঠে আসে যে দেখলে মনে হয় একটা তারা ফুটে আছে। আলট্রা মানে চরম। ফুলের যে রঙ তাতে ওর চেয়ে বেশি নীল আর হতে পারে না। যথার্থই এ জাতের নাম। এ জাতের গাছ ও ফুল মেঘলা আবহাওয়া এবং কুয়াশা সইতে পারে। ফুল ফোটার পর চার-পাঁচ দিন থাকে। বীজ থেকেই চারা হয়। জমিনে ঘন করে সেসব চারা লাগালে তাতে প্রচুর ফুল ফোটে, টবেও ভালো ফোটে। প্রতি টবে লাগাতে হয় একটি চারা। ফুলের ব্যাস প্রায় চার ইঞ্চি। এ ছাড়া বেভো ও ফ্লাশ হাইব্রিড জাতের পিটুনিয়াও এখন পাওয়া যাচ্ছে। এর প্রতিটি জাতের প্রায় ডজনখানেক রঙ রয়েছে।
পিটুনিয়া গাছের ডালপালা-পাতা বেশ নরম ও রসালো। হালকা সবুজ। পাতা অনেকটা মখমলের মতো। নরম প্রকৃতির এসব পাতা ভিজিয়ে জল ঢাললেই সর্বনাশ। পাতা ও গাছ পচে মরে যাবে। গাছ লাগিয়েও কোনো ফুলের দেখা পাওয়া যাবে না। এ জন্য জল দেওয়ার সময় ডালপাতা খানিকটা উঁচু করে ধরতে হবে, গোড়ার মাটিতে শুধু জল দিতে হবে অল্প করে। বেশি জৈব সারে ও ভেজা মাটিতেও গাছে পচন ধরে। তাই টান মাটিতে রোদেলা জায়গায় ওকে লাগাতে হবে। যারা বৈচিত্র্যসন্ধানী তারা শীতের পিটুনিয়া খুঁজতে পারেন-
ডালিয়া নার্সারি, কেডিএ আউটার বাইপাস রোড (আল-ফারুখ সোসাইটির পাশে), সোনাডাঙ্গা, খুলনা, ফোন ০১৭১৪০৫৭৭৮৩।
কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারি, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন চত্বর, ফার্মগেট, ঢাকা, ফোন ০১৮১৯১৯৪৩০৩।
মৃত্যুঞ্জয় রায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৩, ২০০৮
Mushiqur Rahman
ফেনীতে বীজ গুলো কিভাবে পেতে পারি?
Bangla Health
উপজেলা বা জেলা পরিষদের নার্সারীতে খোঁজ নিতে পারেন।