গত বুধবার নারীমঞ্চে সুচিত্রা সরকারের ‘নারী কি দুর্বল প্রজন্ম হয়েই থাকবে?’ লেখাটা পড়লাম। প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই পুরুষরূপী ওই জানোয়ারগুলোর বিকৃত আচরণের প্রতিবাদ করার জন্য। আমি জানি না ওই বর্বরগুলোর মধ্যে তথাকথিত কোনো উচ্চশিক্ষিত লোক ছিল কি না কিংবা আরও বড় ডিগ্রিধারী কেউ-তা হয়তো জানা যাবে না, থাকলেও অবাক হব না। যারা আপনার সঙ্গে এই আচরণ করেছে, দোষ শুধু তাদের নয়-এ দোষ, এ লজ্জা পুরো সমাজব্যবস্থার, পুরো জাতির।
আমরা এমন এক সমাজব্যবস্থায় আছি, যেখানে আর দশটি পণ্যের মতো নারীকেও ব্যবহার করা হয় পণ্য হিসেবে। এ এমন এক দেশ, যেখানে ছাত্রী নির্যাতনের জন্য শিক্ষককে শাস্তি পেতে হয় না, পুরস্কৃত করা হয় ধর্ষণকারীকে, ধর্মীয় বেড়াজালে শাস্তি দেওয়া হয় ধর্ষিতাকে। শারীরিক ও মানসিকভাবে নারী অবিরাম ধর্ষিত হয় ঘরে এবং বাইরে। মাঝেমধ্যে খুব বিমর্ষ হয়ে পড়ি, নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়, যখন ভাবি আমিও একজন পুরুষ-(হয়তো নিজের অজান্তেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা আমাকেও পেয়ে বসে কখনো কখনো) অপমানে মাথা হেঁট হয়ে আসে। মনে হয় নতজানু হয়ে বলি, ‘ক্ষমা করো নারী।’ এর পরেও স্বপ্ন দেখি নারী একদিন তার প্রাপ্য সম্মান পাবেই-এ রুগ্ণ সমাজব্যবস্থা একদিন ভাঙবেই, আমরা ভাঙবই।
সবুজ
শহীদ শামসুল হক হল
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ময়মনসিংহ-২২০২
সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০২, ২০০৮
Leave a Reply