শীতকাল শুরু হলো মাত্র। ঠান্ডার প্রকোপ এখনো ততটা তীব্র হয়। তবু এখন থেকেই চাই শীতের প্রস্তুতি। এ জন্য লেপ-কম্বলের ওম তো লাগবেই।
সব সময় তো আর হাড় কাঁপানো শীত পড়ে না। কম ঠান্ডায় লেপ গায়ে দিতেও বেশ অস্বস্তি হয়। তখন কম্বলটাই বেশি আরামদায়ক। কম্বল তৈরি কম্বল (রেডিমেড) কেনাই ভালো। বাজারে নানা ধরনের কম্বল পাওয়া যায়। বড় কম্বলের আকার হলো ২০০ x ২৪০ সেন্টিমিটার, ছোট কম্বল ১৬০ x ২০০ সেন্টিমিটার আর শিশুদের কম্বল ১১০ x ১৪০ সেন্টিমিটার। বিদেশি কম্বলো ক্ষেত্রে প্রস্তুতকারী দেশ এবং আকারের ওপর এর দাম নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে বড় কম্বলের দাম পড়বে প্রায় দুই থেকে চার হাজার টাকা এবং ছোট কম্বল এক হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা। শিশুদের জন্য কম্বলের দাম পড়বে ৭০০-১১০০ টাকার মধ্যে। এ ক্ষেত্রে কিছু পরিচিত ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে প্র্যাডো, কেকিউ, সুপার রয়্যাল, প্রেসিডেন্ট, টয়ো জাপান, টয়ো মোরা, গোল্ডেন সগ্স, ওয়াচি প্রভৃতি। এসব কম্বলের যত্নের ব্যাপারে নিউ মার্কেটের প্রমা বেডিং সেন্টারের বিক্রেতা সোহাগ জানান, বিদেশি কম্বল পরিষ্কার করতে ড্রাইওয়াশ করাটাই শ্রেয়। কম্বল যখন ব্যবহার করা না হয় তখন প্যাকেটে ভরে রাখাটাই উত্তম।
অন্যদিকে আছে কম দামের কম্বল যা গার্মেন্টস কম্বল হিসেবেই পরিচিত। এসব কম্বলের আকার হয় প্রায় চার হাত বাই পাঁচ হাত। দেশি তৈরি এ ধরনের এক রঙের কম্বলের দাম ২০০-৩০০ টাকা, আর বাইরের তৈরি কম্বলের দাম ২৫০-৪০০ টাকার মধ্যে। তবে ডবল শিটের কম্বলের দাম পড়বে প্রায় ৫০০ টাকা। ছাপা কম্বলের দাম কিছুটা বেশি পড়বে।
অন্যদিকে লেপের ক্ষেত্রে এতটা নির্ভর হওয়া উচিত হবে না। রেডিমেড লেপ কেনার চেয়ে একটু কষ্ট করে বানিয়ে নেওয়াটাই ভালো। কেননা রেডিমেড লেপের মান ও স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই নিজের পছন্দ আর চাহিদামতো কাপড়, তুলা দিয়ে লেপ বানানোই যুক্তিসংগত। এ ক্ষেত্রে আপনার একটু সচেতনতাই যথেষ্ট। যদি লেপ বানাতে চান, তবে প্রথমেই ঠিক করুন কোন মাপের লেপ বানাবেন। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গল লেপের মাপ হলো দৈর্ঘ্যে তিন হাত প্রস্থে পাঁচ হাত; সেমি ডবল লেপ সাড়ে তিন হাত বাই পাঁচ হাত, আর ডবল লেপ চার হাত বাই পাঁচ হাত। এরপর নির্বাচন করুন তুলা। ভালো মানের প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম পড়বে ১৮০-২০০ টাকা, এস তুলা ১২০ টাকা কেজি এবং থ্রেড তুলার দাম পড়বে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। ডবল আকারের লেপ বানাতে ভালোমানের তুলা লাগে সাড়ে তিন কেজি আর তুলোর মান একটু কম হলে দরকার হবে সাড়ে চার কেজি। অন্যদিকে সিঙ্গেল লেপ তৈরি করতে ভালো মানের তুলা আড়াই কেজি আর একটু কম মানের তুলা লাগবে সাড়ে তিন কেজি।
এবার কাপড় নির্বাচনের পালা। সাধারণত লেপ তৈরিতে লাল শালু কাপড়ই বেশি ব্যবহৃত হয়। ভালো মানের শালু কাপড়ের দাম পড়বে গজপ্রতি ৪৫ টাকা আর সাধারণ মানের শালু কাপড় ২৫ টাকা গজ। সিঙ্গেল লেপ বানাতে মজুরি পড়বে ১৪০-১৫০ টাকা আর ডাবল লেপে ১৬০-২০০ টাকা।
লেপ বানানোর জন্য যদি এত ঝুটঝামেলা আপনার কাছে সমস্যা মনে হয়, তবে আপনি রেডিমেড লেপই কিনতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মানের ব্যাপারে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। রেডিমেড সিঙ্গল লেপের দাম পড়বে প্রায় ৪৫০ টাকা, সেমি ডবল ৫৫০-৬০০ টাকা এবং ডাবল লেপের দাম ৭০০-৮০০ টাকার মধ্যে। সব তো হলো, এবার দরকার লেপের কাভারের। খাদি কাপড়ের তৈরি সিঙ্গল কাভারের দাম ২৭০ টাকা, সেমি ডাবল ৩২০ টাকা আর ডাবল সাইজ লেপের কাভারের ক্ষেত্রে পড়বে ৩৫০ টাকা। অন্যদিকে মার্কিন কাপড়ের সিঙ্গেল কাভার ২০০ টাকা, সেমি ডাবল ২৭০ টাকা এবং ডবল কাভারের দাম ৩০০ টাকা। লেপ-কম্বলের ব্যাপারে যত্নটাও একটা মুখ্য বিষয়। যত্নের ফলে লেপ-কম্বল ব্যবহার উপযোগী থাকবে বহুদিন। তাতে শীতের রাতগুলোতে ঘুমটাও ছেয়ে যাবে মায়াবী উষ্ণতায়, আপনাকে রাখবে আরামদায়ক এক স্বস্তিতে।
দীপঙ্কর দীপু
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৮
md sumon md sumon
কয় গজ কাপড় লাগবে সেই ধারনাই আপনার নাই তাই মনে করি তাই ধারনাটা লিখেন নাই ভাইযান।