ছেলেবেলায় বিক্রমপুরের আশপাশে, জয়দেবপুর ও গাজীপুরে খুব বেড়াতাম। আর বেড়াতাম বাড়ির কাছে ডেমরা-যাত্রাবাড়ীতে। সেখানে জলাশয় ছিল, ছিল বিল। সেসব জলাশয়-বিলে নৌকায় ঘুরতাম। এভাবেই প্রচুর কচুরিপানার দেখা মিলত। সঙ্গে বড়নখা। পার্থক্য বুঝতাম। তবু ভাবতাম, এর সবই কচুরিপানা। ডেমড়া-যাত্রাবাড়ী ভরাট হয়েছে। যাই না আর বিক্রমপুর। এখানে-সেখানে প্রচুর কচুরিপানা দেখি। তবে দেখা পাওয়া যায় না আর বড়নখার।
অনেক দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বাগানের গামলায় বড়নখার দেখা মিলল। এরপর একদিন ফ্যাশন হাউস ‘যাত্রা’র নিচতলায় দেখলাম ছোট্ট গামলায়। আর এখন দেখি বলধাবাগানে প্রতিদিন অর্কিড-ছায়াতরু ঘেঁষা শেষ মাথার চৌবাচ্চায়-অনেক!
বাংলা নাম বড়নখা। উদ্ভিদবিজ্ঞান বলে গসষসধভসড়মথ ভথঢ়য়থয়থ জাতি চসষয়পনপড়মথধপথপ । মূলত বড়নখা ও কচুরিপানা একই গোত্রের। তবে পাতার পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। কচুরিপানার পাতা গোল, আর বড়নখার পাতা লম্বা ও বর্শার ফলার মতো কাঁটা। বড়নখা দেখতে ছোট বলেই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে এর পরিচয় ছোট পানা হিসেবে। ফুল সারা বছরই ফোটে। তবে গ্রী্ন-বর্ষায় একটু বেশি। গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত বড়নখা এখন ঝিল-বিল-পুকুর-ডোবা ছেড়ে বাড়ির আঙিনায় ছোট চৌবাচ্চা বা গামলায় আশ্রয় পেয়েছে।
ফারুক আহমেদ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৮
Leave a Reply