যাঁরা ২৮তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে প্রাথমিক বাছাই (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষা। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ইতিমধ্যে প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে এবং পরীক্ষার প্রবেশপত্রও পৌঁছে গেছে পরীক্ষার্থীদের কাছে। হাতে মাত্র কয়েকটি দিন সময় আছে। আগামী ২৮ নভেম্বর ২৮তম বিসিএসের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার দিন ঠিক করেছে পিএসসি।
কেমন হচ্ছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থীদের অনেকেই। প্রস্তুতির জন্য খুব একটা সময়ও নেই, এখন সময় শুধু নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার। তবে ভালো প্রস্তুতি সত্ত্বেও কৌশল, বুদ্ধিমত্তা ও সময়ের সদ্ব্যবহারের অভাবে প্রাথমিক পর্ব থেকেই ছিটকে পড়েন অনেকেই। এতে উত্তীর্ণ হলেই কেবল পরবর্তী ধাপ লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। তাই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের প্রথম শ্রেণীর চাকরি ও সম্মানের অধিকারী হওয়ার স্বপ্ন থাকলে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তুমুল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কোনো বিকল্প নেই।
জেনে নিন পরীক্ষা পদ্ধতি
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীকে একটি ছাপানো প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দেওয়া হবে একটি বিশেষ উত্তরপত্র ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) ফরম। এ ফরমেই আপনাকে উত্তর করতে হবে। পিএসসির সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড· মোহাম্মদ মোহাব্বত খান জানান, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরের মধ্যে। প্রশ্নগুলো হয়ে থাকে এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন) ধরনের। প্রশ্নও থাকে ১০০টি। প্রশ্নপত্রে প্রতিটি প্রশ্নের নিচে সাধারণত চারটি করে বিকল্প উত্তর থাকে। তার মধ্যে যে উত্তরটি সঠিক বলে মনে হয়, সেটি শনাক্ত করে ওএমআর ফরমে পেনসিল দিয়ে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। যেমন কোনো প্রশ্নের উত্তর দ্বিতীয়টি সঠিক বলে মনে হলে উত্তরপত্রের নির্ধারিত দ্বিতীয় ঘরের বৃত্ত ভরাট করতে হবে। পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর দেওয়া হবে। তবে এবারই প্রথম প্রশ্নের ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য আধা (০·৫০) নম্বর করে কাটার নিয়ম করা হয়েছে। আর এ পরীক্ষা দিতে হবে এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে।
প্রশ্ন করা হবে যেসব বিষয়ে
বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বিসিএস প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষায় সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি প্রভৃতি বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হবে। সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি-এই দুটি অংশ থেকেই প্রশ্ন থাকবে। প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষায় এসব বিষয়ের ওপর মোট ১০০টি প্রশ্ন থাকবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে সাহিত্য ও ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন করা হলেও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে সাম্প্রতিক অনেক বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাই এ ক্ষেত্রে সব সময় হালানাগাদ তথ্য জানা থাকতে হবে। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি বিষয়ে প্রতিবছরই প্রায় একই ধরনের প্রশ্ন থাকে। শেষ সময়ে এ বিষয়গুলো একটু ভালোভাবে ঝালিয়ে নিতে হবে।
শেষ সময়ের প্রস্তুতি
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই কয়েক দিন আগের পড়া বিষয়গুলোতে বারবার চোখ রাখতে হবে এবং যেসব বিষয়ে বিগত বছরগুলোতে বেশি বেশি প্রশ্ন এসেছে, সেসব বিষয় গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে। এমনটাই মনে করেন অভিজ্ঞজনেরা।২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলা বিষয়ে ভাষা, সাহিত্য ও ব্যাকরণ-এই তিন অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন দেখলেই বোঝা যাবে, এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এসব বিষয় গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। ইংরেজির ক্ষেত্রেও দেখতে হবে, কী কী বিষয়ের ওপর প্রশ্ন থাকে। যেসব বিষয়ের ওপর প্রশ্ন আসে, সেসব বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে, পুরো ব্যাকরণ পড়তে হবে না। সাধারণ জ্ঞান অংশে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে অনেক প্রশ্ন থাকে, তাই দৈনিক পত্রিকা পড়তে হবে ও খবর শুনতে হবে। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান বই ঝালিয়ে নিতে হবে। মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি অংশে ভালো করতে চাইলে শেষ সময়ে বেশি বেশি চর্চা করতে হবে, যাতে প্রশ্ন দেখে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই উত্তর বের করে ফেলতে পারেন।
উত্তর করার সময় সতর্কতা
প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষার উত্তরপত্র হিসেবে দেওয়া ওএমআর ফরমটি একটি যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। সঠিক উত্তর ও প্রয়োজনীয় তথ্যের ঘর ভরাট করা ছাড়া উত্তরপত্রে কোনো রকম দাগ বা ফরমটির কোনো রকম বিকৃতি সেটিকে মূল্যায়নের অযোগ্য করে তুলবে। নিজের স্বার্থেই উত্তরপত্র ফরমটি যত্নসহকারে ব্যবহার করতে হবে। এটাকে কোনো অবস্থাতেই ভাঁজ করা যাবে না, মোচড়ানো যাবে না, কোনা ভাঙা যাবে না এবং ছেঁড়া বা অন্য কোনোভাবে বিকৃতি করা যাবে না। ফরমটি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এতে কোনো রকম ঘষা-মোছার চিহ্ন রাখা বা পেনসিলের দাগ লেপটানো যাবে না। এ কারণে অত্যন্ত নরম উন্নত মানের ও পরিষ্কার রাবার ব্যবহার করা দরকার। মনে রাখতে হবে, পরীক্ষার হলে কারও জন্য কোনো অবস্থাতেই একাধিক উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে না।
বৃত্তাকার ঘর ভরাট করবেন যেভাবে
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ওএমআর ফরমে বৃত্ত ভরাট করার জন্য টু-বি বা এমন নরম গ্রেডের পেনসিল ব্যবহার করতে হবে। এইচ-বি, এইচ, টু-এইচ-এ ধরনের শক্ত গ্রেডের পেনসিল ব্যবহার করবেন না। বল পয়েন্ট বা কোনো ধরনের কলম ব্যবহার করা যাবে না। কোনো বৃত্ত ভরাট করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন বৃত্তটির অভ্যন্তরে সম্পূর্ণ অংশটি ঘন কালো হয়ে ভরাট হয়। বৃত্তের ভেতরের পেনসিলের দাগ অন্তত এতটুকু গাঢ় হতে হবে, যাতে সেখানকার ছাপা লেখাটি একেবারেই পড়া না যায়। এ সময় বৃত্তের বাইরে যেন দাগ না পড়ে এ বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। আর এ জন্য উন্নত মানের পেনসিল ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষার হলে সাবধানতার জন্য একাধিক পেনসিল সঙ্গে রাখতে হবে। একটি পেনসিল শার্পনারও সঙ্গে রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে বৃত্ত ভরাটের পর তা মুছতেই হয়, তবে খুব নরম ও উন্নত মানের ইরেজার দিয়ে যত্নের সঙ্গে মোছার কাজ করতে হবে, যেন মোছার পর আগের কোনো চিহ্ন না থাকে। এ সময় সতর্ক থাকতে হবে, যেন ফরমের কাগজ ছিঁড়ে না যায় বা ছিদ্র হয়ে না যায়।
প্রশ্নপত্র দেওয়ার আগে ও পরে
পরীক্ষা শুরুর অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে নিজ আসনে বসতে হবে। প্রশ্নপত্র দেওয়ার কয়েক মিনিট আগেই উত্তরপত্র ফরম দেওয়া হবে। ফরমের নির্ধারিত স্থানে নাম ও জেলা লিখতে হবে ও নির্ধারিত স্থানে দস্তখত করতে হবে। এ সময় ফরমে নিবন্ধন নম্বর এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য পূরণ করে দিতে হবে। এসব কাজ পরীক্ষা শুরুর আগেই অর্থাৎ প্রশ্নপত্র দেওয়ার আগেই শেষ করতে হবে, যাতে পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ সময় নষ্ট না হয়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নের সেট নম্বর উত্তরপত্রের যথাস্থানে লিখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বৃত্তটি যথাযথভাবে ভরাট করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না। দেরি করে এলে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ের বাকি সময়টুকুই পরীক্ষা দেওয়া যাবে। তবে আধ ঘণ্টার বেশি বিলম্ব করে এলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।
বুঝে-শুনে নির্ধারিত সময়েই
বৃত্ত ভরাট করার আগে পুরো প্রশ্নটি ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। দেখা গেল কোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে সবই। আপনি প্রথম উত্তরটি পড়েই সঠিক মনে করে বৃত্ত ভরাট করে ফেললেন। এতে কিন্তু আপনার অজান্তেই ভুল হয়ে গেল। মাথায় রাখতে হবে সময়ের বিষয়টিও। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কিন্তু আপনাকে সব প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। অনেকেই একটি বিষয়ে অনেক সময় নিয়ে ফেলে। ফলে অন্য বিষয়ে তেমন একটা ভাবার সময় না পেয়ে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুল উত্তর করে বসে। বিশেষ করে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের ক্ষেত্রে এমনটি বেশি হয়। অঙ্ক বারবার চর্চা করলে ও ইংরেজি বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি থাকলে বেশি সময় লাগার কথা নয়। যেসব বিষয় থেকে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন করা হয়, সেগুলো মোটামুটি মুখস্থ থাকলে ভালো হয়। বাংলা সাহিত্যও মনে রাখার কিছু বিষয় আছে। এ ছাড়া ব্যাকরণ অংশ ভালোভাবে বুঝতে হবে। কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই প্রতিটি বিষয়ের জন্য সময় বরাদ্দ করে নিলে ভালো হয়।
কৌশলই এগিয়ে রাখবে আপনাকে
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে আপনাকে কৌশলী হতে হবে-বললেন ড· মোহাম্মদ মোহাব্বত খান । অনেক সময় মনে হতে পারে একটি প্রশ্নের দুটি সঠিক উত্তর রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনেক দিন থেকে যে উত্তরটি জেনে এসেছেন বা যেটি বেশি শুনেছেন, সেটির ঘর ভরাট করতে হবে। প্রথমবার যে উত্তরটি সঠিক বলে মনে হয়, সেটি উত্তর করলে সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, গবেষণা তাই বলে। কোনো প্রশ্নের উত্তর হুবুহু জানা থাকলে সময় নষ্ট না করে বৃত্ত ভরাট করে ফেলুন। কিছু প্রশ্ন ভেবে উত্তর করতে হয়, তাই সময় বেশি লাগে। তাই সহজ প্রশ্নগুলোর বেলায় সেই সময়টি আপনাকেই বাঁচাতে হবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর মনে না এলে এ ক্ষেত্রেও সময় নষ্ট না করে পরবর্তী প্রশ্নে চলে যেতে হবে। আর একটি বিষয়, কোনো প্রশ্নের দুটি ভুল উত্তর শনাক্ত করতে পারলেও সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, ভুল উত্তরের জন্য আধা নম্বর কাটা হবে। তাই বেশি অনুমাননির্ভর না হয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে উত্তর করাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
বিসিএস পরীক্ষার নম্বর বণ্টন
প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষা *
বাংলা ২০ নম্বর
ইংরেজি ২০ নম্বর
মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি ১০ নম্বর
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০ নম্বর
সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ বিষয়াবলি) ২০ নম্বর
সাধারণ জ্ঞান (আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ২০ নম্বর
সর্বমোট ১০০ নম্বর
(* প্রিলিমিনারি অবজেকটিভ পরীক্ষায় কোন কোন বিষয় থেকে প্রশ্ন কমবেশিও হতে পারে)
লিখিত পরীক্ষার মানবণ্টন
সাধারণ ক্যাডার
ক· বাংলা ২০০ নম্বর
খ· ইংরেজি ২০০ নম্বর
গ· বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০ নম্বর
ঘ· আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১০০ নম্বর
ঙ· গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ১০০ নম্বর
চ· সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০০ নম্বর
মোট ৯০০ নম্বর
প্রফেশনাল বা টেকনিক্যাল ক্যাডার
ক· বাংলা ১০০ নম্বর
খ· ইংরেজি ২০০ নম্বর
গ· বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০ নম্বর
ঘ· আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১০০ নম্বর
ঙ· গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ১০০ নম্বর
চ· সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয় ২০০ নম্বর
মোট ৯০০ নম্বর
মৌখিক (উভয় ক্যাডারের জন্য) ১০০ নম্বর
বাছাই পরীক্ষার সময়টাতে
২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের ২৮তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ২৮তম বিসিএস পরীক্ষার বাছাইপর্বে যাঁরা অংশ নিচ্ছেন তাঁদের বেশ কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। কেননা, শুধু বাছাইপর্বে উত্তীর্ণরা পরবর্তীকালে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ পান। বিসিএসের জন্য বাছাই পরীক্ষা দেওয়ার আগের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনে নিন এবার-
–পরীক্ষার বিস্তারিত নিয়মকানুন ও সময়সূচি জেনে নিন।
–গুরুত্বসহকারে পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রের সাধারণ নির্দেশাবলি পড়ুন। করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো মেনে চলুন।
–পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে প্রবেশপত্রটি অবশ্যই সঙ্গে নিন।
–বাছাইপর্বের পরীক্ষা হয় নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতিতে। এ জন্য আলাদা উত্তরপত্র দেওয়া হয়। উত্তরপত্রে সঠিক উত্তরের জন্য বৃত্ত ভরাট করতে হয়। এ জন্য অবশ্যই কালো কালির বল পয়েন্ট কলম সঙ্গে নিন।
–গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য ক্যালকুলেটর সঙ্গে নিতে পারেন। এ বিষয়ে কর্মকমিশনের দেওয়া প্রবেশপত্রের পেছনে লেখা পরীক্ষার্থীর প্রতি সাধারণ নির্দেশাবলিতে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে, সেটি পড়ুন।
–পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার জন্য সাধারণ পোশাক পরুন।নিজেকে ফিটফাট রাখুন। এমন কোনো পোশাক পরবেন না, যা আপনার চেহারাকে বদলে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রবেশপত্রে আপনার যে ছবিটি লাগানো আছে সে রকম সাজ-পোশাক হওয়াই বাঞ্ছনীয়, যাতে পরীক্ষা হলে পরিদর্শক সহজেই আপনাকে চিহ্নিত করতে পারেন।
–পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা কোনো প্রকার যোগাযোগ যন্ত্র, বই-খাতা, ব্যাগ সঙ্গে নেওয়া যাবে না।
–নির্দেশাবলিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩০ মিনিট আগে হাজির হওয়ার জন্য বলা আছে। নির্দেশনাটি মেনে পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হোন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণের পর কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
–পরীক্ষাকক্ষে হাজিরার সঠিক সময় মেনে চলুন।
–আবেদনপত্র, হাজিরা তালিকা, উত্তরপত্র প্রভৃতিতে একই ধরনের স্বাক্ষর দিন। এ ক্ষেত্রে নিজের পূর্ণ নাম স্বাক্ষর করাই উত্তম।
–পরীক্ষার সব নিয়মকানুন মেনে চলুন। কোনো অনিয়ম বা অশোভন বা আপত্তিজনক আচরণ করবেন না। এ ধরনের যেকোনো আপত্তিকর আচরণ সরকারি চাকরিতে আবেদনের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তা ছাড়া ক্ষেত্রবিশেষে মামলা দায়েরপূর্বক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতেও পরীক্ষার্থীকে সোপর্দ করা হতে পারে।
চলতি বছর থেকে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য আপনার প্রাপ্ত নম্বর থেকে ০·৫ বা দুটি ভুল উত্তরের জন্য ১ নম্বর কাটা হবে। না জেনে বা নিশ্চিত না হয়ে কোনো উত্তর না দেওয়াই ভালো। অনুমানের ভিত্তিতে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেবেন না।
–নির্বাচনী পরীক্ষা শেষে প্রবেশপত্রটি সংরক্ষণ করুন। কেননা, আপনি বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লিখিত ও মৌখিকার জন্যও এই প্রবেশপত্রটি প্রযোজ্য।
আরাফাত শাহরিয়ার
গ্রন্থনাঃ রাশেদ শাওন
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২২, ২০০৮
Leave a Reply