হেপাটাইটিস-বি এক ধরনের ভাইরাস যা মুলত লিভারকে আক্রমণ করে। এর সংক্রমণের ফলে পৃথিবীর অন্যতম ঘাতক ব্যাধি লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হার মতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি বাহক এবং এদের ২০ শতাংশ লিভার ক্যান্সার ও সিরোসিসের কারণে মারা যেতে পারে। বাস্তবে হেপাটাইটিস-বি এইডসের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি সংক্রামক এবং প্রতিবছর এইডসের কারণে পৃথিবীতে যত লোক মৃত্যুবরণ করে তার চেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করে হেপাটাইটিস-বি’র কারণে।
সংক্রমণ
উপসর্গ
(১) এক-তৃতীয়াংশ লোক কিছুই বুঝতে পারেন না। (২) এক-তৃতীয়াংশ লোকের ফ্লুর মতো মাথাব্যথা, গা শিরশির এবং জ্বর হয়। (৩) এক-তৃতীয়াংশ লোকের হতে পারে জন্ডিস, ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া, বমি ও জ্বর।
হেপাটাইটিস-বি আক্রান্তদের করণীয়
(১) চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বিশ্রাম নেবেন। (২) পরিবারের অন্যদের খুব নিকট সাহচর্য এড়িয়ে চলবেন যেমন-টয়লেট, গ্লাস, থালা, কাপ ইত্যাদি পৃথকভাবে ব্যবহার করবেন। (৩) হাতুড়ে ডাক্তার কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করাবেন না। (৪) চিকিৎসকের পরামর্শমত চিকিৎসা নেবেন।
এ রোগ আছে কি-না বোঝার উপায়
(১) রক্ত পরীক্ষার (টেষ্ট) মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আছে কি-না? (২) রক্ত পরীক্ষায় নেগেটিভ অর্থাৎ ভাইরাস না থাকলে আপনি এর টিকা নিতে পারবেন ও রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে পারবেন। (৩) রক্ত পজিটিভ হলে আপনার চিকিৎসা করাতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
(১) ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা। (২) ইনজেকশন ব্যবহারের সময় ডিসপোসিবল সিরিজ ব্যবহার করা। (৩) দাঁতের চিকিৎসার সময় জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ব্যাপারে নিশ্চিত হবেন। (৪) রোগের বিরুদ্ধে নিজের শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্হা গড়ে তোলা অর্থাৎ টিকা নেয়া। (৫) হেপাটাইটিস বি-র টিকা ৪টি ডোজ নিতে হয়। প্রথম তিনটি ১ মাস পর পর এবং চতুর্থ ডোজটি প্রথম ডোজের ১ বছর পর নিতে হয়।
শিশুদের জন্য টিকা
বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা সব নবজাতককে হেপাটাইটিস বি’র টিকা নেয়া অত্যন্ত জরুরি বলে ঘোষণা করেছে এবং ইতোমধ্যে ৮০টির বেশি দেশ এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে টিকা দেয়ার সম্প্রসারিত কর্মসুচি গ্রহণ করেছে। এ টিকা যে কোনো বয়সে যে কোনো দিন নেয়া যায়।
——————
দৈনিক আমার দেশ, ১৩ মে ২০০৮
Leave a Reply