সিস্ট হলো ছোট পানি ভরা থলি, আর একাধিক সিস্টকে একসঙ্গে বলা হয় পলিসিস্ট। আর ওভারি যে ফিমেল রিপ্রোডাক্টিভ অরগ্যানগুলোর মধ্যে অন্যতম তা নিশ্চয়ই সবার জানা। ছোট ছোট সিস্ট (১০-১২টি) পুঁতির মালার মতো দেখতে ওভারি বা ডিম্বাশয়কে ঘিরে থাকে। এই সিস্টের জন্য ওভারির স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়।
পলিসিস্টিক ওভারিতে কী সমস্যা হয়?
পলিসিস্টিক-এর অন্যতম সমস্যা হলো-
১. শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমা।
২. ঠোঁটের নিচে, গালে বা চিবুকে কখনোবা বুকে, পেটে, পিঠেও পুরুষালি লোম গজায় (যা ওভারি থেকে মাত্রাতিরিক্ত পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেন বেড়ে যায় বলে এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়)।
৩.পিরিয়ডের গোলমালের সুত্রপাত হয়, শুরুতে দুই-তিন মাস পরপর পিরিয়ড হয়। কখনোবা হরমোনের তারতম্য বেশি হলে বছরে দুই-তিনবার বা তারও কম পিরিয়ড হয়। কারো আবার অতিরিক্ত ব্লিডিং হয়। বিবাহিতাদের সন্তান ধারণে সমস্যা হয় অনিয়মিত পিরিয়ডের জন্য।
অনেক ক্ষেত্রেই ইনফার্টিলিটির এক অন্যতম কারণ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম।
অনেক মেয়ের চঈঙঝ জনিত কারণে ৎবপঁৎৎবহঃ মিসক্যারেজ হয়। চঈঙঝ উপসর্গগুলো অনেক সময়ই সাইক্লিক অর্ডারে চলে অর্থাৎ চঈঙঝ প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে ওজন বাড়ে। শরীরের এই বাড়তি ওজন হরমোনের যথাযথ নিঃসরণে বাধা সৃষ্টি করে বলে আরো সিস্ট তৈরি হয়, ঙাঁষধঃরড়হ বাধাগ্রস্ত হয়।
কাদের হয়
যে কোনো বয়সের মহিলারই মেনার্কি থেকে মেনোপজ পর্যন্ত চঈঙঝ হতে পারে। তবে একই পরিবারের মেয়েদের মধ্যে অনেকের হয় বলে জেনেটিক ফ্যাক্টরকে দায়ী করা হয়। চঈঙঝ রোগটি মেয়েদের মধ্যে বেশি হচ্ছে এটা বলা যাচ্ছে না, কারণ আজকের মেয়েরা অনেক স্বাস্হ্য সচেতন। নিজেদের নিয়ে ভাবে শারীরিক ওজনের ব্যাপারে। বেশিরভাগ মেয়েই আগের মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন। রোগের প্রাথমিক অবস্হাতেই মেয়েরা ডাক্তারের কাছে আসছেন এবং ইদানীং রোগ নির্ণয়ের অনেক অত্যাধুনিক ব্যবস্হার কারণে রোগ নির্ণয় হচ্ছে বেশি। আগেকার দিনে এ ধরনের মেয়েলি সমস্যাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো না। তবে বিবাহিত মেয়েদের সন্তান না হওয়ার কারণে নানা বিরূপ পরিবেশ ও পরিস্হিতির শিকার হতে হয়েছে।
চিকিৎসা
* এ সমস্যার সর্বপ্রথম চিকিৎসা মেদ কমানো। * একইসঙ্গে লো ডোজের ওরাল ঈধহংধপবঢ়ঃরাব পিলস দেয়া হয়। এই পিলস এন্ড্রোজেনের মাত্রা কমায় ও বংঃৎড়মবহ এবং ঢ়ৎড়মবংঃবৎড়হ মাত্রাকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
* যাদের সন্তান ধারণে অসুবিধা হচ্ছে তাদের মেটফরমিন নামে এক ধরনের ওষুধ দেয়া হয়, যা ঙাঁষড়ঃরড়হ-এ সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিসের ওষুধ হওয়া সত্ত্বেও ডিম্বাণু নিঃসরণে সাহায্য করে। এ ধরনের ওষুধ ধৈর্যের সঙ্গে তিন থেকে ছয় মাস খেয়ে যেতে হয়।
* অবাঞ্ছিত লোমের জন্য ইনেকট্রোলিসিসের সাহায্য নিতে হতে পারে।
* অনেক সময় মেয়েরা সাইকোলজিক্যালি এত ডিপ্রেশনে ভোগে, যা সাইকোলজিক্যাল কাউসেলিং এবং প্রয়োজনে ট্রিটমেন্ট নিতে হতে পারে।
———————
ডা. কানিজ ফাতেমা ডোনা
দৈনিক আমার দেশ, ১৩ মে ২০০৮
Leave a Reply