বিশ্বব্যাপী অন্ধত্বের প্রধান কারণ চোখে ছানি পড়া। সাধারণ মানুষ ছানিকে চোখে পর্দা পড়া বলে জানে। এটি বয়স বাড়ার সঙ্গে শরীরের একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। যেমন করে বয়সের সঙ্গে চুল পাকে, ত্বক কুঁচকাতে থাকে, ঠিক তেমনি চোখের ভেতরে অবস্থিত স্বচ্ছ প্রাকৃতিক লেন্সটি দিনে দিনে ঘোলা হতে থাকে। একেই বলা হয় ছানি পড়া বা ক্যাটারেক্ট। ছানি পড়ার কারণে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যায়।
ছানি কি কেবল বৃদ্ধদের সমস্যা?
না, ছানি যেকোনো বয়সেই হতে পারে। ছানি মূলত দুই ধরনের:
ক) জন্মগত ও
খ) অর্জিত
ক) জন্ম থেকেই শিশুদের চোখে দেখা যায়। সাধারণত গর্ভকালে মায়ের হাম বা জার্মান মিজলস সংক্রমণ হলে বা মায়ের অপুষ্টি ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে শিশু জন্মগত ছানি নিয়ে জন্মাতে পারে।
খ) অর্জিত ছানি হলো, যা পরবর্তী সময়ে নানা কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন-
বয়োবৃদ্ধি—প্রায় ৮০ ভাগ ছানিই বয়সজনিত
চোখে আঘাত, প্রদাহ
দীর্ঘদিন স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ ব্যবহার
ডায়াবেটিসের রোগীদের ছানি অপেক্ষাকৃত কম বয়সে পড়ে এবং হারও বেশি
কীভাবে বুঝবেন ছানি পড়ছে?
চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসবে
কোনো কিছু চোখে আবছা বা ঝাপসা দেখা যাবে
ছানি পক্ব হলে এমনকি কিছু দেখাও যাবে না এবং একা একা চলতে অসুবিধে হবে
চোখের কালো মণি বাইরে থেকে ধূসর বা সাদা দেখা যাবে
চিকিৎসা কী?
ছানির একমাত্র চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচার। সময়মতো অস্ত্রোপচার না করা হলে চোখ এমনকি অন্ধও হয়ে যেতে পারে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখের অস্বচ্ছ লেন্স ফেলে দিয়ে তার বদলে অন্য একটি কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়।
ডা. হারুন-উর-রশীদ
চক্ষু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩
Leave a Reply