শীতকালটা বাত-ব্যথার রোগীদের জন্য খুবই খারাপ সময়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই ব্যথা-বেদনা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন। কিন্তু শীতের সঙ্গে এই ব্যথা-বেদনার কী সম্পর্ক? আর কীভাবেই বা এই সময়ে খানিকটা উপশম পাওয়া যাবে?
—শীতকালে হাত ও পায়ের দিকে রক্তসঞ্চালন কমে যায়। এ কারণে সন্ধিগুলোর প্রদাহ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যথা, শক্ত বা স্টিফ হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
—সন্ধির চারপাশের ত্বক খুব বেশি ঠান্ডা হয়ে গেলে এতে অবস্থিত স্নায়ুপ্রান্তগুলোর সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। এ কারণে ব্যথার অনুভূতি বেশি তীব্র হয়।
—শীতকালে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। এ কারণে আমরা নিঃশ্বাসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ অক্সিজেন পাই। এই সমস্যা সহজেই ক্লান্তি বা অবসাদ এনে দেয় এবং যেকোনো কাজে অলস বোধ হয়।
—শীতকালে শরীরে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণও হ্রাস পায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড় ও সন্ধির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
—বংশগতভাবে শীতকালে অনেকের বিভিন্ন সন্ধির ব্যথা বা ফোলা দেখা দিতে পারে।
শীতের প্রস্তুতি: যারা বাত বা ব্যথার রোগী, তাদের এই শীতে প্রায়ই সন্ধিতে যন্ত্রণা ও ব্যথা বেড়ে যায়, কখনো সন্ধি ফুলে যায়, শক্ত বা অনড় হয়ে যায়। আবার লাল হয়ে গরমও হতে পারে। ঘাড় ও কোমরের ব্যথা বাড়তে বাড়তে হাত বা পায়ে আসতে পারে এবং অবশ লাগতে পারে। অনেকক্ষণ বিশ্রামের পর বা ঘুম থেকে ওঠার পর পেশির স্টিফনেসের সমস্যা দেখা যায়। কাজকর্ম শুরু হলে আস্তে আস্তে সচল হয়। এই আবহাওয়ায় এসব বিষয়ে আগেই সতর্ক হোন।
কেউ আগে থেকে বাত বা আথ্রাইটিসের ওষুধ সেবন করে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে মাত্রা (ডোজ) ঠিক করে নিন।
ব্যথার স্থানে দিনে দুবার করে গরম সেঁক দিলে কিছুটা উপশম পাওয়া যাবে।
ফিজিওথেরাপি বা ব্যায়াম করলে জড়তা কাটবে।
খুব ব্যথা বাড়লে ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন। তবে ব্যথানাশক ওষুধ বেশি দিন সেবন না করাই ভালো।
প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করুন।
ডা. মো. শরীফ হোসেন
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসনকেন্দ্র।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২২, ২০১৩
Leave a Reply