এক ডিগ্রি বার্ন:
ত্বকের উপরিভাগের একটি স্তর (এপিডার্মিস) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চামড়া লাল হয়ে যায়, সামান্য ফোলে এবং জ্বালা করে। প্রচণ্ড রোদে, আগুনের আঁচে, রান্নার সময় এ ধরনের হালকা বার্ন হয়ে থাকে। এমন পোড়ার ক্ষেত্রে শুধু পানি ঢাললেই হবে (১৫ থেকে ২০ মিনিট)।
দুই ডিগ্রি বার্ন: ত্বকের উপরিভাগের প্রথম স্তর (এপিডার্মিস) সম্পূর্ণভাবে এবং পরবর্তী স্তর (ডার্মিস) আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুড়ে যাওয়া স্থান লাল হয়ে যায়, ফুলে যায়, ফোসকা পড়ে এবং প্রচণ্ড ব্যথা হয়। সাধারণত গরম পানি বা গরম তরল কিছু পড়লে, কাপড়ে আগুন লেগে গেলে, মোমের গরম তরল অংশ সরাসরি চামড়ায় লাগলে, আগুনে উত্তপ্ত কড়াই-জাতীয় কিছুর স্পর্শে এ ধরনের বার্ন হয়। এক্ষেত্রে অনেকক্ষণ ধরে পানি ঢালতে হবে—এক-দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। ফোসকা গলানোর চেষ্টা করবেন না। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তিন ডিগ্রি বার্ন: ত্বকের উপরিভাগের দুটি স্তরই (এপিডার্মিস ও ডার্মিস) সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চামড়ার নিচে থাকা মাংসপেশি, রক্তনালি, স্নায়ু ইত্যাদিও আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত স্থান কালো হয়ে যায়, চামড়া পুড়ে শক্ত হয়ে যায়, স্পর্শ করলেও ব্যথা অনুভূত হয় না। সরাসরি আগুনে পুড়লে, বিদ্যুতায়িত হলে, ফুটন্ত পানি বা তরল সরাসরি শরীরে পড়লে বা বিস্ফোরণে এ ধরনের বার্ন হয়।
এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব আগুন বা গরম জায়গা থেকে সরিয়ে নিন। পুড়ে যাওয়া কাপড় খুলে দিতে হবে। অযথা ডিম, টুথপেস্ট ইত্যাদি লাগাবেন না। এতে কোনো উপকার নেই। দ্রুত ঠান্ডা বা সাধারণ তাপমাত্রার পানি ঢালুন। সম্ভব হলে ট্যাপের পানির নিচে বসিয়ে দিন। আক্রান্ত অংশ পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে একটু উঁচু করে ধরে রাখুন। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান থাকলে পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে স্যালাইন বা শরবত করে খেতে দিন অথবা ডাবের পানি বা খাওয়ার পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে দিন। প্রাথমিক চিকিৎসা চালানো অবস্থায় যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০১, ২০১৩
Leave a Reply