পুরুষের স্বাস্থ্য সমস্যা
যদি আপনার মূত্রনালী পথে রস নিঃসরণ হয়, তাহলে সম্ভবত আপনার যৌনবাহিত সংক্রমণ রয়েছে যা আপনি অন্যের মধ্যে ছড়াতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি ডাক্তার দেখাবেন, এমনকি আপনার উপসর্গ চলে গেলেও।
মূত্রনালীর প্রদাহ কী এবং এর কারণ কী?
মূত্রনালীর প্রদাহকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ইউরেথ্রাইটিস। মূত্রনালী হচ্ছে একটি নল যা মূত্রথলি থেকে লিঙ্গের মাথা পর্যন্ত বিস্তৃত। মূত্রনালীর প্রদাহ সাধারণত যৌনবাহিত সংক্রমণ দ্বারা ঘটে। তবে সব সময় নয়। এটা সীমাবদ্ধ যৌন সম্পর্কের মধ্যেও ঘটতে পারে।
গনোরিয়া
এটা এক ধরনের যৌনবাহিত সংক্রমণ যা মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটাতে পারে।
নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস
গনোরিয়া ছাড়া অন্য যেকোনো কারণে মূত্রনালীর প্রদাহ হলে তাকে নন-গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস বলে। এটার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ক্লামাইডিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া। এটা এক ধরনের যৌনবাহিত সংক্রমণ। এ ধরনের মূত্রনালীর প্রদাহ অন্য ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারাও ঘটতে পারে। কখনো কখনো কোনো সংক্রমণ ছাড়াও ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ মূত্রনালীতে আঘাত পেলে বা কোনো অপারেশন হলে প্রদাহ হতে পারে। কোনো কোনো পুরুষের একই সময়ে গনোরিয়ার জীবাণু এবং অন্য জীবাণু দ্বারা মূত্রনালীর প্রদাহ হতে পারে।
মূত্রনালীর প্রদাহের উপসর্গগুলো কী?
সাধারণত লিঙ্গের মুখ দিয়ে নিঃসরণ বা তরল পদার্থ বের হয়, তবে সব সময় নয়।
প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করে। এটা অনেকে প্রস্রাবে ইনফেকশন বলে ভুল করতে পারেন।
লিঙ্গের মধ্যে জ্বালাপোড়া করতে পারে অথবা ঘন ঘন প্রস্রাব করার ইচ্ছা জাগতে পারে।
মূত্রনালীর প্রদাহে কোনো কোনো পুরুষের কোনো উপসর্গ না-ও থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ক্লামাইডিয়া সংক্রমণের অর্ধেক সংখ্যক পুরুষের কোনো উপসর্গ থাকে না।
কিভাবে রোগের উন্নতি ঘটে?
উপসর্গগুলো অনেক সময় এমনিতেই চলে যায়। এ ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহ থেকে ছয় মাস লাগতে পারে। যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে, যেমন ক্লামাইডিয়ার কারণে মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটে তাই কিছু ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে থেকে যায়। তখন অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে উপসর্গ চলে গেলেও চিকিৎসা করাতে হবে। যে ব্যাকটেরিয়াটি (ক্লামাইডিয়া) সচরাচর পুরুষদের মূত্রনালীর প্রদাহ ঘটায় সেটি মহিলাদের মারাত্মক সমস্যা ঘটাতে পারে।
মূত্রনালীর প্রদাহ হলে কী করা উচিত?
এটা কখনোই অবহেলা করবেন না। অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন, এমনকি আপনার উপসর্গ চলে গেলেও ডাক্তার দেখাবেন।
ডাক্তার আপনাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারেন। এসব পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে নিঃসরণ পরীক্ষা ও প্রস্রাব পরীক্ষা, যা আপনার সংক্রমণের কারণ নির্ণয়ে সাহায্য করবে।
এন্টিবায়োটিক সাধারণত সংক্রমণ দূর করবে। তবে এটি নির্ভর করে রোগের কারণের ওপর।
আপনার যৌন সঙ্গিনীকেও ডাক্তার দেখাতে হবে, এমনকি তার কোনো উপসর্গ না থাকলেও। যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত অনেক মহিলার কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না।
আপনার ও আপনার যৌন সঙ্গিনীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌনশারীরিক মিলন করবেন না।
—————–
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
চেম্বারঃ কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা (সোম, মঙ্গল ও বুধবার)।
যুবক মেডিক্যাল সার্ভিসেস, বাড়িঃ ১৬, রোডঃ ২৮ (পুরান), ১৫ (নতুন), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা (শনি, রবি ও বৃহস্পতিবার)।
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৭ এপ্রিল ২০০৮
Leave a Reply