কখনো কখনো ইনফেকশন বা প্রদাহ ছাড়া, কারো মধ্যকর্ণে পানি জমে যেতে পারে যাকে অটাইটিস মিডিয়া উইথ ইফিউশন বলা হয়।
কখন কখন মধ্যকর্ণে পানি জমেঃ
অডিটরি টিউব যা নাক ও গলার সাথে কানের সংযোগ স্থাপন করে, কোন কারণে এই টিউব বন্ধ হয়ে গেলে মধ্যকর্ণে পানি জমে যেতে পারে।
এভাবে পানি জমে যাওয়ার অন্যতম কারণ এডেনয়েড, যা কিনা এক ধরনের টনসিল নাকের পিছনে থাকে। এই এডেনয়েড ইনফেকশন বা প্রদাহজনিত কারণে বড় হয়ে গেলে, অডিটরি টিউব বন্ধ হয়ে যায় এবং মধ্যকর্ণে পানি জমে যায়।
যে সকল বাচ্চাদের নাক ডাকার অভ্যাস আছে, তাদের মধ্যকর্ণে পানি জমে যেতে পারে।
এলার্জিজনিত কারণে।
ভাইরাল ইনফেকশন।
নাক অথবা গলবিলের ওপরের অংশের টিউমারের জন্য যদি অডিটরি টিউব বন্ধ হয়ে যায় তাহলেও মধ্যকর্ণে পানি জমে।
উপসর্গসমূহঃ
এটি সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের মাঝে দেখা যায়।
কানে কম শোনা, সাধারণত, স্কুলগামী বাচ্চাদের মাঝে বেশি দেখা যায়। মা-বাবা তখনই লক্ষ্য করেন যখন তারা পড়ালেখায় অমনোযোগী হয় এবং কোন প্রশ্নের উত্তর করতে পারে না। বধিরতা সাধারণত দুই কানেই হয়। এই বধিরতা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং বড়দের ক্ষেত্রে তা ঠান্ডা লাগার পর হঠাৎ করে শুরু হয়।
মাঝে মাঝে কানে ব্যথা হতে পারে, বড়দের ক্ষেত্রে কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ হতে পারে।
কানের পর্দা পরীক্ষা করলে, কানের পর্দা দেখা যাবে স্বাভাবিক বা পর্দা ভেতরের দিকে যেতে পারে এবং মাঝে মাঝে এটি গোলাপী রংয়ের হয়ে যেতে পারে। কানের পানি বা বাতাসের বুদবুদ কানে দেখা যেতে পারে। কখনো কখনো পানি দিয়ে মধ্যকর্ণ পূর্ণ হতে পারে।
চিকিৎসাঃ প্রতিরোধঃ
সাইনুসাইটিস থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে।
নাকের পেছনের টনসিল যা কিনা এডেনয়েড তা বড় হলে অপারেশন করে ফেলে দিতে হবে।
রোগ প্রতিরোধজনিত কোন সমস্যা হলে তা ঠিক করতে হবে।
প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থাঃ
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে নাকের ড্রপ, এন্টিহিস্টামিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
এতেও ভাল না হলে, কানের একটা ছোট অপারেশন মাইরিংগোটমি’ এবং পর্দায় একটি টিউব (গ্রম্নমেট বা ভেন্টিলেশন টিউব) বসানো হয়, এতে করে কানে আর পানি জমা হতে পারে না। ইহা কানের একটি মাইক্রো সার্জারি যা আমাদের দেশে নিয়মিত করা হচ্ছে।
————————
অধ্যাপক ডাঃ এম আলমগীর চৌধুরী
নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি
মেডিক্যাল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা।
দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ মে ২০০৮
Leave a Reply