ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাস নেওয়া ও প্রশ্বাস ছাড়ার প্রক্রিয়াটি কখনো থেমে যাওয়ার কথা নয়। কেননা, আমাদের মস্তিষ্কের রেসপিরেটরি সেন্টার সদা জাগ্রত থাকে। কিন্তু কখনো কারও কারও ঘুমের ভেতর শ্বাসনালির পথটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মস্তিষ্কের নির্দেশে ঘন ঘন ও গাঢ় নিঃশ্বাস নিতে থাকে মানুষটি। ১০ সেকেন্ড বা এর বেশি সময় শ্বাস এভাবে বন্ধ থাকলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলে হাইপোক্সিয়া। মস্তিষ্ক তখন বাধ্য হয়ে রোগীকে জাগিয়ে তোলে। যাদের এই প্রবণতা আছে, তাদের সারা রাতে বারবার একই ঘটনা ঘটতে থাকে। কিন্তু সকালে হয়তো তাদের তা মনে থাকে না। এই রোগের নাম স্লিপ এপনিয়া।
কাদের, কেন?
এটি বড়দের রোগ। মধ্যবয়সী পুরুষেরা এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলকায় লোকেরা বেশি আক্রান্ত হন। জন্মগতভাবে চোয়ালের হাড়ে সমস্যা বা অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ঘুমের ওষুধ সেবনকারী ব্যক্তিদেরও বেশি হয়। স্থূলকায় ব্যক্তিদের গলার ভেতর অতিরিক্ত চর্বি জমে অনেক সময় শ্বাসনালিকে সরু করে দেয়। যে কারণেই হোক, স্লিপ এপনিয়ার রোগীরা দিনের বেলা অবসাদ ও ঘুম ঘুম ভাবে সারাক্ষণ আক্রান্ত থাকেন। তাঁদের রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার ঝুঁকি প্রায় তিন গুণ বেশি। মনোযোগের অভাব, খিটখিটে মেজাজ, কর্মক্ষেত্রে অসফলতা ও বিষন্নতার হারও তাঁদের বেশি। হূদেরাগের আশঙ্কাও বেশি অন্যদের চেয়ে।
আপনি কি আক্রান্ত?
সারা রাত ঘুমের পরও ঘুম না হওয়ার অনুভূতি এবং দিনের বেলা বারবার ঘুমে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকলে একটু সাবধান হোন। রাতে জোরে নাক ডাকা, হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া ও জোরে শ্বাস নেওয়ার মতো ঘটনা হয়তো আপনার শয্যাসঙ্গী লক্ষ করে থাকতে পারেন। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে রোগ ও রোগের তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়। যেমন:
শোয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন করুন। চিত হয়ে শুয়ে তাকলে স্লিপ এপনিয়া বাড়ে।
ওজন কমান। ১০ শতাংশ ওজন কমালে সমস্যা ২৫ শতাংশ কমে যায়।
সুষম খাবার খান।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
এর পরও সমস্যা থাকলে রাতের বেলা বিশেষ শ্বাসযন্ত্রের ব্যবহার বা অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হতে পারে।
ডা. মো. তৌছিফুর রহমান
মেডিসিন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
bidhan biswas
amar ai rog ta ache ami apnak dekhate chai.kivabe jogajog korbo