ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় শরীরের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে, ত্বকও এর ব্যতিক্রম নয়। ডায়াবেটিস থাকলে ত্বকের সুস্থতা রক্ষায় বাড়তি সতর্কতা দরকার।
ত্বকের সমস্যা
১. চোখের পাতার প্রদাহ-ফোড়া, দেহের যেকোনো জায়গায় ফোড়া-ফুসকুড়ি, ত্বক ও ত্বকের নিচে প্রদাহ, নখের গোড়ায় প্রদাহ—এসবই ডায়াবেটিসে বেশি আক্রমণ করে।
২. ছত্রাকের আক্রমণে ত্বকের ভাঁজে, যেমন স্তনের নিচে, কুঁচকি ইত্যাদি স্থানে ফুসকুড়ি-চুলকানি ইত্যাদি হয়।
৩. রক্তের উচ্চ শর্করা ত্বককে পানিশূন্য করে দেয়। ফলে ডায়াবেটিক রোগীর ত্বক বেশি শুষ্ক, ত্বক ফেটে যায় ও চুলকানি হয়।
৪. অ্যাকানথোসিস নেগ্রিকানস একধরনের কালো খসখসে ত্বক আবরণ, যা ডায়াবেটিস ও স্থূল রোগীদের গলার পেছনে, ঘাড়ে, বাহুমূলে, কুঁচকিতে দেখা যায়।
৫. পায়ের সামনের ত্বকে গোলাকৃতি কালো-ছোপ দাগ থাকে।
৬. ত্বকের গভীরতর স্তরে চর্বি ও অন্যান্য স্তর ক্ষয় হয়ে ত্বকে ঘা হতে পারে।
৭. কারও কারও ইনসুলিন অ্যালার্জি, ইনসুলিন দেওয়ার জায়গায় ত্বক মোটা-উঁচু বা পাতলা হয়ে যায়।
ডায়াবেটিসে ত্বকের যত্ন
১. ত্বকে কাটা-ছেঁড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি বা ঘা ইত্যাদি লক্ষ করলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. কাটলে বা আঘাত পেলে দ্রুত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং অ্যালকোহল বা আয়োডিনযুক্ত কিছু না লাগিয়ে বরং অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করুন।
৩. বছরে অন্তত দুবার চিকিৎসকের কাছে পা পরীক্ষা করিয়ে নিন। ডায়াবেটিক রোগীদের উপযোগী মোজা-জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন, প্রতিদিন পায়ের যত্ন নিন।
৪. নিজে ফুসকুড়ি বা ফোড়া ফাটানোর চেষ্টা করবেন না।
৫. ত্বক ভেজা বা আর্দ্র রাখবেন না।
৬. গোসল বা ত্বক ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না। মৃদু ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন এবং গোসলের পর আর্দ্রতা রক্ষাকারী লোশন ব্যবহার করুন। আঙুলের ফাঁকে লোশন ব্যবহার করবেন না।
৭. প্রচুর পানি পান করুন, পানিশূন্যতা এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহল বা ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পরিহার করুন।
৮. সুষম খাবার গ্রহণ করুন।
ডা. নাজমুল কবীর কোরেশী
মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ০৩, ২০১৩
Leave a Reply