পথে-ঘাটে পাইলস বা অর্শ রোগের চিকিৎসার নিশ্চয়তাসহ টোটকা, কবিরাজি ও নানা ধরনের অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসার সাইনবোর্ডের সমাহার দেখা যায়। পাইলস বা অর্শ একটি সাধারণ সমস্যা, যার সুচিকিৎসা করা হলে রোগী ভালো থাকেন।
কীভাবে বুঝবেন?
মলত্যাগের সময় ব্যথাহীন রক্তপাত, চুলকানি বা অস্বস্তিকর জ্বালাপোড়া, মলদ্বারে ব্যথা, পায়ুপথের বাইরের দিকে ফোলা বা বেরিয়ে আসা অনুভব করা, বা চাকার মতো অনুভূতি
কেন হয় পাইলস?
মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা, জন্মগতভাবে দুর্বল ধমনি, দীর্ঘদিনের কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, ভারী বস্তু বহন করতে হয় এমন কাজ, অতিরিক্ত ওজন, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি।পাইলসের চিকিৎসা না করা হলে প্রায়ই মলের সঙ্গে রক্তপাতের জন্য ধীরে ধীরে রক্তশূন্যতা হতে পারে, প্রায়ই ব্যথা হয় এবং সংক্রমণ হয়। পাইলসের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার কিছু ধাপ রয়েছে। প্রথম দিকে ওষুধ ও নির্দিষ্ট জীবনাচরণ প্রণালি মেনে চললে কাজ হতে পারে, তবে জটিল আকার ধারণ করলে অস্ত্রোপচারও লাগতে পারে। পাইলসের রোগীরা কিছু পদ্ধতি মেনে চললে ভালো থাকতে পারেন।
-পায়ুপথের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
-কুসুম গরম পানিতে দিনে কয়েকবার ভিজিয়ে নিন
-ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যায়
-চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত মলম ব্যবহার করুন,
-প্রদাহ বা সংক্রমণের দ্রুত চিকিৎসা নিন
-প্রতিদিন প্রচুর আঁশযুক্ত সবজি, ফলমূল ও খাবার গ্রহণ করবেন; মাংস, কম আঁশ ও বেশি চর্বিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি পরিহার করুন। প্রচুর তরল ও দিনে ছয়-সাত পানি পান করুন।
-কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা করুন, মলত্যাগে কখনো বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন না, আটকে রাখবেন না।
-ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন, নিয়মিত ব্যায়ামে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে।
মনে রাখবেন, এটি জটিল কোনো রোগ না হলেও একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। তাই ‘গ্যারান্টি’ চিকিৎসার আকর্ষণে না ভুলে নিয়মিত চিকিৎসা নিন ও নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে চলুন।
ডা. কৃষ্ণপদ সাহা
সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
Leave a Reply