‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’-এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। প্রতিনিয়তই বাড়ছে গড় তাপমাত্রা। গ্রী্নকাল এলেই অসহনীয় গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় রোগব্যাধি। তাই গরমে নিজেকে সুস্থ রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন।
–গরমে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, যা কিছুটা দৃশ্যমান এবং কিছুটা অদৃশ্য। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খান। তবে বাইরের রোদ থেকে এসেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করবেন না। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। তারপর পান করুন। ঠান্ডা কোমল পানি বেশি পান না করাই ভালো। লেবুর শরবত, ডাবের পানি ইত্যাদি পান করুন। ঘাম বেশি হলে প্রয়োজনে খাওয়ার স্যালাইন খেতে পারেন। তাতে শরীরে পানির পাশাপাশি লবণের ঘাটতিটাও পূরণ হবে।
–নিয়মিত গোসল করুন। প্রয়োজনে দিনে একাধিকবার গোসল করতে পারেন। এতে শরীর ও মন চাঙা হবে।
–বাইরে বেরোনোর আগে সুতির হালকা রঙের পোশাক পরাই ভালো। এতে কাপড়ের মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচলের কারণে এবং হালকা রং কম তাপ শোষণ করায় কিছুটা আরাম পেতে পারেন। নিয়মিত অন্তর্বাস পরিষ্কার করবেন। এতে চর্মরোগ কম হবে।
–রোদে বেরোনোর সময় ছাতা ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে ভালো কোনো সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে চামড়া রোদে পোড়া থেকে রক্ষা পেতে পারে।
–যাঁরা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে কাজ করেন, তাঁরা কক্ষ থেকে বের হয়ে সরাসরি বাইরে বা রোদে যাবেন না; বরং কিছুক্ষণ সাধারণ তাপমাত্রার কক্ষে বসুন। তারপর বাইরে বের হোন। বাইরে থেকে আসার সময়ও একই প্রক্রিয়ায় চলুন।
–গরমে রাস্তার ধারের লোভনীয় শরবত কিংবা ফলের রস খাওয়ার আগে দেখে নিন, তাতে যে পানি ব্যবহার করা হয়েছে, তা বিশুদ্ধ কি না। না হলে ডায়রিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েড ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এসব পানীয় পারতপক্ষে এড়িয়ে চলাই ভালো।
–অনেকক্ষণ ধরে বেশি গরমে বা রোদে থাকলে অনেকে অচেতন হয়ে পড়তে পারে, যাকে হিটস্ট্রোক বলা হয়। এ রকম হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে শুইয়ে দিতে হবে। সারা গা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। রোগী খেতে পারলে তাকে প্রচুর পানি বা খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
————-
ডা. কে এম শাহুন্জা
দৈনিক প্রথম আলো, ০৭ মে ২০০৮
Leave a Reply