হঠাৎ পায়ের বুড়ো আঙুলে তীব্র ব্যথায় মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেল। দেখলেন, আঙুলের গোড়া ফুলে লাল, প্রচণ্ড গরম। আঘাত পাননি বা সংক্রমণ হওয়ার মতো কিছু ঘটেছে বলেও মনে করতে পারছেন না। তাহলে আপনি সম্ভবত গাউট বা ইউরেট ক্রিস্টাল প্রদাহজনিত গেঁটেবাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে লিখেছেন ডা. নাজমুল কবীর কোরেশী।
যাঁদের সমস্যা হতে পারে
পারিবারিক ইতিহাস, বয়স, ওজনাধিক্য, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল ও উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার, কিছু ওষুধ যেমন থায়াজাইড, অ্যাসপিরিন এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
কারণ
খাদ্যের পিউরিন শরীরে বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙে ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়, যা রক্তে মিশে অবশেষে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এই ইউরিক অ্যাসিড অতিরিক্ত তৈরি হলে বা কিডনির অকার্যকারিতায় বের হতে না পারলে তা রক্তে জমা হতে পারে। এর ফলে সন্ধির ভেতর ইউরেট ক্রিস্টাল তৈরি হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে ও বাত হয়।
চিকিৎসা
তীব্র ব্যথার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন।
খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন এনেও আপনি নিজের ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
দিনে ২-৪ লিটার তরল পান করুন, যার বেশির ভাগ পানি।
অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
মধ্যম মাত্রায় আমিষ গ্রহণ করুন। চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
ওজনাধিক্য থাকলে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন। দ্রুত ওজনহ্রাস ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
উচ্চমাত্রার পিউরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। যেমন: মুরগির চামড়া, মগজ, গিলা, কলিজা, চর্বিযুক্ত গরু-খাসির মাংস, মগজ, হাঁস, কবুতর, মাংসের স্যুপ, পায়া। মাছের মাথা, মাছের ডিম, সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, শুঁটকি মাছ, ইলিশ, কই মাছ, মসুর ডাল, অরহর ডাল, মটর, ছোলা। নারকেল, নারকেলের দুধ, টিনজাত খাবার, টমেটো সস।
স্বল্পমাত্রার পিউরিনযুক্ত খাবার খেতে পারেন। যেমন: নদী/মিঠা পানির তৈলাক্ত মাছ, মুরগির মাংস, কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ, ননীবিহীন দুধ, কাঁকরল, পটোল, শসা, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঝিঙে, অলিভ, সানফ্লাওয়ার, কর্ন তেল, চা-কফি সীমিত, প্রচুর পানি, আলু, মিষ্টি আলু, মুলা, লাউ, কাঁচা পেঁপে, সবুজ বাঁধাকপি।
Leave a Reply