কাঁধের ব্যথাটা দিনে দিনে এমন হলো যে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানো বা হাত গলিয়ে জামা পরার শক্তিটুকুও থাকল না। হাত ওপরে বা ডানে-বাঁয়ে সরাতে গেলেই ব্যথা। একে বলা হয় ফ্রোজেন শোল্ডার বা চিকিৎসকের ভাষায় এডেসিভ ক্যাপসুলাইটিস।
কাঁধের সন্ধির চারপাশে লিগামেন্ট, টেন্ডন ইত্যাদি মিলে তৈরি ক্যাপসুল সন্ধিকে স্থিতিশীল রাখে। সেই ক্যাপসুল মোটা ও শক্ত হয়ে ব্যথা হয়। বয়স্ক ব্যক্তি বিশেষ করে বয়স্ক নারীদের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা যায়।
ঝুঁকি
বিভিন্ন কারণে যদি কাঁধের সন্ধির নড়াচড়া কিছুদিন সীমিত থাকে, যেমন: আঘাত, হাড় ভাঙা, শল্যচিকিৎসা, পক্ষাঘাত ইত্যাদি।
যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, যেমন: স্ট্রোক বা পক্ষাঘাত, পারকিনসনিজম, হূদেরাগ, ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি।
ফ্রোজেন শোল্ডারের তিনটি ধীর লয় ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে কাঁধের সন্ধির ব্যথা দেখা দেয়, যা নাড়াচাড়ার সময় ও রাতে বেড়ে যায়। মনে হয় যেন জোড়াটি জমে আছে। দ্বিতীয় ধাপে ব্যথা কমে আসতে শুরু করলেও জমে যাওয়া ভাব বেড়ে গিয়ে হাতের নড়াচড়া সীমিত হয়ে আসে। শেষ পর্যায়ে কিছুটা কমে আসতে পারে।
সাধারণত এক-দুই বছরের মধ্যে কমে আসে।
চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যথা কমানো। ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে যথাসম্ভব হাত ও কাঁধের নড়াচড়া বজায় রাখা।
ব্যথানাশক বড়ির ব্যবহার কমাতে রোজ পাঁচ মিনিট হালকা গরম বা ঠান্ডা সেক নিতে পারেন।
আক্রান্ত সন্ধির ব্যবহার ও ব্যায়াম বজায় রাখতে হবে।
ব্যথার সময় ব্যায়াম নয়। ব্যথা কমলে ধীরে ধীরে সীমিতভাবে ব্যায়াম শুরু করতে হয়।
ডা. নাজমুল কবীর কোরেশী
মেডিসিন বিভাগ ইউনাইটেড হাসপাতাল।
———————————-
কয়েকটি ব্যায়াম
কাঁধ ঘোরানো
কাঁধের দুপাশে হাত ঝুলিয়ে রেখে ধীরে ধীরে দুই কাঁধ পর্যায়ক্রমে দুই মিনিট করে সামনে-পেছনে ঘোরানো। এটি শোল্ডার রোটেশন
দেয়াল স্পর্শ
ব্যায়ামটি হামাগুড়ির মতো। ক্রল ওয়াল নামে পরিচিত। দেয়ালে ধীরে ধীরে আঙুল নিচ থেকে ওপরে তোলা হয়।
তোয়ালে ব্যবহার
তোয়ালে ব্যবহারটাওয়েল পুলিং। এই ব্যায়ামে পেঁচানো তোয়ালে কাঁধের পেছন দিয়ে পিঠের ওপর ফেলে ওঠানো-নামানো করা হয়।
টেবিল স্পর্শ
চেয়ারে বসে টেবিলের ওপর হাত রেখে আঙুল বেয়ে সামনে এগোনো।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৩
Leave a Reply