ফলের রস নয়, বেশি করে ফল খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের গবেষকেরা যৌথ এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়ার কথা দাবি করেছেন। খবর বিবিসির।
গবেষকদের তথ্যমতে, ব্লুবেরি (এক ধরনের জামজাতীয় ফল), আপেল ও আঙুর খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমতে দেখা যায়। ‘ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষকদের দাবি, ফল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যে সুফল পাওয়া যায়, ফলের রস বা জুস খেলে সে উপকার পাওয়া যায় না। সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের অধিক পরিচিত ফল ব্লুবেরি খেলে। ব্লুবেরির ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমতে দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এক লাখ ৮৭ হাজার ডায়াবেটিসের খাবার নিয়ে গবেষণা করে এ ফল পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা ফল খাওয়ার বিষয়টিতে পরামর্শ দেওয়ার আগে সতর্কতার কথাও জানিয়েছেন।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস
অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উত্পন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ। তখন রক্তে চিনি বা শর্করার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতিই হলো এ রোগের মূল কথা। টাইপ-২ বহুমূত্র রোগের পেছনে থাকে মূলত ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’। টাইপ-২ রোগীর শরীরে যে ইনসুলিন উত্পন্ন হয়, একে ব্যবহার করতে পারে না। চিকিত্সকদের পরামর্শ হচ্ছে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে জীবনধারায় আগে থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে। সুষম ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন হ্রাস ইত্যাদির মাধ্যমে ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। খাদ্যাভ্যাসে ফল থাকার গুরুত্ব সাম্প্রতিক এ গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন গবেষকেরা।
ফল, নাকি ফলের রস?
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে তিনবার ব্লুবেরি, আঙুর, আপেল খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। সব ধরনের ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে কমতি দেখা গেলেও এই তিন প্রকার ফল বেশি কার্যকর। এ ফলগুলোতে থাকা বিশেষ অ্যান্থোসায়ানিন, পলিফেনল-জাতীয় উপাদান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
গবেষকেরা জানান, পুরো ফল খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে যে সুফল পাওয়া যায়, ফলের রস খেলে তার চেয়ে কম সুফল পাওয়া যায়; তাই গবেষকেরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে বেশি করে ফল ও সবজি খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ৩০, ২০১৩
Leave a Reply