আলসেমি করে ব্যায়ামাগারেও যাওয়া হয়নি। আবার খাবারেও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। শেষমেশ যা হওয়ার তা-ই হলো। ওজন বেড়ে গেল বেশ খানিকটা। কিন্তু দ্রুত খানিকটা ওজন যে না কমালেই নয়। বন্ধুর বিয়ের তারিখ এগিয়ে আসছে! কিংবা কোনো পার্টি। এই চিন্তা যাঁরা করছেন, তাঁদের জন্য সত্যিই কি কোনো সমাধান আছে?এ ব্যাপারে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বললেন, সাত থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজন কমানো সত্যিই সম্ভব। নিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়া আর হালকা ব্যায়ামে দ্রুত ওজন ঝরানো যায়। তবে এই পদ্ধতির মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন গেলে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। তাই চটজলদি ওজন কমাবেন শুধু খুব প্রয়োজন পড়লে এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য।
l খাওয়ার সময় বেছে খাবার খান। যে খাবারে চর্বি বেশি, সেই খাবার এড়িয়ে চলুন।
l কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ শর্করা আছে এমন খাবার কম খেতে হবে।
l শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে।
l সঙ্গে খেতে হবে আঁশযুক্ত খাবার।
l অবশ্যই ছাড়তে হবে কোমলপানীয়।
l খাবার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়ামও করতে হবে।
ওজন কমাতে শরীর চর্চা
খাদ্যাভ্যাসে যেমন পরিবর্তন আনতে হবে, তেমনি শরীর চর্চাও করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে শরীর চর্চা করলে ওজন হ্রাস দ্রুত হয়। এমনটাই জানালেন ফিটনেস ওয়ার্ল্ড হেলথ ক্লাবের ব্যবস্থাপক ও প্রশিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান। বললেন, দ্রুত ওজন কমানোর এই পদ্ধতিতে শরীরের প্রয়োজনীয় খাদ্যতালিকা থেকে যেহেতু অনেক কিছুই কাটছাঁট করা হয়, তাই এই সময়টা ভারী ব্যায়াম না করাটাই ভালো। দ্রুত ওজন কমানোর জন্য হালকা ধরনের যে শরীর চর্চাগুলো করতে হবে—
প্রতিদিন নিয়ম করে আধা ঘণ্টা দ্রুত হাঁটতে হবে কিংবা দৌড়াতে হবে।
করতে পারেন ১০ মিনিট সাইক্লিং।
দড়ি লাফের জন্য বরাদ্দ করতে পারেন ১০ মিনিট।
ওঠাবসাও এক ধরনের ভালো ব্যায়াম, এটিও করবেন ১০ মিনিট।
আর যদি সুযোগ থাকে, নিয়মিত সাঁতার কাটুন। দ্রুত ওজন কমবে।
দ্রুত ওজন কমাতে খাদ্য গ্রহণে আনতে হবে ব্যাপক পরিবর্তন। সারা দিনের খাদ্য গ্রহণের এই নমুনা তালিকাটা গেঁথে নিন মাথায়। আর মেনে চললে দ্রুত ওজন কমানো শুধু কয়েক দিনের ব্যাপার।
সকাল ৮টা: শুধু সবজি স্যুপ (ক্লিয়ার)।
সকাল ১০টা: টক দইয়ের লাচ্ছি।
দুপুর ১২টা: টকজাতীয় ফলের রস।
বেলা ২টা : মুরগির স্যুপ (ক্লিয়ার)।
বিকেল ৪টা: সয়া প্রোটিন অথবা সয়া মিল্ক।
সন্ধ্যা ৬টা: ফলের রস।
রাত ৮টা: মুরগির স্যুপ।
তবে যাঁরা রাত জাগবেন, তাঁরা রাত ১০টার দিকে চাইলে একবার সয়া মিল্ক খেতে পারেন।
তবে এই খাদ্যাভ্যাস ব্যক্তির বয়স, ওজন, উচ্চতা ও ব্যক্তি কী ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করছেন তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২০, ২০১৩
Leave a Reply