দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা কিংবা আঘাতে তা ভেঙে গেছে। আবার হয়তো দাঁতে বড় এক ক্ষত হয়েছে, যেখানে খাদ্য জমলেই খুব ব্যথা হয়। চিকিৎসক দেখে বললেন, ‘আপনার তো রুট ক্যানেল করতে হবে।’ ঘাবড়ে গেলেন খুব? ভাবলেন রুট ক্যানেল, (দাঁতের মাড়ি বা দন্তমূলের চিকিৎসা) সে তো বিরাট ব্যাপার! সত্যি হলো, রুট ক্যানেল ভীতিকর কোনো চিকিৎসাব্যবস্থা নয়। বরং খুব সাধারণ; হরহামেশাই হচ্ছে হাসপাতালে কিংবা ব্যক্তিগত চেম্বারে। জেনে নেওয়া যাক কেমন করে হয় রুট ক্যানেল।
যখন দাঁতের সংক্রমণ দাঁতের ভেতরের রক্তনালি, স্নায়ু, কিংবা টিস্যুকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তখন সাধারণত রুট ক্যানেলের দরকার হয়।
কখনো আবার সংক্রমণ ছাড়া আঘাতজনিত কারণেও দাঁতের শিকড় কিংবা অন্যান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে রুট ক্যানেল করার প্রয়োজন হতে পারে।
রুট ক্যানেল পদ্ধতির মাধ্যমে দাঁতের ভেতরের সংক্রমিত রক্তনালি, স্নায়ু, টিস্যুকে কেটে সরিয়ে ফেলা হয়। তাই রুট ক্যানেল করা দাঁতে দ্বিতীয়বার সংক্রমণের আশঙ্কা ক্ষীণ থাকে।
রুট ক্যানেল পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ করতে সাধারণত তিন দিন সময় লাগে। কখনো আরও কম সময়ে হয়ে যায় কিংবা বেশি দিনও লাগতে পারে। দাঁতের স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করছে সময়টা।
এ পদ্ধতিতে দাঁতের ওপরের অংশ থেকে কেটে দাঁতের ভেতরের সংক্রমিত সব টিস্যু তুলে ফেলা হয়। তারপর ভেতরের অংশ ওষুধের সাহায্যে পরিষ্কার করে আস্তে ধীরে যন্ত্রের সাহায্যে ক্যানেল প্রস্তুত করে নিতে হয়।
এ সময় দাঁতের ক্যানেলে থাকা সব সংক্রমিত টিস্যু বের করে ওষুধ দিয়ে পরিষ্কার করে ফিলিং ম্যাটেরিয়াল দিয়ে পুরো দাঁতের ভেতরের অংশ পূর্ণ করে দিতে হয়।
মুখের কোন অংশের দাঁতে রুট ক্যানাল করা হলো, তার ওপর নির্ভর করে ফিলিং ম্যাটেরিয়াল ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
রুট ক্যানেল শেষে দাঁত তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও শক্তি হারায়। তাই রুট ক্যানেল শেষে করে নিতে হয় ক্যাপ। দাঁতের ক্যাপ অসংখ্য শেডে পাওয়া যায়। তাই নিজের দাঁতের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ক্যাপ করে নিলে হারানো সৌন্দর্য যেমন ফিরে আসবে—দাঁতের শক্তিও বাড়বে বহুগুণ।
ডা. সিদ্ধার্থ মজুমদার
লেখক: দন্ত চিকিৎসক।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২৬, ২০১৩
Leave a Reply