এমন দিন খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন আদালতের এজলাসে আসামির মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ (স্ক্যান) করেই জানা যাবে তিনি অপরাধী নাকি নির্দোষ। প্রযুক্তির এমন ব্যবহারে সাফল্যের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
মস্তিষ্কের কার্যপদ্ধতির ছবি নির্ণয়ের প্রযুক্তি দ্রুত সমৃদ্ধ হচ্ছে। কোনো কাজের নেপথ্য কারণ সুনির্দিষ্ট করে জানতে এখন এই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। এতে একজন কী ধরনের জিনিস চুরি করতে পারে, সেটা তার স্নায়বিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণে ধরে ফেলা সম্ভব বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন। নিউইয়র্কে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশ্ব বিজ্ঞান উৎসবে (ওয়ার্ল্ড সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল) এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রেইনস অন ট্রায়াল উইথ অ্যালান অ্যালডা নামে নির্মাণাধীন একটি প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের পদ্ধতি। প্রামাণ্যচিত্রটি আগামী সেপ্টেম্বরে মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়।
মস্তিষ্কে সক্রিয় চৌম্বক অনুরণন চিত্র (এফএমআরআই) ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তির অপরাধ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রক্তপ্রবাহের পরিবর্তন শনাক্ত করা হয়। এই পরিবর্তনের সাহায্যে মস্তিষ্কের সক্রিয় অংশটি সম্পর্কে জানা যায়।
অ্যালান অ্যালডা এ রকম একটি এফএমআরআই পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁকে বলা হয়, গবেষকের অজান্তে একটি জিনিস (আংটি অথবা ঘড়ি) চুরি করতে। এরপর তাঁর মস্তিষ্ক স্ক্যান করে ওই গবেষক সফলভাবেই নির্ণয় করতে সমর্থ হন চুরি যাওয়া জিনিসটি।
সংশ্লিষ্ট গবেষক ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ু ও মনোবিজ্ঞানী অ্যান্থনি ওয়াগনার বলেন, শায়িত অবস্থায় একজন মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে তার অপরাধের তথ্য ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা সম্ভব। তবে সমস্যা হচ্ছে, ব্যক্তি কোনো অপরাধ না করে কেবল সেটি কল্পনা করলেই সেই তথ্য মস্তিষ্কে রয়ে যায়। তখন স্ক্যানের তথ্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে।
এখন অবশ্য আসামির মস্তিষ্ক স্ক্যান করার ক্ষেত্রে পুলিশের নৈতিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে এই প্রযুক্তি কোনো অপরাধকর্মের বিচারকার্যে প্রত্যক্ষদর্শীর চেয়ে জোরালো সহায়তা করবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
লাইভ সায়েন্স।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৫, ২০১৩
Leave a Reply