অনেকেই স্বভাবগতভাবে খুঁতখুঁতে প্রকৃতির। খাবার আগে থালাটা একবার পরিষ্কার করে সন্তুষ্ট হন না, দরজায় তালা বারবার দেখে নিশ্চিত হতে হয় বা ঘুম থেকে জেগে পরীক্ষা করেন রান্নাঘরে গ্যাস বন্ধ করা হলো কি না। তবে ব্যাপারগুলো যখন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ে কিংবা দৈনন্দিন কাজ-কর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, তখন সেটি রোগের পর্যায়ে চলে গিয়েছে কি না, তা ভাবতে হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে ‘অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার’ বা সংক্ষেপে ওসিডি বলা হয়।
ওসিডিতে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে একই চিন্তা বারবার আসা অথবা একই কাজ বারবার করার উপসর্গ দেখা যায়। তিনি চিন্তাটি মাথা থেকে সরাতে চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেন না। এ কারণে তাঁর মধ্যে অস্থিরতা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। একই চিন্তার পুনরাবৃত্তি তাঁকে দিয়ে একই কাজ বারবার করিয়ে নেয়। যেমন, বারবার মনে হতে পারে যে হাতে ময়লা লেগে আছে, তাই বারবার হাত ধুতেই থাকেন। ‘শুচিবায়ু’ আসলে এই ওসিডির একটি ধরন। যেহেতু অধিকাংশ রোগী বুঝতে পারেন যে তাঁর চিন্তা ও আচরণগুলো অহেতুক এবং অতিরিক্ত, এ জন্য তিনি লজ্জিত বোধ করেন এবং উপসর্গগুলো লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেন।
ওসিডির কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি।
ওসিডি একটি দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগ। চিকিৎসার মাধ্যমে এর উপসর্গগুলোকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডা. মুনতাসীর মারুফ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউিট, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ০১, ২০১৩
Leave a Reply