ধূমপান ত্যাগের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো নিজের ইচ্ছাশক্তি। ধূমপান ছাড়ার জন্য নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপনি যতটা দৃঢ় থাকবেন, ততই সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়বে। ধূমপান আপনার নিজের এবং কাছের মানুষটির বা আপনার শিশুসন্তানটির জন্য পরোক্ষভাবে কী ক্ষতি ডেকে আনছে তা জানুন। প্রয়োজনে কুফলগুলো নিজ হাতে কাগজে লিখে ফেলুন, কাগজটি সঙ্গে রাখুন এবং যখন ধূমপানের ইচ্ছা জাগবে, তখন কাগজটি বের করে পড়ুন।
—ধূমপান ত্যাগের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিন ঠিক করুন। তার আগের দিন বাসায় থাকা সিগারেট, অ্যাসট্রে ও লাইটার ফেলে দিন।
—পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের সহযোগিতা নিন। তাঁদের জানিয়ে রাখুন ধূমপান ত্যাগের তারিখটি। তাঁরা যেন আপনাকে ধূমপানের আহ্বান না জানান। কিংবা আপনার আশপাশে ধূমপান না করে।
—ধূমপান ত্যাগের প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি বোধ হতে পারে। কারণ, দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে এর প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্ভরতা গড়ে ওঠে। তবে ধীরে ধীরে এ সমস্যাগুলো কেটে যায়। মুখে ‘কী যেন নেই’ ধরনের অস্বস্তি কাটাতে চিনিমুক্ত চুইংগাম, মিন্ট বা ক্যান্ডি ব্যবহার করতে পারেন। হাত বা আঙুলের অস্বস্তি কাটাতে মাঝেমধ্যে দুই আঙুলের ফাঁকে পেনসিল বা পেপার ক্লিপ, হাতে ছোট আকারের বল ব্যবহার করতে পারেন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খান।
—মনকে ব্যস্ত রাখুন। ম্যাগাজিন-গল্পের বই পড়ুন, পছন্দের গান শুনুন, সুস্থ বিনোদনে অংশ নিন। প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন।
—ধূমপায়ীদের সঙ্গ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
—একবারে পুরোপুরি ধূমপান ছাড়তে না পারলে ধীরে ধীরে প্রতিদিন একটি বা দুটি বা সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণ করে সিগারেট সেবন কমিয়েও সম্পূর্ণ ত্যাগের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেন।
ডা. মুনতাসীর মারুফ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২৪, ২০১৩
Leave a Reply