গর্ভধারণ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এ জন্য চাই মায়ের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি। আমাদের দেশে বেশির ভাগ গর্ভধারণই অপরিকল্পিত। কিন্তু গর্ভধারণের আগে মায়ের সুস্বাস্থ্য ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করা গেলে অনেক জটিলতাই এড়ানো সম্ভব।
গর্ভধারণের জন্য মায়ের বয়স উপযুক্ত কি না, তা আগে ভেবে নিন। ২০ বছরের নিচে এবং ৩৫ বছরের পর—উভয় ক্ষেত্রেই জটিলতার আশঙ্কা বেশি।
আপনার ওজন গর্ভধারণের উপযোগী কি না, দেখে নিন। ওজন কম বা বেশি হলে সঠিক ওজনে আসার চেষ্টা করুন।
পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত কায়িক পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তুলতে চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন। এগুলো আপনার গর্ভকালীন সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।
ধূমপান বা অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস আগেই বাদ দিন।
ইতিপূর্বে জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকলে—যেমন: বড়ি, কপার টি বা ইনজেকশন—গর্ভধারণের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন কীভাবে এগুলো ছাড়বেন।
হেপাটাইটিস-বি বা অন্য কোনো টিকা নেওয়ার ইচ্ছা থাকলে আগেই নিয়ে নিন।
গর্ভধারণের আগে থেকেই ফলিক অ্যাসিড খেতে শুরু করলে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম অনেকটাই রোধ করা যায়।
আপনি যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড সমস্যা, হাঁপানি বা হূদেরাগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে আগে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রস্তুত হয়ে নিন। জেনে নিন কোন ওষুধগুলো চালিয়ে যাওয়া যাবে আর কোনগুলো পরিবর্তন করতে হবে।
গর্ভধারণের চেষ্টাকালে যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে জেনে নিন এটি নিরাপদ কি না এবং যেকোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগে (যেমন: এক্স-রে করার আগে) চিকিৎসককে অবহিত করুন যে আপনি সন্তান নিতে চেষ্টা করছেন।
আগের গর্ভধারণে জটিলতার ইতিহাস থাকলে, গর্ভপাত বা মৃত শিশু প্রসব বা পূর্বের সন্তানের কোনো জন্মগত সমস্যা থাকলে যে কারণে এমনটি হয়েছিল, এর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
রক্তের গ্রুপ জেনে নিন এবং নেগেটিভ হয়ে থাকলে কী জটিলতা হতে পারে বা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, জেনে নিন।
ডা. রেহেনা পারভীন
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৭, ২০১৩
Leave a Reply