কোনো একসময় মানুষ ‘ডেন্টাল’ শব্দের অর্থ কেবল দাঁতকে বোঝালেও এখন এই শব্দের প্রকৃত অর্থ যে ‘দাঁতসম্পর্কীয়’, সেটা অনেকেই জানে। এর মধ্যে শিশুদের ২০টি দাঁত, পরবর্তী সময়ে ৩২টি স্থায়ী দাঁতের পাশাপাশি মাড়ি, জিহ্বা, ঠোঁট, চোয়ালের ভেতরকার নরম অংশ, লালা ও লালাগ্রন্থি, তালুসহ মুখের স্নায়ু অন্তর্ভুক্ত।
আমাদের মধ্যে অনেকের অভ্যাসজনিত কারণে ডেন্টাল সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন—
নিয়মবহির্ভূত দাঁত ব্রাশ: দাঁতকে অধিক পরিষ্কার করতে কেউ কেউ জোরে জোরে শক্ত ব্রাশ দিয়ে এলোমেলোভাবে দাঁত ঘষে। আবার অনেকে ছাই বা কয়লা ব্যবহার করে। এতে সাময়িকভাবে দাঁত সাদা দেখালেও দাঁতের শক্ত প্রতিরক্ষা স্তর ক্ষয় হতে শুরু করে এবং দাঁত শিরশির করে।
দাঁতকে ভিন্ন কাজে ব্যবহার: অনেকে দাঁত দিয়ে বিভিন্ন প্যাকেট খোলে, কোমল পানীয়ের কর্ক খোলে, মেয়েরা চুলের ক্লিপ খোলে, আবার অনেকে নিজের অজান্তে পেনসিল বা কলম চিবোয়, নখ বা সুতা কাটে। এসব আপত্তিকর অভ্যাস একইভাবে দাঁত ক্ষয় করে।
দাঁতে দাঁত কাটা: কেউ কেউ রেগে গেলে অথবা নিজের অজান্তে অথবা ঘুমের মধ্যে দাঁতে দাঁত ঘষে, যাকে ব্রুকসিজম বলা হয়। অনিয়ন্ত্রিত এ স্বভাবে ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ না নিলে দাঁতের ও চোয়ালের হাড়ের অস্থিসন্ধিতে অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে।
বিশেষ খাবার গ্রহণ: মিষ্টিজাতীয় খাদ্য দাঁতের গর্ত সৃষ্টি করতে পারে, যাকে ক্যারিজ বলা হয়। এ কথা এখন কম-বেশি বেশির ভাগ মানুষ জানে। কিন্তু আলুর (শর্করা) তৈরি আঠালো খাবারও যেমন চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দাঁতের ফাঁকে জমে থাকে এবং সহজেই ক্যারিজ করতে পারে। একইভাবে আঠালো চকলেট, চুইংগাম বেশি ক্ষতিকর, আইসক্রিম এমনকি শুধু বরফও দাঁতে ফাটলের সৃষ্টি করতে পারে। শিশুদের ঘুমের মধ্যে ফিডার খাওয়ানোর অভ্যাস দাঁতের জন্য বিপজ্জনক।
মো. আসাফুজ্জোহা রাজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারি ০২, ২০১৩
Leave a Reply