স্বাস্থ্যের ওপর মুঠোফোনের প্রভাব শুভ না অশুভ, এই নিয়ে দেশে দেশে গবেষণার অন্ত নেই। ব্রেন টিউমার এবং ইউভিয়ার ক্যানসারের জন্য অধিকতর ঝুঁকি সৃষ্টি হয়—এমন একটি ধারণা থাকলেও শক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
মুঠোফোন কাজ করে নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন দিয়ে। আর ক্যানসার হয় আয়োনাইজিং রেডিয়েশন দিয়ে। রেডিয়েশন কথাটি শুনলেই ভয় পেয়ে যাই আমরা। তবু যতই থাক ভয়ভীতি, মুঠোফোন ছাড়া এখন কি আর কোনো কিছুই সম্ভব, সভ্যতা-সংস্কৃতি? প্রয়োজন শুধু সব প্রযুক্তির সতর্ক আর সুন্দর ব্যবহার। আসুন দেখি ফোনের কিছু সম্ভাবনার দিক।
ভিডিও টেলিফোন
যারা কানে কম শোনে তাদের পক্ষে টেলিফোনে কথা বলা বেশ কষ্টকর। কিন্তু যদি টেলিফোন কলটির সঙ্গে বক্তার ছবি দেখানো সম্ভব হয়, তাহলে এ কষ্টটা নিশ্চয় লাঘব হতে পারে।
সাইড টোন সচেতনতা
সাধারণ ফোনগুলোতে শ্রোতা মাউথপিস দিয়ে ঢোকা কিছু শব্দ ইয়ারপিসে আবার শুনতে পায়। যারা কম শোনে তাদের জন্য এই শব্দ আগে বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পশ্চাৎপটের অবাঞ্ছিত শব্দ এতে করে সাইড টোন হিসেবে ঢুকে পড়ে। তা ছাড়া রয়েছে লাইন নয়েজ বলে একটা অসুবিধা। এগুলো কমবে যদি শ্রোতা শোনার সময় মাউথপিসটিকে চেপে ধরে অথবা যেখানে মিউট বাটন দেওয়া থাকে, সেখানে তা পিটে দেয়।
হিয়ারিং এইড ও মুঠোফোন
হিয়ারিং এইডের সঙ্গে অনেকে সাধারণ ফোন ব্যবহার করে থাকেন। এতে ভালো শোনাও যায়। এ ক্ষেত্রে ইয়ারপিসকে এইড থেকে দূরে রাখলে শুনতে আরও সুবিধা হয়। ৪০ ডেসিবেল পর্যন্ত শ্রুতি বাড়ানো যায়, যদি একটি টেলিকয়েল দিয়ে ফোন এবং হিয়ারিং এইডের মধ্যে সংযোগ সাধন করা যায়। ফোন থেকে সরাসরি হিয়ারিং এইডে ইনপুট পাঠানো গেলে সেটি হতে পারে বেশ আকর্ষণীয়।
অ্যামপিমরফাইড হ্যান্ডসেট
এটি ব্যবহার করে ২০ ডিবির মতো বাড়তি শ্রুতি পাওয়া যায়। হ্যান্ডসেটগুলো পোর্টেবল বা ফিক্সড থাকতে পারে। এভাবে হিয়ারিং এইড ছাড়াই কাজে লাগতে পারে হ্যান্ডসেটগুলো।
এসএমএস
মুঠোফোনের শর্ট মেসেজ সার্ভিসটি বধির ও শ্রুতিকাতর ব্যক্তিদের ব্যবহার উপযোগী করে তোলার কাজ এগিয়ে চলেছে।
টেক্সট টেলিফোন
গভীরভাবে যারা বধির তাদের জন্য সহায়ক। এখানে আছে একটি কি-বোর্ড ও একটি পর্দা এবং এটি হচ্ছে একটি দ্রুতগামী ই-মেইল ব্যবস্থার মতো। একজন কমিউনিকেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি রিলে স্টেশনে বসে মুখে বলা কথাগুলো টাইপ করে শ্রোতার কাছে পাঠিয়ে দেন, তাহলে এ ব্যবস্থা আরও কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
ব্লু টুথ
কম পাল্লার সেট ব্যবহার করে টেলিফোন বা দূরবর্তী মাইক্রোফোনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এই প্রযুক্তি।
আলোর ব্যবহার
ঘরময় ফ্লুরেসেন্ট আলো ব্যবহার করে শ্রুতিসহায়ক একটি ব্যবস্থা সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে।
উপসংহার
সমাজে প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা সরলরৈখিক নয়। প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরও জন-অংশগ্রহণ অনেক সময় ব্যাপকতা পায় না।
যেমন বলা যায়, টেলিভিশনে সাব-টাইটেল ব্যবহারের ব্যবস্থার কথা। নতুন উদ্ভাবনগুলোও অধিকতর গবেষণার পর গ্রাহকপ্রিয় হয়ে উঠবে কি না, তা বলে দেওয়া যায় না।
মিরাজ আহমেদ
মেডিকেল অফিসার, নাক-কান-গলা বিভাগ, মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা
মডেল: সামিয়া
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৫, ২০১২
Leave a Reply