বাঙালির প্রধান খাবার ভাত। এটি কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার। শর্করাজাতীয় খাবার (যেমন—ভাত, আলু, রুটি) দেহে শক্তি জোগায়, মাংসপেশিকে করে বলিষ্ঠ এবং রোগ-জীবাণুর সঙ্গে বাড়ায় দূরত্ব। সাদা চালের তুলনায় গ্রামের ঢেঁকিছাঁটা চালে পুষ্টি বেশি। তাই পাওয়া গেলে ঢেঁকিছাঁটা লালচে চালের ভাত খান। কারণ, লালচে চাল ভিটামিন ‘বি’-তে ভরপুর।
ভিটামিন ‘বি’ বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করে এবং দেহের স্নায়ুগুলোকে করে শক্তিশালী। বয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরার স্নায়ুগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। পরিণামে তৈরি হয় নানা রকমের জটিলতা। এই অসুখটির নাম অ্যালজাইমারস। এ সমস্যার অপর নাম হলো স্নায়ুবৈকল্য। গবেষণা করে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভিটামিন ‘বি’ খায়, তাদের স্নায়ু দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে কম।
ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ট্রাই-গ্লিসারাইড নামক উপাদান, যা দেহের ওজন বাড়ায়, শরীরকে করে সচল। ক্যালরি বা শক্তি রয়েছে ভাতে। এই ক্যালরি মানুষকে দেয় দ্বিগুণ পরিমাণে কাজ করার ক্ষমতা।
ভাতের শর্করা দেহের প্রতিটি রক্তকণিকাকে করে অধিক কার্যকর। তবে যাদের বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেশি, তাদের জন্য অল্প পরিমাণে ভাত প্রযোজ্য।
ভাত রক্তে বাড়ায় চিনির পরিমাণ, যা ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। যাঁরা দৈহিক পরিশ্রম করেন, তাঁদের জন্য ভাত উপযুক্ত খাবার। তবে এ ক্ষেত্রে ভাতের সঙ্গে অন্যান্য খাবারের সাম্যাবস্থা থাকতে হবে। অর্থাৎ, ভাতের তুলনায় সবজি ও আমিষের পরিমাণ (মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, যেকোনো সবজির বিচি) বেশি থাকা উচিত। আর ভাতের মাড় ফেলে না দিয়ে মাড়সহ ভাত খান। এতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে।
ডা. ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ০৭, ২০১২
Leave a Reply