স্বল্প পরিচিত রোগ: কারপাল টানেল সিনড্রোম
হাতের কবজিতে ব্যথা নিয়ে রোগীএলেন। বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনীতে ব্যথাটা বেশি অনুভূত হয়। কখনো কখনো বৃদ্ধাঙ্গুলির পাশ ঘেঁষে খানিকটা ওপরের দিকেও ব্যথা হয়। পাশাপাশি রাতে হাত অবশ হয়ে আসে। অনেক সময় অস্থির অনুভূতির কারণে রাতে ঘুম ভেঙে যায়। চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখলেন বৃদ্ধাঙ্গুল কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। এসব দেখেশুনে তিনি বললেন, এ রোগের নাম কারপাল টানেল সিনড্রোম।
কেন এমন হয়?
হাইপোথাইরয়েডিজম, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গাউট, নিয়মিত মদ্যপান, ওজন বাড়া, গর্ভধারণ করা প্রভৃতি কারণের জন্য এই কারপাল টানেল ছোট হয়ে যায়। আবার কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াও হতে পারে। মধ্যবর্তী বয়সের মহিলারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কবজির হাড় ভেঙে সঠিকভাবে জোড়া না লাগলে বা দীর্ঘদিন প্লাস্টার করে রাখার ফলে কারপাল টানেলে চাপ পড়তে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখা যায়?
এ রোগের কারণে বুড়ো আঙুল থেকে মধ্যমা পর্যন্ত তিন আঙুলে শিরশির ও অবশ অনুভূতি, সঙ্গে ব্যথা থাকতে পারে। সাধারণত বুড়ো আঙুল ও মাঝের তিন আঙুল আক্রান্ত হলেও কনিষ্ঠ আঙুল কখনো আক্রান্ত হয় না। রাতের বেলায় রক্ত সঞ্চালন কম হওয়ার কারণে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। বুড়ো আঙুলের গোড়ার মাংসপেশি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় ও আঙুল দুর্বল হয়ে যায়, কাজ করলে ব্যথা বাড়ে। হাত মৃদু ঝাঁকালে বা ঝুলিয়ে রাখলে একটু আরাম অনুভব হয়। ব্যথা কবজি থেকে ওপরের দিকে উঠতে পারে।
পরীক্ষা: রোগ নির্ণয়ের জন্য নার্ভ কনডাকশন ভেলোসিটি বা নেসিভি পরীক্ষাটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নার্ভ অনেকটা ইলেকট্রিক তারের মতো, এর ভেতর দিয়ে তথ্যগুলো বৈদ্যুতিক তরঙ্গের মতো প্রবাহিত হয়।
ইলেকট্রিক মিস্ত্রিরা যন্ত্রপাতির বিদ্যুৎ চলাচলের গতি মাপতে যেমন মিটার ব্যবহার করেন, নার্ভ কনডাকশন টেস্টের মাধ্যমে নার্ভের ভেতরের বিদ্যুৎ চলাচলের গতি ও পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।
এরপর আসে ইএমজি বা ইলেকট্রোমায়োগ্রাম পরীক্ষা, যার মাধ্যমে মাংসপেশির নার্ভ সাপ্লাই সম্পর্কে বোঝা যায়। কবজি ও নার্ভের গঠন বোঝার জন্য কবজির সিটি স্ক্যান বা এমআরআই পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ ছাড়া সহায়ক পরীক্ষা হিসেবে আক্রান্ত হাতের এক্স-রে, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের পরীক্ষা অপরিহার্য।
চিকিৎসা
মৃদু ক্ষেত্রে প্রথম দিকে কবজির বিশ্রাম, যার জন্য কবজির ওপরে চাপ পড়ে এমন সব ধরনের কাজকর্ম পরিহার করা উচিত। যেমন:
কাপড় ধোয়া
টিউবওয়েল চাপা
একটানা লেখালেখি না করা
দা, কোদাল বা কুড়াল দিয়ে কিছু কাটাকাটি করা
ড্রিল মেশিন ব্যবহার করা
হাতে ভারী ওজন বহন করা
রাতে সিপ্রন্ট বেঁধে ঘুমানো বেশ কার্যকরী।
সঙ্গে ব্যথার ওষুধ এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন—সব মিলিয়ে কিছুটা সুফল দেয়। একটু বেশি ব্যথা হলে অনেকে সরাসরি অবশের ইনজেকশন দিয়ে থাকেন। এতে সাময়িক উপকার পাওয়া যেতে পারে, আবার ইনজেকশন নার্ভের মধ্যে ঢুকে গেলে হাত আরও অবশ হয়ে যেতে পারে।
এসব চিকিৎসায় আশানুরূপ ফল পাওয়া না গেলে অপারেশন করা যায়।
মূলত এ চিকিৎসায় অপারেশন কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং ফলাফল অত্যন্ত আশানুরূপ। অপারেশনের পরে ব্যথা সঙ্গে সঙ্গেই কমে যায়। অবশ ভাব কয়েক দিন পরে কমে আর মাংসপেশির সবলতা কয়েক সপ্তাহ পরে ফিরে আসে।
আধুনিক সময়ে এন্ডোসকোপির মাধ্যমে কম কাটাছেঁড়া করে এ অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কবজির একটু নিচের দিকে ছোট ছিদ্র করেই অপারেশন করা হয়, যেখানে স্থানীয়ভাবে অবশ করে অপারেশন করা হয়, এমনকি রোগীকে ভর্তি রাখার প্রয়োজন হয় না।
সুদিপ্ত কুমার মুখার্জী
নিউরোসার্জন, ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট আব নিউরোসায়েন্স, শেরেবাংলা নগর, আগারগাঁও, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৯, ২০১২
Cj
ভুল ব্যায়ামের জন্য বুকের এক দিকে ছোটবড় সমস্যা হয় কী করা যায়
Bangla Health
আবার সঠিক ভাবে ব্যায়াম করুন। ঠিক হয়ে যাবে।
fuck
ছাতির একপাশ ভুল ব্যায়ামের ফলে বড় হওয়া
c
Beyamer fole Buker badik barle ki korbo
Bangla Health
সঠিক ভাবে ব্যায়াম হচ্ছে না। দুদিকেই সমান চাপ পড়ার কথা।