ব্যথা বা পেইন ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাবিজ্ঞানে ৩৪তম বিশেষায়িত বিষয় বা স্পেশালিটি হিসেবে পরিগণিত। উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশেও পেইন ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি স্বতন্ত্র্যভাবে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। আমাদের দেশে এখনো এ বিষয়টি চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা যেমন—মেডিসিন, সার্জারি, গাইনোকোলজি, অ্যানেসথেসিওলজি ইত্যাদির মতো ব্যাপক আকারে না এলেও পেইন ক্লিনিক গঠনের মাধ্যমে ব্যথার রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমাদের দেশে প্রায় সব বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাই ব্যথার রোগীদের চিকিৎসা করে থাকেন। তাঁরা সাধারণত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় স্টেপ লেডার নামে যে নির্দেশনা আছে, সে অনুযায়ী এসব রোগীর চিকিৎসা করে থাকেন। যা দিয়ে কোনো কোনো ধরনের ব্যথা নিরাময় হয় না অথবা ব্যথা সহনীয় পর্যায়ে আসে না। এই গ্রুপের রোগীরা ব্যথার মারাত্মক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন এবং তাঁরা নিরুপায় হয়ে এক বিশেষজ্ঞ থেকে অন্য বিশেষজ্ঞের কাছে আশ্রয় খুঁজতে থাকেন।
বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগীদের নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েন। অনেকে বিব্রতবোধ করে অন্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য রোগীদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেসব দেশে পেইন ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিটি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেসব দেশে এসব রোগীদের ব্যথা সহ্য করা ছাড়া উপায় থাকে না।
এঁদের মধ্যে যাঁরা বিত্তবান, তাঁরা অনেকেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান; যেখানে এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও উন্নত যন্ত্রপাতি আছে।
আমাদের দেশে যে এসব রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে না, তা পুরোপুরি ঠিক নয়।
কয়েকটি হাসপাতালে পেইন ক্লিনিকের মাধ্যমে তাঁদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এসব কেন্দ্র থেকে যে সেবা দেওয়া হচ্ছে তা অপ্রতুল ও সেকেলে।
অনেক রোগীর ক্ষেত্রে ইন্টারভেনশনাল পেইন ম্যানেজমেন্টের আধুনিক চিকিৎসা-পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর, যা এসব সেন্টার পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করে না। তাই আমাদের দেশের ব্যথার রোগীদের সুচিকিৎসার জন্য উন্নত বিশ্বের আলোকে ইন্টারভেনশনাল পেইন স্পেশালিস্ট তৈরি ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ অতি জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাওছার সরদার
সহযোগী অধ্যাপক ও পেইন কনসালট্যান্ট, অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগ, বারডেম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৮, ২০১২
Leave a Reply