বেশিরভাগ শিশুই বেড়ে ওঠার সময় কমপক্ষে একবার হলেও মধ্যকর্ণের ইনফেকশনে ভুগে থাকে। সাধারণত ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এ ধরনের ইনফেকশন বেশি হয়ে থাকে এবং সেই সাথে ওই শিশুদের ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হতে দেখা যায়। টেক্সাস চিলড্রেনস হাসাপাতালের ওটোল্যারিংগোলজি বিভাগের প্রধান ডা.
এলেন ফ্রাইডম্যান বলেন, ‘যখন কোনো শিশুর ঠাণ্ডা লাগে তখন মধ্যকর্ণের ইউস্টেশিয়ান টিউব ফুলে যেতে পারে এবং পরে বন্ধও হয়ে যায়। ফলে জীবাণু এবং তরল পদার্থ মধ্যকর্ণে জমা হয়ে ব্যথাযুক্ত ইনফেকশনের সৃষ্টি করতে পারে।’
এসব ক্ষেত্রে শুধু একজন ডাক্তারই সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারবেন আপনার শিশুর কানে ইনফেকশন হয়েছে কি না। শিশুদের কানে ইনফেকশন হলে যে লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হলো শিশু হাত দিয়ে কান রগড়াতে বা চুলকাতে থাকে, অস্বস্তিবোধ করে এবং কান খামচাতে থাকে। এ ছাড়া কান থেকে পুঁজ বের হওয়া, কান ব্যথা করা, কানে কম শোনা এবং জ্বর থাকতে পারে। বেশি ছোট শিশুরা এ সময় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি কাঁদে।
যদি আপনার শিশুর কানে ইনফেকশন হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তার সাধারণত এন্টিবায়োটিকের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন। এটা খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ যে, ওষুধের কোর্স সমাপ্ত হওয়ার আগেই যদি শিশুটি সুস্থবোধ করতে থাকে তার পরও ওষুধের কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে। না হলে ইনফেকশন সৃষ্টিকারী জীবাণু ওষুধটির বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে এবং তখন শিশুটির কানে ইনফেকশন হওয়ার অশঙ্কাও বেড়ে যায়।
শিশুর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে
নাক দিয়ে অনেক কারণেই রক্ত পড়তে পারে। তার মধ্যে কিছু কারণ হচ্ছে নাকে আঘাত পাওয়া, অত্যধিক নাক ঘষা অথবা তীব্র গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় অনেকক্ষণ অবস্থান করা। নাক দিয়ে হঠাৎ করে রক্ত পড়তে শুরম্ন করলে অস্থির হবেন না। রক্তপাত বন্ধ করতে নাসারন্ধ্রের ঠিক উপরেই বৃদ্ধাঙ্গুল এবং তর্জনি দিয়ে জোরে চেপে ধরম্নন। শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের মাথাকে সামনের দিকে এমনভাবে ঝুঁকিয়ে দিন যেন থুতনি বুকের সাথে লেগে থাকে। এবার একটি রম্নমালজাতীয় পরিষ্কার কাপড় ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে নাকের ওপর চেপে ধরম্নন। টেক্সাস চিলড্রেনস হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জ্যান দ্রম্নৎজ বলেন, ‘যদি অত্যধিক রক্তপাত হয় অথবা পনেরো থেকে বিশ মিনিটের মধ্যেও রক্তপাত বন্ধ করা না যায় তাহলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞকে ডাকাই উত্তম হবে। যদি প্রায়ই আপনার শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়ে অথবা রক্তক্ষরণের জন্য কোনো উপসর্গ যেমন ত্বকের নিচে রক্ত জমাটবাঁধা অথবা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি লক্ষ্য করেন তাহলে অতি সত্বর আপনার শিশু ডাক্তারকে তা অবহিত করম্নন।
কানের উপরের অংশ ফোঁড়ানো নিরাপদ নয়
আজকাল কানে একাধিক ফুটো না করলে যেন ফ্যাশনটা জমে না। তরম্নণীরা খুব আগ্রহ করেই কানের উপরের অংশে দু-তিনটা ছিদ্র করে তাতে বাহারি অলঙ্কার বসিয়ে দেন। কিন্তু তারা অনেকেই হয়তো জানেন না যে, কানের উপরের অংশ ফোঁড়ানো সবসময় নিরাপদ নয়। কারণ কানের উপরের অংশটা হলো তরম্নণাস্থি দিয়ে তৈরি। আর এই তরম্নণাস্থির নিজস্ব কোনো রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী নেই। সুতরাং এই তরম্নণাস্থি কোনো প্রদাহ অথবা ইনফেকশন হলে তা খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং সহজে ভালো হয় না। এমনকি রক্তনালী নেই বলে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিকও পৌঁছায় না। কিন্তু কানের লতিতে এসব সমস্যা নেই। সুতরাং কান ফোঁড়ানোর জন্য কানের লতিকেই বেছে নেয়া ভালো। ফ্যাশন চর্চার নাম করে কানের উপরের অংশ না ফোঁড়ানোই সমীচীন।
————————
ডা. আফরিন এলিজা
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ৬ এপ্রিল ২০০৮
Kanchan Sharma
কানে কম শোনা রোগের স্থায়ী সমাধান কী।
Bangla Health
অপারেশনে কাজ না হলে হেয়ারিং এইড ব্যবহার করতে হবে।