প্রকৃতিতে এসেছে আমড়ার মৌসুম। আমাদের দেশে দুই ধরনের আমড়া পাওয়া যায়। দুই রকমের আমড়াতেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। আমড়ার ভিটামিন সি বর্ষার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে কিছু রোগজীবাণু বাতাসে ভেসে বেড়ায়, নোংরা পানিতে বাসা বাঁধে—এমন জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। দাঁতের মাড়ি শক্ত করে, দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত, পুঁজ, রক্তরস বের হওয়া প্রতিরোধ করে আমড়া। এর ভেতরের অংশের চেয়ে বাইরের খোসাতে রয়েছে বেশি ভিটামিন সি আর ফাইবার বা আঁশ, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী। আর আঁশ-জাতীয় খাবার পাকস্থলী (স্টমাক), ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদন্ত্রর (পেটের ভেতরের অংশবিশেষ) জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। তাই খোসাসহ আমড়া খাওয়াটাই উত্তম। তবে খোসা অতিরিক্ত টক আর সবাই হজম করতে পারে না, তাই দুর্বল হজমশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের আমড়ার খোসা পরিহার করাই শ্রেয়। কারণ, আমড়ার খোসা অতিরিক্ত টক। বাঁকা দাঁত রয়েছে, এমন ব্যক্তি খোসাসহ আমড়া কামড়ের পরিবর্তে চাকু দিয়ে কেটে খান। কারণ, খোসার শক্ত আবরণ বাঁকা দাঁতের ব্যক্তিদের মাড়িতে আঘাত করবে বেশি, যা উপকারের পরিবর্তে বয়ে আনবে অপকার।
চর্বি বা কোলেস্টেরল কমিয়ে, হূৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে আমড়া। ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সালাদের বাটিতে অনায়াসে স্থান পাবে আমড়া। এতে চিনির পরিমাণ খুব কম। তাই উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার), ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারেন নিশ্চিন্তে। তবে পাকা আমড়া ডায়াবেটিসের রোগীরা পরিহার করুন। কারণ, পাকা আমড়ায় সুগারের পরিমাণ কাঁচার তুলনায় বেশি থাকে।
ডা. ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২৫, ২০১২
Leave a Reply