যাঁরা একটু আদর পেতে, প্রশ্রয় পেতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য ম্যাসাজ একটি ট্রিট, একটি দাওয়াই বটে প্রকারান্তরে। শুধু তা-ই নয়, আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, এর রয়েছে নানা রকমের স্পষ্ট ও অনুভবনীয় হিতকরী ফল।
কয়েক বছরের কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ম্যাসাজ থেরাপি স্তন ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাদের দেহ প্রতিরোধ ক্ষমতা উজ্জীবিত করে, হাঁপানি আক্রান্ত শিশুদের উপসর্গ অনেক লাঘব করে এবং কার্পেল টানেল সিনড্রোম রোগীদের কবজির শক্তি বাড়ায়। অপরিণত বাচ্চাদের ম্যাসাজ দিলে তাদের ওজন বাড়ার কাজে বেশ সহায়ক হয়।
ম্যাসাজের পর দেহে-মনে যে শিথিলতা ও ভালো লাগার অনুভূতি হয়, একে ছাপিয়েও পাওয়া যায় হিতকরী ফল। আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানস ও আমেরিকান পেন সোসাইটি তাদের ২০০৭ সালে প্রকাশিত গাইড লাইনে ‘লো-ব্যাক পেন’-এর জন্য ম্যাসাজকে একটি পরামর্শ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
নতুন গবেষণায় এ-ও জানা যাচ্ছে, ম্যাসাজের পর শরীরে কী হয়। ম্যাসাজ কীভাবে কাজ করে এ নিয়ে নানা তত্ত্ব কথা চালু রয়েছে অনেক দিন ধরে—বিষমুক্ত করা থেকে শুরু করে রক্তসংবহন উন্নত করা পর্যন্ত। এগুলোর পক্ষে প্রমাণ নেই, তেমন কল্পকথা হয়তো বা। তবে ইদানীং একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ৪৫ মিনিট ম্যাজাস সেশনের পর রক্তে কমে আসে স্ট্রেস হরমোন কটিসোলমান, প্রদাহর সঙ্গে সম্পর্কিত সাইটোকিন প্রোটিন মান সামান্য কমে আসে এবং রোগপ্রতিরোধী শ্বেতকণিকাগুলো হয় উজ্জীবিত। ম্যাসাজ নিয়ে বিজ্ঞানীমহলে কৌতূহলের নেই। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ আমেরিকা ম্যাসাজ গবেষণায় অর্থের বড় অনুদান দিয়েছে, একটি অলাভজনক সংস্থা ম্যাসাজ থেরাপি ফাউন্ডেশন, যারা ম্যাসাজ গবেষণায় অনুদান দেয়, সংস্থাটি তাদের প্রথম সম্মেলন করেছিল ২০০৫ সালে। তৃতীয় সম্মেলন হবে বোস্টনে আগামী বছর।
২০০২ সালে ৩১ হাজার ৪৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক লোক ও ২০০৭ সালে ২৩ হাজার ৩৯৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০২ সালে ৫ শতাংশ লোক ও ২০০৭ সালে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক লোক ম্যাসাজ থেরাপি ব্যবহার করেছেন। এনসিসিএএমের ডেপুটি ডিরেক্টর জাক কিসেন বলেন, ব্যথার মতো জিনিসের চিকিৎসা হিসেবে প্রচলিত চিকিৎসা যেখানে ফলপ্রসূ হয় না, সেখানে ম্যাসাজের ভূমিকা বেশ ভালো।
কিরোপ্রাকটাররাও ম্যাসাজ থেরাপি ব্যবহার করেন। ম্যাসাজ থেরাপিস্টরা এক ঘণ্টা সেশনের জন্য নেন ৫৯ আমেরিকান ডলার। বিষয়টি জানিয়েছে, আমেরিকান ম্যাসাজ থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন।
সুইডিশ ম্যাসাজ বা পুরো শরীরের ম্যাসাজ আমেরিকায় বেশি প্রচলিত, সঙ্গে তেল বা লোশন প্রয়োগ করা হয়—এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে বেশি।
বিভিন্ন ধরনের স্ট্রোকে ব্যবহূত হয় যেমন effleurage (ত্বকের পর হাতের ধীরে ধীরে চালনা, (gliding movement), (petrissage) ময়াদা মাখা ও ঠাসার মতো চাপ দিয়ে ম্যাজাস, (tapolement) ছন্দময় টোকা দেওয়া। আরেকটি সচরাচর ম্যাসাজ হলো, গভীর টিস্যুর ম্যাসাজ। যেসব পেশিতে সমস্যা, সেগুলো লক্ষ করে ম্যাসাজ যেমন, ‘একুপ্রেসার’ ‘ট্রিগার পয়েন্ট ওয়ার্ক’ (পেশির গ্রন্থিগুলোর ম্যাসাজ), ডিপ ট্রান্সফার্স ফিকশন বেশ কৌশলী ম্যাসাজ পেশির জন্য। ওস্টিওআথ্রাইটিসে ইতিমধ্যে ম্যাসাজ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আক্রাইভস অব ইন্টারন্যাল মেডিসিনে ২০০৬ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, অস্টিওআথ্রাইটিস রোগীদের চার হপ্তা সপ্তাহে দুবার করে এবং আর চার হপ্তা সপ্তাহে একবার করে সুইডিশ ম্যাসাজ দিলে অনেক লাভ হয়।
সুস্থ লোকের মধ্যে ম্যাসাজ প্রয়োগে কী হয়, তা-ও গবেষণা করা হচ্ছে। ১০ মিনিট ম্যাসাজে, ব্যায়ামের পর পেশি বেশ সুস্থ, সতেজ হয়। হ্রস্বকালের ম্যাসাজ পেশিতে শক্তির জোগান দেয়।
৪৫ মিনিট সুইডিশ ম্যাসাজ (হালকা) চাপ ও আক্রমণাত্মক আচরণে উৎসাহিত হরমোন অ্যামিনিন ডেসোপ্রেসিন মান কমে, স্ট্রেসহরমোন কটিসোলমান কমে, কমে সাইটোকিন প্রোটিন।
ম্যাসাজ সত্যি স্বাস্থ্যকুশলে ফলপ্রদ। সপ্তাহে একদিন ম্যাসাজ নিলে বেশ ভালো থাকা যাবে, এই আদব ও প্রশ্রয় হিতকরী।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস,
বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১১, ২০১২
shanto
ম্যাসাজে কি ধরনের লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা উচিত। ম্যাসাজের পদ্ধতি নিয়ে অারো বিস্তারিত পোষ্ট করার জন্য অনুরোধ রইল।
Bangla Health
করতে পারেন।
hafsa
sohobaser pore mutrotholite jole. uttor janaben
Bangla Health
বীর্যপাত আটকে থাকলে অনেক সময় ওখানে ব্যথা হয়। তেমন কিছু না শরীর যাতে কড়া না হয়ে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ঘুম এবং প্রচুর পানি পান আবশ্যক। এতেও কাজ না হলে ডাক্তার দেখাবেন।