দুর্ঘটনা ঘটে কখনো কখনো। সংকটে বিহ্বল হতে নেই। মোকাবিলা করা জরুরি। উত্তরণের জন্য জেনে নিন ভালো কিছু উপায়।
ধরুন, এক টুকরো ভাঙা কাচে বাচ্চার পা কেটেছে, রক্তক্ষরণ হচ্ছে খুব। জরুরি বিভাগে তো যাবেনই, এর আগে কী করবেন?
জীবাণুমুক্ত গজ বা পুরু টাওয়েল দিয়ে ক্ষতস্থানে জোরে চেপে ধরা ভালো। টুর্নিকেট বাঁধা ঠিক নয়। এতে দেহটিস্যুর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। ক্ষত এলাকা উঁচুতে, হূদ্যন্ত্রের সীমার ওপর তুলে রাখা ভালো। ফলে রক্তপ্রবাহ কম হবে। ড্রেসিং চুয়ে রক্ত পড়লে আরও গজ বা টাওয়েল চাপা দিন, ভেজা গজ সরাবেন না। কারণ, এতে রক্তজমাট ব্যাহত হতে পারে। তাকে দ্রুত নিয়ে যান জরুরি বিভাগে।
ফুটন্ত স্যুপের পাত্র স্টোভ থেকে নামানোর সময় পড়ে শাশুড়ির হাত ঝলসে গেছে। রক্তলাল ত্বক, ফোসকা পড়তে শুরু করেছে, কামিজের হাতা লেগে রয়েছে ত্বকে, কী করা উচিত? হাতে দিতে হবে শীতল জলের ধারা, হাত তুলতে হবে উঁচুতে, নিতে হবে জরুরি বিভাগে। ফোসকা পড়া মানে দগ্ধ হয়েছে দ্বিতীয় মাত্রা পর্যন্ত (Second degree burn)।
প্রথম মাত্রা দগ্ধ হওয়ার (first degree burn) ক্ষেত্রে উপত্বকের (Epiderms) ক্ষতি হয়। ঘরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে চলে, কিন্তু আরও গুরুতর দগ্ধ হলে জরুরি চিকিৎসা দরকার হয়। ত্বকে কাপড় সেঁটে থাকলে টেনে তোলা উচিত নয়, ফোসকা গলাবেন না। এ কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বরং দগ্ধ স্থানে ঠান্ডা জলের ধারা দিন বা শীতল জীবাণুমুক্ত পট্টি এবং হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্লাইউড কাটার সময় বৈদ্যুতিক করাতে আঙুল কাটা পড়েছে। কী করা?
আঙুলটি ভেজা গজে মুড়ে রাখতে হবে প্লাস্টিক ব্যাগে এবং ব্যাগ রাখতে হবে বরফে। কাটা আঙুল এবং আহত ব্যক্তিকে নিয়ে দ্রুত যেতে হবে হাসপাতালে।
প্রথমে ক্ষতস্থান চেপে ধরতে হবে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য। এরপর ধুলা-ময়লা পরিষ্কারের জন্য কাটা আঙুল বিশুদ্ধ জলে ধুতে হবে, রাখতে হবে প্লাস্টিক ব্যাগে মুখ বন্ধ করে। ব্যাগ রাখতে হবে বরফে বা বরফজলে। বরফজলে ডোবানো ব্যাগ এবং আহত ব্যক্তিকে নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে।
১০ বছরের বাচ্চাটি সামনের উঠানে হোঁচট খেয়ে পড়ে সামনের একটি দাঁত খুলে পড়ে গেছে। কী করা উচিত?
দাঁতটি পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে এক গ্লাস লবণজল বা দুধে ডুবিয়ে রেখে অবিলম্বে যেতে হবে ডেনটিস্টের কাছে বা জরুরি বিভাগে। মাড়িসংলগ্ন দাঁতের অংশ, যাকে আমরা ক্রাউন বা মুকুট বলি, সে অংশ ধরে দাঁতটি ভালো করে খুব সাবধানে ধুতে হবে। বেশি ঘষামাজা করা যাবে না। এতে দন্তমূলের ক্ষতি হতে পারে। এরপর চটজলদি ডেন্টিস্টের কাছে যান।
দুর্ঘটনাক্রমে কারও হাতের ভেতর পেরেক ঠুকে দিয়েছে। কী করা?
পেরেক টানাটানি করা ঠিক নয়। পেরেকটি সেভাবে রেখে হাত পরিষ্কার ড্রেসিং বা গজ দিয়ে মুড়ে জরুরি বিভাগে নিতে হবে চটজলদি।
পেরেক ঠোকা অবস্থায় দেখে আহত ব্যক্তি ভয় পেলেও পেরেক টেনে তোলা ঠিক নয়। এ কারণে বেশি ক্ষতি হতে পারে। বরং গজ দিয়ে পেরেকের চারপাশের এলাকা মুড়ে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেওয়া ভালো।
প্রতিবেশী কাচের বয়াম বা পাত্র হাত থেকে ফেলে দিয়েছেন। খুব ছোট এক টুকরো কাচ উড়ে এসে চোখে পড়েছে। কী করা?
কাচটি থাকুক সেখানে, নাড়ানো ঠিক নয়।
অবশ্য চোখের ওপর কাচ ভাসতে থাকলে এক কাপ জলে চোখ ডুবিয়ে ঘোরালে এবং লবণজল বা জল দিয়ে ধুলে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু কাচ বিঁধে গেছে মনে হলে, তা টেনে তোলা ঠিক হবে না। চোখ ঘষা বা কচলানো ঠিক নয়। চাপও দেবেন না। দ্রুত নিতে হবে জরুরি বিভাগে।
ঘরে বাচ্চা পড়ে গেছে, ছিলে গেছে দুটো হাঁটু।
ক্ষতস্থানে বিশুদ্ধ জল দিয়ে ধুয়ে ময়লা পরিষ্কার করে দিতে হবে অ্যান্টিবায়োটিক মলম ও ব্যান্ডেজ।
সামান্য রক্তক্ষরণ হলে চাপ প্রয়োগ করে প্রয়োজনে তা বন্ধ করা যায়। সামান্য রক্তপাত বন্ধ হয় আপনা-আপনি। ময়লা পরিষ্কার করে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢাকতে হবে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৬, ২০১২
juwel
মোটা হতে গেলে কি করতে হবে? দয়া করে বলবেন?
Bangla Health
ওজন বাড়ানোর উপায় নিয়ে এই পোস্টটি দেখুন।
Soukat
protidin roson-er shate lebo kaji khele ki kothi hobe?Sir taratari uttar dile upakrito hobo…
Bangla Health
না, ক্ষতি হবে না।
SM
possrab oporiskar dur korte ki korte pari?
Bangla Health
বেশি বেশি পানি পান করুন। আর রাত জাগবেন না।
Azharul islam
আমার ছোট বোনের বয়স ৯বছর। তার সমস্যা হল কানের ভিতরে চুলকানি সহ ব্যাথা হয় কিন্তু পূঁজ হয় না, ওরাসিন-কে খেলে ৭-৮দিনে ভাল হয়ে যায়। কিছুদিন পর আবার হয়। তার আর একটি সমস্যা হল মাঝে মাঝে বাম হাঁটুতে ব্যাথা হয় যা ৩০মিনিটের মত স্থায়ি হয়, এই সময় সে কাঁদতে থাকে এবং হাঁটুতে টিপতে থাকে।
কী ব্যবস্থা নিলে স্থায়ি সমাধান পাওয়া যাবে জানালে উপকৃত হতাম।
Bangla Health
জ্বর-ঠাণ্ডা থেকে সতর্ক থাকবেন। হাঁটুতে কি আগে কখনও কোন আঘাতজনিত কারণে ব্যথা পেয়েছিল?
ঘন ঘন এমন হলে ডাক্তার দেখিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।