বীথি (ছদ্মনাম), বয়স ২১ বছর। কিছুদিন থেকে লক্ষ করছেন, তাঁর ডান দিকের কুঁচকির কাছের অংশ ফুলে ওঠে। হাঁটাহাঁটি করলে ভালো বোঝা যায়, শুয়ে পড়লে আর থাকে না। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও আস্তে আস্তে আকারে বড় হচ্ছে দেখে তিনি ভয় পেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, তাঁর হার্নিয়া হয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। কেননা, বীথি ও বীথির পরিবারের সবার ধারণা ছিল, হার্নিয়া শুধু ছেলেদের হয়। ধারণাটি কিন্তু সত্য নয়, মেয়েদেরও হার্নিয়া হতে পারে।
শরীরের ভেতরের কোনো অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ যদি আবরণকারী পর্দা ভেদ করে বাইরে বের হয়ে আসে, তবে হার্নিয়া দেখা দেয়। যেকোনো স্বাস্থ্যসমস্যা, যা পেটের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি করে, তার ফলেই হার্নিয়া হয়। দীর্ঘদিনের কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাব ত্যাগে বাধাগ্রস্ততা, পেটের কোনো ক্যানসার ইত্যাদি হার্নিয়ার কারণ। অতিরিক্ত মেদ, সন্তানধারণ ইত্যাদি কারণেও পেটের মাংসপেশিতে টান পড়ে, যা হার্নিয়ার কারণ হতে পারে। হার্নিয়া আসলে একটা থলির মতো, যার ভেতরে অন্য কোনো অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ থাকে। থলির আবার আবরণকারী পর্দাও থাকে। অন্ত্রনালি, ওমেন্টাম বা অন্ত্রনালির আবরণ, মূত্রথলি, ডিম্বাশয়, ডিম্বনালি ইত্যাদি অঙ্গ হার্নিয়ার থলিতে থাকতে পারে।
হার্নিয়া নানা রকমের হয়। শরীরের নানা স্থানে হতে পারে। প্রধানত তলপেটে হলেও কুঁচকির কাছে, পেটের ওপরের অংশে, নাভির চারপাশে হার্নিয়া দেখা দেয়। অস্ত্রোপচারের পর অনেক সময় হার্নিয়া দেখা দেয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়।
প্রথমে ব্যথাহীন ফুলে ওঠা দিয়ে হার্নিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। কাশি দিলে বা হাঁটাহাঁটি করলে বাড়ে এবং শুয়ে পড়লে ঠিক হয়ে যায়। আস্তে আস্তে বাড়তে থাকলে তখন আর শুয়ে পড়লেও কমে না। অনেক সময় রোগী নিজেই হাত দিয়ে হার্নিয়ার অংশ পেটে ঢুকিয়ে দিতে পারেন। হার্নিয়া বেশি দিন থাকলে হঠাৎ ব্যথা, সে সঙ্গে বমি দেখা দিয়ে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি অন্ত্রনালির যে অংশ হার্নিয়ার থলিতে থাকে, তাতে পচন ধরে যেতে পারে।
হার্নিয়া নির্ণয়ের জন্য রোগীকে নিয়মানুযায়ী পরীক্ষা করাই বেশি জরুরি। হার্নিয়ার একমাত্র সফল চিকিৎসা অপারেশন। কোনো ওষুধে হার্নিয়া ভালো হয় না। হার্নিয়ার থলির মুখ বেঁধে বাড়তি অংশটুকু কেটে ফেলে দেওয়া হয়। শরীরের দুর্বল অংশ, যেদিক দিয়ে হানিয়ার থলি বের হয়ে আসে, তা মজবুত করে দেওয়া হয়। কখনো কখনো বিশেষ ধরনের জালি ব্যবহার করে বড় আকারের দুর্বল অংশ মজবুত করা হয়। এই অপারেশন দুভাবে করা যায়—পেট কেটে এবং পেট ফুটো করে, অর্থাৎ ল্যাপারোস্কপির সাহায্যে। শুরুতে সচেতন হলে অপারেশন সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আপনার সচেতনতাই আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
ইশরাত ফেরদৌসী
সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১১
daanaa
হার্নিয়া কোনো ওষুধে ভালো হয় না, কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে তলপেট ও কোমরের পেশীর শক্তি বর্ধক ব্যায়াম/আসন দ্বারা নিয়ন্ত্রনে রাখা য়ায়।
একটা আসনের নাম বলি যেটা খুব ভালো কাজ দেয় : উত্থানপদাসন।
Bangla Health
ধন্যবাদ আপনাকে।
Omar
আমার বাম দিকের মুত্র থলি তে সম্ভবত হার্নিয়া হয়েছে।অনেক ছোট থাকতে হয়েছিলো।এখন এটার সাইয একটা টেনিস বলের মত।আন্ডার ওয়ার পরতে ঝামেলা হয়।উচু হয়ে থাকে।আগে শুয়ে থাকলেই পেটের ভিতর চলে যেত এবং বের না হওয়া পর্যন্ত ব্যাথা করত।কিন্তু এখন আর ভিতরে ঢুকেনা।এখন আমার কি করা উচিত?অপারেশন করতে কত খরচ হতে পারে?
Bangla Health
আগে ডাক্তার দেখিয়ে নিন। তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করতে হবে।