নিজের প্রতি নম্র, সুশীল হওয়া উচিত।
আমরা বিশ্বমায়ের কোলে সন্তানেরা, আমরা এই গাছপালা, তারকার মতোই তো। গোলমেলে জটিল এই জীবনে মনের শান্তি চাই, আত্মার শান্তি চাই।
এত বছর জীবনের পেরিয়ে মনে হলো, কী করে ভালোবাসতে হয়, নিজের খেয়াল রাখতে হয়, তা না জেনেই বেঁচেছি।
গত বছর বেড়াতে গেলাম ঘরের থেকে বাইরে, নানা দেশে—ঘুরলাম, আবিষ্কার করলাম। আমি ও আমার জীবনসঙ্গী দুজনে ভাবলাম নতুন একটি ঘর চাই। শহর থেকে দূরে একটি গ্রামে অল্প একটুকু জায়গায় চারচালা ঘর। সামনে উঠান। পেছনে বাগান। সাজালাম বাড়িটা নতুন করে।
হাঁটা শুরু করলাম দুজনে মিলে। হেলথ ফিটনেস ক্লাবেও যোগ দিলাম। অ্যারোবিক ক্লাসও করি। যোগ দিয়েছি মেডিটেশন ক্লাবেও।
‘নিজের খেয়াল ভালোমতোই নিচ্ছি।’ নিজেকে বলি।
জীবন সুন্দর। কঠোর শ্রম করি। খেলি ইচ্ছামতো। ভালোই তো। জীবনের গল্প বলছি। কিন্তু সে গল্প এত সহজ নয়, উপকথার মতোও নয়।
জীবনে ঝড় রয়েছে কম না, সেই ঝড় শান্ত করার চেষ্টাও তো কম হয়নি। আত্মীয়স্বজন তাদের অনেকের বিয়োগব্যথা। স্থানান্তর। দুঃখকষ্ট।
মিলন, বিদায়—সদ্ভাব, মনোমালিন্য সবই হয়েছে।
মাঝেমধ্যে সুখের স্পর্শও পেয়েছি জীবনে। জীবন তো কেবল দুঃখের কাহিনি নয়, বেদনায় নীল গল্পও নয়।
খুব শোকে আহতও হয়েছি। আমি আবার যত দ্রুত সম্ভব ঘুরে দাঁড়িয়েছি। ফিরে এসেছি সন্ধ্যায় রমনা পার্কে, হাঁটার জন্য। ফিটন্যাস ক্লাবেও।
সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করি। আমি স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। আট গ্লাস জল পান করি। আট ঘণ্টা ঘুমাই। চাপকে মোকাবিলা করি। চেষ্টা করি। নিজের ঠিক খেয়াল রাখি। তবে বাইরে থেকে।
আমার ভেতরকে দেখভাল করি? স্থিতিস্থাপকতা আমার জীবনে আনতে চাই। নিজেকে প্রবোধ দিই, ঠিক আছি। ঠিক আছি।
আমার আবেগ, ইমোশনের খেয়াল আমি করি না। অচেতনভাবেই আমি মনকে বোঝাই, এসব নিয়ে পরে ভাবব। জীবনে তাই নানা জিনিস ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকেছে, যা সব সময় প্রত্যাশিত ছিল না।
খুঁতখুঁতে স্বভাবের আমি, সব কাজে নিখুঁত, নিপুণ হতে চাই।
আমার নিজের ভেতরের জগতের দেখভাল করার ব্যাপার ভুলেই গেছি। মানুষ, জীব, আসলে অদ্ভুত যদি আরও নিজেদের খাপ খাইয়ে নিই, মনে ক্ষত সৃষ্টি হলে শুকিয়ে যায়, আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে আমরা সক্ষম।
আমরা যদিও স্বীকার করি, পরিবর্তন, চ্যালেঞ্জ এবং ক্লেশ আমাদের জীবনকে আরও গভীর করে—আমাদের মনে করিয়ে দেয় দ্বিতীয়বারও সুযোগ আসে জীবনে—আমরা প্রত্যেকেই ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নিরাময়ের গুণে গুণান্বিত—তাই লক্ষণীয় কিছু ঘটে যায় জীবনে। ঘটতে পারে!
এই নতুন চেতনার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে ২০১১ সাল শেষ হলো আগামী বছর নতুনভাবে বাঁচার জন্য।
আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, প্রতিদিন আমি ঘুম থেকে উঠব, নিজেকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করে, ভেতর থেকে বাইরে নিজেকে পুষ্ট করে, জীবনের আমন্ত্রণ অবহেলা করি কী করে?
এ বছর।
পালিয়ে যাওয়া নয়, যুক্ত হব জীবনের সঙ্গে।
সকালের পাখি হব, প্রত্যেক সকালে উঠব, থাকবে প্রচুর সময় পড়ালেখা ও যোগব্যায়ামের জন্য। আর শশব্যস্ত হয়ে অফিসে যাওয়া, ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকা নয়।
যেসব ক্ষত গভীরে লুকানো এতে প্রলাপ বুলাব, শান্তি পাব। আমার যা অর্জন, ছোটখাটো সাফল্য, এ জন্য নিজের পিঠ নিজে চাপড়াব।
আমি ধীর হয়ে যাব? পাগলা ঘোড়ার পেছনে ছুটব আরও? আমি বুঝলাম, যে দুঃখবোধ আমি বয়ে চলেছি, তাকে আমি আলিঙ্গন করলাম। নিজের শরীরের খেয়াল করলাম, আমিষ প্রায় ছাড়লাম, নিরামিষে বেশি আসক্ত হলাম। মনোযোগী আহার (মাইন্ডফুলইটিং) চর্চা করতে থাকলাম।
অতীতের গল্প ভুলে ভবিষ্যতের দিকে আমি তাকাই। আমি সবকিছুকে ‘হ্যাঁ’ বলতে চাই না, যেসব দায়বদ্ধতা আমার মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তাদের প্রতি আমার দায় নেই আর।
আমার সহজাত প্রবৃত্তির অনুগামী আমি: ধ্যানচর্চার মধ্য দিয়ে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলি।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০১, ২০১২
Rafat
Thank you very much sir, ei article ta share korar jonno. Ar karor kotha jani na, article ta amar vetore onek poriborton ene dilo. Aj ei muhurto thek ami apnar kormokandogulok onusoron korar chesta korbo inshallah.
Bangla Health
শরীর ভালো তো মন ভালো। মন ভালো তো দুনিয়া ভালো।
সুস্থ্য থাকুন, ভালো থাকুন।
MITHUN
আমার বয়স ২০ এবং উচ্চতা ৫.২ ফুট। আমি আমার এই উচ্চতা নিয়ে খুব টেনশন করি । যখন আমি রাস্তা যাই এবং রাস্তা র লোকদের দেখি তখন মণে হয় আমি যদি ওদের মত লম্বা হতে পারতাম । আমি শুনেছি রিং করলে লাম্বা হওয়া যায় ।রিং করলে কি ৩-৪ ইঞ্চি লাম্বা হওয়া যাবে ?
আচ্ছা রিং ছাড়া লাম্বা হবার কোন উপায় আছে কি ?মানুস কত বছর পর্যন্ত লাম্বা হয়। জিম এবং রিং একসাথে করলে কনও আসুবিধা হবে। plz help me
Bangla Health
নির্দিষ্ট কোন সময় নেই, তবে ২১-২৩ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারেন। উচ্চতা নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নাই। আপনার চেয়েও অনেক ছোট মানুষ আছে। ব্যায়াম করতে পারেন। যে কোন ব্যায়ামই শরীরের জন্য উপকারী। উঠতি বয়সে সাঁতার একটা ভালো ব্যায়াম। তবে খাওয়া-দাওয়ার আর ঘুমের দিকেও নজর দিতে হবে।
joy
আমার বয়স ১৯ বছর উচ্চতা ৫ ফুট ৩, বুকের ছাতি ২৯ ইঞ্চি । আমার বয়সের সাথে শারীরিক বিকাশ সেই ভাবে হয় নি।
আমি খুব রোগা । আমি মেসে থেকে পড়াশুনা করি । থিক মত খাওয়া দাওয়া করতে পারিনা খেতে বসলে সম্পূর্ণ খেতে পারি না বমি চলে আসে । কি করব বুজতে পারছি না। আপনার পরামর্শ চাই।
Bangla Health
শরীর ঠিক রাখতে বিশেষ করে ওজন বাড়ানোর জন্য খাওয়ার কোন বিকল্প নাই। আপনি যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। আর খেতে বসলে সেটুকু পারেন সেটুকু খাবেন। অল্প অল্প করেই খাবেন। বাকিটা একটু পর আবার খাবেন। এভাবে ঘনঘন খেলে সমস্যা হবে না। খাওয়ার পরে একটু আদা বা একটা লবঙ্গ চিবুবেন। তাতে বমিভাব চলে যাবে।