মাথাধরা। আধকপালি। মিগ্রেন বলে জানি আমরা।
কী সেসব কারণ? মিগ্রেনের ঘোড়া টিপে যেসব তর্জনী, এদের চেনা চাই।
এমন মাথাধরার কারণ হতে পারে অফিসের বসও, যা কিছু স্ট্রেসকে উসকে দেয়।
তাই মানুষকে টেনশন-প্রবণ করে তোলে। রাগী বস হতে পারে টেনশনের কারণ।
এর কারণ স্পষ্ট নয়, কেমন করে তা ঘটে তাও স্পষ্ট নয়। মগজে স্নায়ুপথের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়? যেসব স্নায়ুপথ বেদনাবহন করে, এরা কি হয়ে পড়ে বেশি স্পর্শকাতর? মগজের মধ্যে পরিবর্তন এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত?
উষ্ণ আবহাওয়া। তাপমাত্রা যখন বাড়তে থাকে, তখন মিগ্রেন হওয়া বা প্রচণ্ড মাথাধরা হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় গবেষকেরা দেখেছেন, প্রতি ৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ, মানে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি হয় মিগ্রেনের ঝুঁকি। বৃষ্টির আগে আগে, পারদমান চাপ নেমে যাওয়া, মিগ্রেন নয় এমন মাথাধরা বাড়তে পারে।
কড়া সুগন্ধি। কড়া গন্ধ, এমনকি সুগন্ধ—অনেকের ক্ষেত্রে মিগ্রেন উসকে দেয়। কেন তা ঘটে তা বেশ অস্পষ্ট, মনে হয় সেই সুবাস উদ্দীপ্ত করে স্নায়ুতন্ত্র। দায়ী সব গন্ধ, সুগন্ধি হলো পেইন্ট, পারফিউম, কিছু কিছু পুষ্প।
কেশবন্ধনী ইত্যাদি। কী করে চুল বাঁধেন তা-ও কিন্তু মাথাধরার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। আঁটসাঁট পনিটেইল করোটির সংযোজনকলা টানটান করে দেয়: মাথা ধরে কখনো। হেডব্যান্ড, বিনুনি, খোঁপা, আঁটসাঁট হ্যাট—মাথাধরা ঘটাতে পারে।
ব্যায়াম, শরীরচর্চা। খুব উদ্যমী ব্যায়াম ঘটাতে পারে মাথাধরা। জগারস হেডেক হতে পারে। হতে পারে শারীরিক মিলন হেডেকও।
ত্রুটিপূর্ণ দেহভঙ্গি। খুব কঠোর শ্রম করে ঘেমে-নেয়ে উঠে মাথা ধরাতে হবে, তা নয়। কদাকার চলনভঙ্গি, ডেস্কে বসে মাথা-কাঁধ নুয়ে বসা—এসব মাথা ধরাতে পারে। দেহভঙ্গির ত্রুটি কত রকমই হতে পারে—কাঁধ ঝুঁকে থাকা, খুব নিচু বা খুব উঁচু মনিটরে অনেকক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা, কান ও কাঁধের মাঝখানে ফোন রেখে অনেকক্ষণ কথা বলা, টেনশন হেডেক বারবার হলে কর্মস্থলে দেহভঙ্গি, উপবেশন সব নজর করতে হবে।
পনির: অনেকের মিগ্রেন হয় পুরোনো পনির খেলে, যেমন ব্লুচিজ, সেডার, সুইস। হয়তো এর অন্তর্গত টাইরামিনের জন্য। পনির যত পুরোনো, টাইরামিন হয় তত বেশি।
রেডওয়াইন: রেডওয়াইন ও অন্যান্য অ্যালকোহল পানীয়তে আছে টাইরামিন। মদের অন্যান্য উপকরণও মিগ্রেন ঘটাতে পারে। মদপান মগজে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়, ফলাফল হতে পারে তীব্র।
প্রক্রিয়াজাত মাংস: এতে থাকতে পারে টাইরামিন। এ ছাড়া ফুড এডিটিভ নাইট্রাইট: ঘটাতে পারে মাথাধরা।
তবে ফুড এডিটিভ মাথা ধরায় দুদিকেই, ঠিক মিগ্রেন নয়। মিগ্রেন আধকপালি: একসঙ্গে মাথার একপাশে হয় ব্যথা।
কোনো বেলা আহার বাদ দেওয়া: Skipping Meals একটি বদভ্যাস। ক্ষুধার কারণে মাথাধরা অনেক সময় স্পষ্ট হয় না। কোনো বেলা আহার না করলে ক্ষুধা বোধ হওয়ার আগেই মাথার একদিক ধরে যায়। সমস্যা হলো রক্তের সুগারমান যায় নেমে। তবে ক্ষুধার মাথাধরা উপশমের জন্য চকলেটবার বা মিষ্টি-মণ্ডা খাওয়া ঠিক নয়, এতে রক্তের সুগার প্রথমে খুব তুঙ্গে উঠে পরে ধপাস নেমে যেতে পারে অনেকটা।
০ ধূমপান: ধূমপান মাথাধরার একটি বড় কারণ। যিনি ধূমপান করছেন, তিনিই শুধু নন, পাশের যে লোক সে ধূমপায়ীর ছেড়ে দেওয়া ধূম সেবন করছে, যাতে রয়েছে নিকোটিন: মগজের রক্তনালি হয় সরু, মাথা ধরে সহসা তারও। যাদের ক্লাস্টার হেডেক হয়, তারা ধূমপান ছেড়ে দিলে বা অন্যের সিগারেটের ধোঁয়া সেবন এড়ালে বেশ লাভ হয়। আধকপালি প্রচণ্ড ব্যথা হয়, চোখ ও নাকের ওপরও প্রভাব পড়ে।
ক্যাফিন: যাদের মাথাধরা বাই রয়েছে, তাদের জন্য ক্যাফিন ব্যবহারে সতর্কতা। মাঝারি কফি পান ঠিক, তবে বেশ কয়েক কাপ কফি মাথা ধরার জন্য যথেষ্ট। চা-কফিতে আসক্ত যাঁরা হন, তাঁরা ছেড়ে দিলেও হঠাৎ তাঁদের মাথা ধরে বেশ।
শনাক্ত করতে হবে ট্রিগারগুলো
কী সব জিনিস মিগ্রেন ঘটায়, তা জানা গেলে মাথা ধরা শুরু হওয়ার আগে একে রোধ করা সম্ভব হতে পারে। রাখা যেতে পারে ‘হেডেক ডায়েরি’। প্রতিদিন কী কী খাবার খাই, চাপের ঘটনা কী কী ঘটল, আবহাওয়ার পরিবর্তন, শরীরচর্চা সব। কখন মাথা ধরা শুরু হয়, ঠিক কটায় ধরে কটায় ছেড়ে যায়, তাহলে একে এড়ানো সম্ভব হবে নানা কৌশলে।
মাথাধরা সমাধান: স্ট্রেস মোকাবিলা
অনেকে মিগ্রেন ও টেনশন হেডেককে চাপ মোকাবিলার কৌশল প্রয়োগ করে সামাল দেন। জীবনে চাপ সম্পূর্ণ এড়ানো যায় না, তবে এর মুখোমুখি হলে সামাল দেওয়ার কৌশল জানা যায়। ধ্যানচর্চা ও ম্যাসাজ অনেক সময় কার্যকর হতে পারে।
পা দুটো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নিন
মাঝারি ব্যায়াম চাপ কমানোর বড় কৌশল। হাঁটা বড় ভালো ব্যায়াম। টেনশন হেডেক রোধে বেশ ফলপ্রসূ। হাঁটার সময় হাত দুটো দুলুনি ঘাড় ও কাঁধের পেশি রিলাক্স করে।
নিয়মিত আহার
নিয়মিত আহার করলে, দিনজুড়ে সুষম খাবার রক্তের সুগারও রাখে সুমিত। ক্ষুধার কারণে মাথা ধরবে না তাহলে। প্রোটিন ও জটিল শ্বেতসারের সমন্বয়ে খাবার চিকেনের ঝোল ও ভাত বা মাছ-ভাত, সবজি, দধি, প্রচুর জলপান। পানিশূন্যতায় মাথা ধরে।
ফিজিক্যাল থেরাপি
মানে ব্যায়াম এবং ব্যথা কমানো ও নড়ন-চড়নের পরিধি বাড়ানো। ঘাড়ের পেশির ব্যায়াম দেহভঙ্গি সব চর্চা।
ওষুধ: ব্যথার ওষুধ খাবেন সতর্কতার সঙ্গে, চিকিৎসকের পরামর্শে।
কখন চিকিৎসক: গুরুতর মাথাধরা দুদিনের বেশি চলছে। দেখতে সমস্যা, চলনে সমস্যা, বিহ্বলতা, খিঁচুনি-জ্বর, নিশ্চল ঘাড়—চিকিৎসক দেখানো চাই।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৫, ২০১১
real
how can i get my strong & fit body, please give some tips
Bangla Health
ব্যায়াম খাওয়া আর ঘুম।
jewel
Mathake char vag korle pisoner dan pasher vag-e amar majhe majhe prochondo betha hoi. Mone hoi kit kit kore kamor marse. Eta beshi hoi journey korle, tension korle, computer e boshle. Eta kisher lokhkhon ? Chititshai ba ki. Hlp plz. Amar chokhe kono prblm ase bole amar mone hoi na.
Bangla Health
অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত ছিল।