যেকোনো সময় হোক, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ মেদভুঁড়ি কমানোর জন্য বেপরোয়া চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু ‘প্রলোভনের ফাঁদপাতা ভুবনে’, বুজরুকি ফাটকা চিকিৎসার ফাঁদ পেতেও বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। মানুষের অসহায়ত্বকে, দুর্বলতাকে পুঁজি করে যাঁরা ব্যবসা করেন, অর্থবিত্ত করে সমাজে একদিন কেউকেটা বনেও যান, তাঁরা নানা পদক, উপাধিও অর্জন করে ফেলেন।
শরীরের ওজনহানি ও অর্জন, পুষ্টিজ্ঞান, ব্যায়াম, স্থূলতা, এসবের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, যুক্তিবুদ্ধি এসবের ধারণা যাদের নেই, তারা এদের জালে ধরা পড়ে।
এদের নিয়ে সমস্যা হলো, এরা এসব ‘আশ্চর্য চিকিৎসা’ মেদভুঁড়ির অলৌকিক সমাধানে বড় বিশ্বাসী। কোনো চেষ্টা-প্রচেষ্টা ছাড়াই মেদ ঝরে পড়বে, ক্ষীণতনু হয়ে মনোহর শরীর পাবেন তাঁরা, এমন বিশ্বাস। অর্থ, সময়, স্বাস্থ্য সবকিছু অপচয়ে এক সচেষ্ট।
অথচ তাঁরা ভাবেন না, স্বাস্থ্যকর আহার, নিয়মিত ব্যায়াম করে জীবনভর স্লিম থাকা যায়। স্লিমিং ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে নানা ছলনার জালে।
এসব প্রোগ্রামে বলা হয়, অনাহারে থাকার জন্য কোনো না কোনোভাবে, কোনো না কোনো অজুহাতে অনশনের তাগিদ। কোনো ফুডপ্যাক, পুষ্টি সাপ্লিমেন্ট বা ম্যাজিক ওষুধ। দেওয়া হতে পারে ম্যাসাজ, স্নান, কখনো বাহারি যন্ত্রের তলে বসে থাকা। ভুঁড়ির চারপাশে বেল্ট বেঁধে, বিভিন্ন স্থানে জেলের প্রলেপ মাখানো, পেশির মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করে একে খেলানো, নাচানো—কত বুজরুকি!
মূল জিনিস হলো, লো-ক্যালরি ডায়েট।
৮০০ ক্যালরির নিচে ডায়েট হলো খুব কম ক্যালরি ডায়েট। শ্রেষ্ঠ তদারকি করলেও এত কম ক্যালরি ডায়েট বেজায় বিপজ্জনক। অনেক টাকা নেবে এরা, কিন্তু না খাইয়ে রেখে মেদভুঁড়ি কমানোর আয়োজন এদের।
কিন্তু অনাহার অনশনে কী হয়, জানি।
১. Starvation বা অনাহারে শরীর হারায় গ্লাইকোজেন। গ্লাইকোজেন হলো যকৃৎ ও পেশিতে সহিষ্ণু শর্করা। শরীর হারায় পানি ও প্রোটিন। মেদ খুব ঝরে না। শরীর কুঁচকে যায়, শুকিয়ে যায়, পানিশূন্য হয়ে যায়, দেখতে লাগে কৃশকায়।
২. অনাহারে অনশনে শরীরে দেখা দেয় অনেক রকমের পুষ্টি ঘাটতি, ক্যালরি, শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ—সব ঘাটতি। শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল, কুঞ্চিত, ফ্যাকাশে, রক্তশূন্য আনফিট, মন-শরীর ভালো লাগে না। প্রথম প্রথম ওজনহানির ভ্রান্ত বিশ্বাস আরও অনাহার করতে প্রণোদনা দেয়—তাই পুষ্টি ঘাটতি আরও বাড়ে। কেবল রক্তশূন্যতা নয়, দেহের আমিষহানিও হয়। সে জন্য শরীর কুঁচকে যায়, চামড়া ঝুলে পড়ে—অনাহার করে স্লিম হওয়ার এসব কর্মসূচির ফলে এমনই হয়। দেহে অনুপুষ্টি উপকরণের (Micronutrients) হয় ঘাটতি। ক্যালসিয়ামহানি হয়। দাঁতে ক্যারেজ, হাড়ে শূল, ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, হাড় হয় ফোঁপরা (ওস্টিওপরোসিস) কোষ্ঠবদ্ধতা, অর্শ, গেজ এসব প্রায়ই দেখা দেয়।
অম্ল হয়, পেটের অসুখ, কোলাইটিস, হজমে অসুবিধা লেগেই থাকে।
৩. শরীরে বিপাক হার কমে আসে। তাই প্রতিদিন ক্যালরি পোড়ার হারও কমে আসে। স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণ যখন শুরু হয়, তখন শরীরে ওজন ফিরে আসে দ্রুত। শরীর আরও স্থূল হয়: আগের চেয়েও বেশি।
এমন স্লিমিং কৌশল বিপজ্জনক বটে। প্রতিবার ওজন আবার শরীরে ফিরে এলে রক্তচাপ, সুগার, কোলেস্টেরল, চর্বি সব বেড়ে যায়। এগুলো সহজে স্বাভাবিক মানে ফিরে আসে না, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও তাই বাড়ে।
স্লিমিংয়ের বাজারে আরও কত কৌশল আছে ফাঁদ হয়ে!
লোকজ ওষুধ, টোটকা চিকিৎসা তো আছেই। অনেকে একে নিরাপদ মনে করেন। ওষুধে কি স্লিম হওয়া যায়?
আছে মেশিন, পেশিতে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করে সঙ্গে লো-ক্যালরি ডায়েট। সব বুজরুকি।
আছে হারবাল ফুডপ্যাক। লতাগুল্ম হলে নিরাপদ, তা তো নয়। এ ধরনের ফুডপ্যাক খুব বিপজ্জনক। সব কৌশলের সঙ্গে থাকে লো-ক্যালরি ডায়েট।
কোনো কোনো জিম সরবরাহ করে ফ্যাট ডায়েট। স্লিম হওয়ার ‘বৈপ্লবিক পথ্য’। এও ফাঁকি সব। লো ক্যালরি ডায়েট নতুন, বাহারি মোড়কে মোড়া। এটকিনস ডায়েটও যথাযথ নয়। ১৯৭২ সালে ডা. এটকিন ডায়েট আবিষ্কৃত হয়। বিশেষজ্ঞরা এর বিরূপ সমালোচনা করলেন। কেউ কেউ একে বেশ অনুসরণ করলেন। ‘হাইফ্যাট, লো কার্বোহাইড্রেট’ ডায়েট। এ এটকিনস ডায়েট—চর্বি খাবেন নির্বিবাদে, মাংস, ডিম, চর্বি, মাখন, পনির যথেচ্ছ, তবে শসা, ডাল, অন্যান্য শর্করা খাদ্য নিষেধ। অনেকে একে হাইপ্রোটিন, লো কার্বোডায়েটও বলেন।
এ ডায়েট মারাত্মক বিপজ্জনক। এসব খেলে রক্তে শাঁ শাঁ উঠে যাবে চর্বি, কোলেস্টেরল এলডিএল—বাড়বে করোনারি ঝুঁকি। পুষ্টিবিজ্ঞানী এবং আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন পুনঃ পুনঃ এটকিনস ডায়েটের বিরূপ সমালোচনা করেছেন, যদিও অনেকে একে অনুসরণ করেন। আছে শল্যচিকিৎসা। লাইপোসাকশন, লাইপেকটমি, পাচকনলের কিছু অংশ কেটে ফেলা—এগুলোর নিরাপদ ব্যবহার, প্রয়োগ এসবও বিবেচনার বিষয়।
ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি কমে অনেকে সুফল পান, বলেন। স্থূলতা, মেদভুঁড়ি এসবের জন্য বিশেষ ক্লিনিক রয়েছে বারডেমে। মেডিসিনের অধ্যাপক জাফর এ লতিফ এবং সার্জারির অধ্যাপক আবু জাফর দুজন এ ক্লিনিকের হোতা ও কর্তাব্যক্তি। এসব বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এ ক্লিনিকের সূচনা। মানুষ অবৈজ্ঞানিক পথে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে যাতে না পড়ে, নিজের বিপদ যাতে নিজে টেনে না আনে, সে জন্য এ উদ্যোগ কেন অবদান রাখবে বলে মনে হয়!
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
শুভাগত চৌধুরী পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১১, ২০১১
sir,amar peter nicee onek corbi jolee porece.er protikaar janaben.
নিয়মিত দৌড়ানোর চেয়ে ভালো আর কিছু হবে না আপনার জন্য। আর বিকেলের পরে কার্ব জাতীয় খাবার খাবেন না।
eta sara r ki kono way nai.pl janaben.
ঠিক কোনটা বুঝাচ্ছেন?
আমার বয়স ২৮, উচ্চতা ৫ ফুট ৭ইঞ্চি, ওজন ৭৫, আমার অল্প আহার করলেও মনে হয় পেট ফেটে যােচ্ছ, মেদ মেদভুঁড়ি আছে, তল পেটে অনেক চর্বি, দৌড়ালে বা ব্যয়াম করলে মুখ শুকনো শুকনো লাগে, শরির দুরবল লাগে, গাল ভেঙ্গে যায়, তাছারা আমার চোখের নিচে কালো কালো দাগ রয়েছে, দৌড়ালে বা ব্যয়াম করলে বা ঘুম কম হলে সেগুলো আরও স্পষট হয়ে উঠে। কিভাবে পেটের চর্বি সরাব ? আর আহারের পর পেট ফেটে যােচ্ছ মনে হ ওয়ার কারনই বা কি ? পরামর দিবেন আশা করি।
কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন বা খাওয়ার পর গ্যাস হয় কিনা, এসব দেখতে হবে।
প্রয়োজনের তুলনায় কম খেলে শরীর দূর্বল লাগবে। তাই প্রথমেই খাওয়া কমাবেন না। ধীরে ধীরে কমাবেন। তবে সারাদিনে যা খান তা অবশ্যই অল্প অল্প করে ২ ঘন্টা পর পর খাবেন। সেই সাথে অবশ্যই যথেষ্ট বিশ্রাম এবং অনেক ঘুমাতে হবে। তাহলে দূর্বলতা কেটে যাবে। ঘুম হলে চোখের নিচের কালো দাগ, ভাঙা গাল ঠিক হয়ে যাবে। এটা নিয়ে চিন্তিত হবেন না।
ghoroa vabe kivabe vhori komano jai
আগে থেকেই বেড়ে গেলে ব্যায়াম না করে শুধু কম খেয়ে কমাতে গেলে শরীর খারাপ করবে। তাই প্রথমেই খাওয়া না কমিয়ে দৌড়ানো উচিত আর পেটের ব্যায়াম “ক্রাঞ্চ” দেয়া উচিত। ধীরে ধীরে সহনশীল মাত্রায় খাওয়া একটু কমানো উচিত এবং পেট ভরে না খেয়ে অল্প অল্প করে ২/৩ ঘন্টা পর পর ৫/৬ বার খাওয়া উচিত।
সাদা ভাত, ময়দা, গোলআলু, সুগার, সোডিয়াম- এসব এড়িয়ে চলবেন।
sir,dr. didarul ahasan ai bangla health a likhashan slim hobar medecine paoua jaccha.madecine ar abar tamon kono side effcts nai.takay dakhia madicine naoua ki thik hobay?apni jodi bolan tahola sir dr. k thakhabo.
মেডিসিন খাওয়া ঠিক হবে না যদি না একান্তই ডাক্তার দরকার মনে করেন।
sir,amar age 24 year amar peter nicee halka kisu corbi jomase.ami ctg port job kori nighi/day 12 hours hate hate duty korte hoy.tar poreo ai obusta.amo bashay boshe kiu floor disk dai tatao kono kaj hosce na.body fiting t-shart porle nijer kase khub kharap lage.
খাওয়াটা কণ্ট্রোল করেন। একবারে পেট ভরে খাবেন না। অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবেন।
sir, poramorsar jonno apnaka thanks.