স্বস্তিকা আসনে বসে ধ্যান করা যায় ব্যস্ত নগরজীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে যাঁরা বড় ক্লান্ত, বড় অবসন্ন, তাঁদের জন্যই এ আয়োজন আমাদের। শরীরটা হয়তো তাঁদের চলছে জীবনের প্রয়োজনে কিন্তু মন যে রোগা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। সুস্থ জীবনের জন্য তাই মনকে শরীরের সঙ্গে বাঁধতে হবে আগে। মনকে শরীরের বশে আনতে খুব বেশি কিছু আয়োজনের দরকার নেই। দরকার মেডিটেশন বা ধ্যানের। প্রশান্তি ইয়োগা আয়ুর্বেদ এবং নেচারোপ্যাথি সেন্টারের পরিচালক ও প্রশিক্ষক গুরুজি সত্যজি বিশ্বাসও বললেন একই কথা। তিনি জানান, একাগ্র মনে কোনো চিন্তার নাম হলো মেডিটেশন বা ধ্যান। এই মেডিটেশন শুধু মনকেই কেন্দ্রভূত করে জাগিয়ে তোলে না, শরীরের যন্ত্রেরও উন্নতি করে। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী চিকিৎসক মুনিরজ্জামান বললেন, মানুষের শক্তির উৎস হলো মন। আর মন যখন শান্ত থাকে, মানুষ তার মস্তিষ্ককে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে। আর মনকে স্থির করার সফলতম পদ্ধতি হলো মেডিটেশন।
যে পরিবেশে মেডিটেশন
সকালে বারান্দার হালকা রোদে হতে পারে মেডিটেশন।
মেডিটেশনের জন্য উপযোগী হতে পারে ছাদ কিংবা বড় ঘর।
কোলাহল থেকে মুক্ত হবে ধ্যানের স্থান।
হালকা আলো আছে এমন ঘর মেডিটেশনের জন্য উপযুক্ত।
ঘরে সুগন্ধ ছড়ানো যেতে পারে।
মিউজিক প্লেয়ারে বাজতে পারে মিষ্টিমধুর কোনো সুর।
সেতার, বেহালা কিংবা শিশিরের শব্দের আওয়াজের আয়োজনও থাকতে পারে কৃত্রিমভাবে।
ধ্যানে বসার স্থানটি খুব শক্ত হবে না, আবার খুব নরমও নয় কিন্তু।
জানতে হবে
ধ্যান বা মেডিটেশন করতে হবে পদ্মাসন, সুখাসন, অর্ধপদ্মাসন, স্বস্তিকা আসনে বসে।
দুই হাত থাকবে ধ্যান মুদ্রায়।
কোমর, কাঁধ, মাথা একটি সরলরেখায় থাকবে।
শিথিল করে রাখতে হবে কাঁধ।
এই ভঙ্গিতে বসে কিছুক্ষণ অন্য সব চিন্তা দূরে সরিয়ে মনকে কেন্দ্রীভূত করুন।
দুর্বল, অসুস্থ শরীর মেডিটেশনের জন্য উপযোগী নয়। তাই সুস্থ হতে হবে আগে।
বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে মেডিটেশনে না বসাই ভালো।
সৎ চিন্তায় মনকে বাঁধতে হবে।
বাদ দিতে হবে অতিরিক্ত ভোজন।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম পরিহার করতে হবে।
পোশাক-পরিচ্ছদ
সুতির আরামদায়ক যেকোনো পোশাকই মেডিটেশনের জন্য উপযোগী।
পরিষ্কার পাজামা-পাঞ্জাবি পরে করতে পারেন মেডিটেশন।
ট্রাউজার অথবা ট্র্যাকসুটও চলবে।
এ ছাড়া যেকোনো ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করতে পারেন।
শরীরে যেকোনো ধরনের অলংকার না রাখাই ভালো।
কার্যকারিতা
মনের একাগ্রতা বাড়ে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
দেহের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
মনের উদ্বিগ্ন, হতাশা, অশান্তি দূর করে।
অনিদ্রা থেকেও মুক্তি পেতে সক্ষম।
দেহতন্ত্রের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুন্দরভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
দীর্ঘায়ু লাভ হয়।
মনোকষ্ট দূর করে।
চিন্তাশক্তির প্রখরতা বাড়ে।
মানসিক চাপ কমায়।
আবেগ, অভিমান, হীনম্মন্যতা দূর করে।
হূদেরাগেরও উপশম হয় মেডিটেশনে।
মেডিটেশনে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০১, ২০১০
Mithun
ধ্যান কত্ক্ষন পর্যন্ত করা যেতে পারে ?