ফ্যাটি লিভার মানে লিভারে চর্বি জমা। শব্দটি বর্তমানে বেশ প্রচলিত। ঐতিহাসিকভাবে এটি অ্যালকোহল বা অতিরিক্ত মদ্যপানের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু যারা অ্যালকোহল বা মদ্যপানের সাথে যুক্ত নন, ইদানীং তাদের মাঝেও এই রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।
ফ্যাটি লিভারের কারণ
ফ্যাটি লিভার সাধারণত মধ্যবয়সী মহিলাদের দেখা দেয়। কিন্তু পুরুষদের মাঝেও এর সংখ্যা কম নয়। সাধারণভাবে এর কারণ অজ্ঞাত। তবে, যাদের স্বাস্থ্য মোটা বা মেদবহুল ও ডায়বেটিসে আক্রান্ত অথবা রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি তাদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা দেয়। এসব রোগীর শরীরে ইনসুলিন রেজিসটেন্স থাকে। অর্থাৎ তাদের শরীরে ইনসুলিন থাকা সত্ত্বেও এর কার্যকারিতা কম হয়। যাদের ওজন আদর্শ ওজনের ১০-৪০ শতাংশ বেশি তাদের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডায়বেটিস রোগীদের মধ্যে এর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি (৩৪-৭৫ শতাংশ)। যাদের রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি তাদের মধ্যে ২০-৪০ শতাংশ রোগী ফ্যাটি লিভারের ভোগেন। এ ছাড়া ফ্যাটি লিভারের অনেক কারণ রয়েছে।
ফ্যাটি লিভারের কারণ
ফ্যাটি লিভারের কারণ সম্পর্কে দুটো মতবাদ প্রচলিত। প্রথমটি হচ্ছে ইনসুলিন রেজিসটেন্স এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে আঘাত।
লক্ষণ
ফ্যাটি লিভার রোগীরা সাধারণত ক্লান্তি, অবসাদ, উপরের পেটের ডান দিক ব্যথা নিয়ে ডাক্তারদের কাছে আসেন। পরীক্ষা করলে দেখা যায়, রোগীদের এসজিপিটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এদের বিলুরুবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায়, লিভারে এনজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক অথচ লিভারের আল্ট্রাসনোগ্রামে চর্বির মাত্রা বেশি। রোগের বিস্তার দেখার জন্য লিভার বায়োপসি করতে হবে।
চিকিৎসা
ফ্যাটি লিভারের ১০০ শতাংশ কার্যকরি ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। চিকিৎসার প্রথম শর্ত হচ্ছে, ঝুঁকিগুলো কমনো। অর্থাৎ মোটা লোকের স্বাস্থ্য কমাতে হবে, ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
—————————
অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ৩০ মার্চ ২০০৮
Leave a Reply