খাদ্যনালির নিচের দিকের অংশ বৃহদান্ত্র ও মলাশয়। এ অংশটুকুর ক্যানসারকে ইংরেজি পরিভাষায় কোলোরেকটাল ক্যানসার বলা হয়। এই ক্যানসার পৃথিবীতে পুরুষদের যত ধরনের ক্যানসার হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান এবং নারীদের যত ধরনের ক্যানসার হয় তার মধ্যে তৃতীয় স্থানের অধিকারী। আমাদের দেশে এই ক্যানসারের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান যত দূর সম্ভব জানা যায়নি।
কোলোরেকটাল ক্যানসার কেন হয়
বহুবিধ কারণে মানুষের শরীরে এই ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব হয়। কোলোনের এডিনোমেটাস পলিপ, আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিজিজ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে ভুগলে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিছু ক্রোমোসোমাল জিনের মিউটেশন জন্মগতভাবে প্রাপ্ত হয়। যেমন, বংশগত পলিপোসিস কোলাই, লিংক সিনড্রোম, বংশগত নন-পলিপোসিস কোলন ক্যানসার সিনড্রোম। পারিপার্শ্বিক কিছু উপাদানও এই কোলোরেকটাল ক্যানসার প্রাদুর্ভাবে সহযোগিতা করে। যেমন, লাল মাংস (গরু ও খাসি), ঝলসানো মাংস ও প্রসেস করা মাংস বেশি খেলে কোলোরেকটাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যাদের ডায়াবেটিস আছে ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি আছে, তাদেরও কোলোরেকটাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই ক্যানসারের উপসর্গ কী কী
এই ক্যানসারের উপসর্গ আক্রান্ত স্থানের ওপরে নির্ভর করে। ডান দিকের কোলন ক্যানসার হলে সে রোগী রক্তস্বল্পতার বিভিন্ন উপসর্গ—যেমন ক্ষুধামান্দ্য, বুক ধড়ফড় করা, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, মাথা ঘোরানো, কানে শব্দ হওয়া ও ওজন কমে যাবে। বাঁ দিকের কোলন ও রেকটামে ক্যানসার হলে মলের সঙ্গে তাজা রক্ত পড়বে, মলের আকৃতিতে পরিবর্তন হবে, অনেক সময় কোলনে অবস্ট্রাকশন হবে।
এই ক্যানসারের চিকিৎসা কী
যেকোনো ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে সে ক্যানসার আরোগ্য করা যায়। কোলন ক্যানসার যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে, তবে ক্যানসারকে কিউরেটিভ সার্জারি করে দিলে রোগী আরোগ্য হয়ে যাবে। আর যদি ক্যানসার শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে থাকে, তবে প্রাথমিক টিউমারকে পালেয়োটিভ সার্জারি করে দিতে হবে। পরে কেমোথেরাপি নিতে হবে। কেমোথেরাপির সাহায্যে ক্যানসার রোগীর আয়ু বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন কিছু দামি কেমোথেরাপি ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে, যেমন—মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। এই ওষুধগুলো অন্য কেমোথেরাপির সঙ্গে ব্যবহার করলে রোগীর আয়ুষ্কাল অনেক বেড়ে যায়।
পরিশেষে কোলোরেকটাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করার জন্য যেমন লাল মাংস না খাওয়ার জন্য, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কোলেস্টেরল কম রাখার জন্য চর্বিযুক্ত খাদ্য পরিহার, শাকসবজি, তাজা ফলমূল বেশি পরিমাণে খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগ প্রতিরোধ রোগ পরিচর্যার চেয়ে ভালো। তাই মলে তাজা রক্ত দেখা দিলে গ্যাস্ট্রো-অ্যান্টারোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
সুসেন কুমার সাহা
অধ্যাপক, গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৭, ২০১১
md jobrul
সালাম বাই আমার নাম জবরুল। আমার আম্মার কোলোরেকটাল ক্যানসার টি ধরা পরেচে তিনি এখন ডেলটা হসপিটালে চিকিক্তস্য ধিন আছন। ওরা প্রতমেই আম্মুকে থেরাপির দেয়া শুরু করেছে বিষয়টা বুঝতে পারছি না আমাকে একটু স্যাহাজ করুন plz
Bangla Health
কিছুদিন আগে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদেরও এই ধরনের রোগ ধরা পড়েছে। উনি এখন আমেরিকাতে চিকিৎসা নিচ্চেন। পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। উনাকেও প্রথমে কেমো থেরাপী দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। খবরগুলো একটু নজরে রাখলেই বুঝতে পারবেন।
জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনও এই চিকিৎসা নিয়েছিলেন। উনি এখন সুস্থ আছেন। যদিও চুল উঠে যাওয়াসহ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।
রোগের অবস্থা বুঝে কেমো থেরাপী দেয়া হয়। অনেক সময় একাধিক বারও দেয়া লাগে। কয়েক মাস বা বছর খানেক পরে আবার চেক আপ করতে হয়। নিয়মিত ঔষধও খাওয়া লাগতে পারে।
এখন ক্যান্সারের জন্য এটা একটা কমন চিকিৎসা। সঠিক ভাবে চিকিৎসা হলে এতে ভয়ের কিছু নেই। আশা করি আপনার মা সুস্থ হয়ে উঠবেন।
md jobrul
ধন্যবাদ আপনাকে এই দু:র সময়ে মনে একটু সাহস জুগানুর জন্য। ওরা বলেছে আম্মুকে টানা একমাস থেরাপী নিতে হবে। তো আমি পিরস্কার বুঝতে পারছিনা ওরা কী থেরাপী মাধ্যমে আম্মুকে শুস্ত করে তুলতে পারবে!। ওতবা থেরাপী ছাইতে কী উন্নত কোন চিক্তিসা আছে?। tell me plz
Bangla Health
সাধারণত থেরাপী দেয়ার পর রোগীদেরকে আলাদা করে রাখা লাগে যাতে রেডিয়েশনের বিক্রিয়া অন্য কারো উপর না পড়ে। এখন মাত্রা বুঝে কাউকে ৭ দিন, ২ সপ্তাহ বা ১ মাস সময় আলাদা করে রাখা হয়, পর্যবেক্ষণ করা হয়।
শরীরের ভিতরের কোনো অঙ্গে ক্যান্সার হলে প্রথমেই ধরা পড়লে হয়তো অপারেশনের মাধ্যমে কেটে বাদ দেয়া যায়। কিন্তু শরীরে একবার ছড়িয়ে পড়লে আর কেটে ফেলে দেয়ার উপায় থাকে না। তখন ভাইরাস কতটা বিস্তার লাভ করেছে, ঠিক বোঝা যায় না। থেরাপী দিয়ে ঐ ভাইরাসগুলোকে নিস্তেজ করে দেয়া হয়। তার মানে এই না যে একেবারে ভালো হয়ে যাবে। এরপর নিয়মিত চেকআপের উপর থাকতে হবে। ওষুধ খেতে হবে।
আবার অনেক সময় রোগ এতটাই দ্রুত বিস্তার লাভ করে ফেলে যে কোনো থেরাপী দিয়েও কাজ হয় না। তাই চিকিৎসার উপর থাকলে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি।
হাশাণ
আমার STOMAC E একটা ছোট পোলীপ ধরা পড়েছে এটা কী CANCER E টার্ন নিতে পারে ?
Bangla Health
পোলীপ জিনিসটা বুঝতে পারছি না। দয়া করে একটু বিস্তারিত বলবেন কি?