পায়ু পথের সঙ্গে চামড়ার অস্বাভাবিক সংযোগই হচ্ছে ফিষ্টুলা বা ভগন্দর। এই ফিষ্টুলা হওয়ার আগে রোগীর মলদ্বারের আশপাশে প্রথমে ফোঁড়া হয়। এই ফোঁড়া অযত্ম-অবহেলায় নিজে নিজেই ফেটে যেতে পারে কিংবা অধিকহারে পুঁজ বের হওয়ার দরুন ফোঁড়া বৃদ্ধি পেয়ে মলদ্বারের ভেতর ও বাইরের মধ্যে অস্বাভাবিক সংযোগ স্হাপন করে। এ অবস্হায় মাঝেমধ্যেই বাইরের মুখ ক্ষণস্হায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গিয়ে পুঁজ বা কষ ঝরতে থাকে এবং কিছুটা ফুলে যায়। ফলে রোগীর মলদ্বারে ব্যথা ও হালকা জ্বর হয়।
রোগ নির্ণয়
রোগীর ইতিহাস শুনে ফিষ্টুলার প্রকারভেদ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। যেমন-ওপর প্রকার ফিষ্টুলা হলে মাঝে মাঝে মল ও বায়ু আসতে পারে। পরীক্ষা করলে ভেতর ও বাইরের মুখ আঙুল দিয়ে অনুভব করা যায় এবং অস্বাভাবিক সংযোগটি শক্ত রেখার মত অনুভুত হবে। ফিষ্টুলোগ্রাম করে সংযোগটি বোঝা যায় এবং অ্যান্ডোরেকটাল আলট্রাসাউন্ড করলে প্রকারভেদ স্পষ্ট বোঝা যায়।
চিকিৎসা
সার্জারিই ফিষ্টুলার একমাত্র চিকিৎসা। অপারেশনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক সংযোগটি সম্পুর্ণভাবে তুলে আনতে হয়। যদি কোনো অংশ থেকে যায় তবে আবার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি জটিল আকারও ধারণ করতে পারে। যেহেতু ওপর/হাই প্রকার ফিষ্টুলার চিকিৎসা একটু জটিল, তাই এক্ষেত্রে ফিষ্টুলেকটমি ও সেটন ব্যবহার করা হয়। হাই ফিষ্টুলার ক্ষেত্রে সম্পুর্ণ ফিষ্টুলার সংযোগ কেটে আনতে হলে রোগীর এনাল স্ফিংকটার ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং মল ঝরবে। তাই এক্ষেত্রে সেটন ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতির ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক। যেসব ক্ষেত্রে ফিষ্টুলেকটমি ও সেটন ব্যবহার করা সম্ভব নয়, সেসব ক্ষেত্রে অ্যান্ডোরেকটাল এডভাসমেন্ট ফ্লাপ ব্যবহার করা হয়।
——————–
ডা. এমএ হাসেম ভুঁঞা
লেখকঃ জেনারেল ও কলোরেক্টাল সার্জন, সহযোগী অধ্যাপক, সার্জারি
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল
আমার দেশ, ১৫ মার্চ ২০০৮
Leave a Reply