সুস্থ ও সবল দেহের জন্য দাঁত ও মাড়ির তথা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা একান্ত প্রয়োজন। দাঁত ও মুখের ভেতরের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করে নীরোগ জীবন আশা করা যায় না। সৌন্দর্যের জন্য যেমন দাঁতের প্রয়োজন, তেমনি সুস্বাস্থ্যের জন্যও দাঁতের প্রয়োজন।
টুথব্রাশ
নরম থেকে মধ্যম টুথব্রাশ ব্যবহার করাই উত্তম। লক্ষ রাখবেন যে শলাকাগুলোর মাথা শক্তভাবে মেলানো ও সব শলাকা মিলে একটি পরিষ্কার সমতল ভূমির মতো তৈরি আছে। তবে যত ধরনের ব্রাশই থাকুক না কেন, দাঁত ও মাড়ির ওপর থেকে খাদ্যকণা দূর করে ফেলাই দাঁত ব্রাশ করার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
সব প্লাক পরিষ্কার হয়েছে কি না, জানার একটি সহজ উপায় আছে। কারণ, এটা খালি চোখে নিখুঁতভাবে বোঝা মুশকিল। তাই এর জন্য রয়েছে এক ধরনের ট্যাবলেট, নাম ‘ডিসক্লোজিং ট্যাবলেট’। এই ডিসক্লোজিং ট্যাবলেট মুখে নিয়ে চোষার পর অথবা পানিতে মিশিয়ে কুলকুচি করলে লুকানো প্লাকগুলো রঙিন হয়ে যায়। তখন খালি চোখে প্লাক খুঁজে পেতে অসুবিধা হয় না। একটি টুথব্রাশ কত দিন ব্যবহার করা যুক্তিসংগত? যখন ব্রাশের শলাকাগুলো সমতল ভূমির মতো অবস্থানে না থেকে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় চলে আসে এবং শলাকার মাথাগুলো সোজা না থেকে বাঁকা হয়ে যায়, তখন সেই ব্রাশটি ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। নিয়মিত ব্যবহূত একটি ব্রাশ সাধারণত দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
কতবার দাঁত ব্রাশ করবেন
প্রতিদিন দুবার দাঁত ব্রাশ করা প্রয়োজন—সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে। প্রতিবারই তিন-চার মিনিট দাঁত ব্রাশের পর প্লাক পরিষ্কার হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।
কীভাবে দাঁত ব্রাশ করবেন
ব্রাশটিকে দাঁতের ৪৫ ডিগ্রি অবস্থানে রেখে দাঁত ও মাড়ির সংযোগস্থল থেকে শুরু করতে হবে। ব্রাশটিকে দাঁতের গোড়ার দিকে খুব ধীরে অথচ শক্তভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একটু ঝাঁকিয়ে সব দাঁতের ফাঁকের কাছে নিতে হবে। এমনভাবে ব্রাশ করতে হবে, যাতে দাঁতের বাইরের অথবা ভেতরের কোনো অংশ বাদ না পড়ে।
দাঁত পরিষ্কারের জন্য ফ্লুরাইডের ব্যবহার
ফ্লুরাইড দাঁতের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে। ফ্লুরাইড এনামেলের সঙ্গে মিলিত হয়ে এনামেলকে আরও শক্তিশালী করে এবং এসিডের আক্রমণ থেকে দাঁতকে রক্ষা করে। আমাদের দেশে ফ্লুরাইড অত্যন্ত সহজভাবে পাওয়ার একমাত্র উপায় ফ্লুরাইড টুথপেস্ট। তবে অন্যান্য উপায়েও ফ্লুরাইড পাওয়া যায়। যেমন—বিশেষভাবে প্রস্তুত ফ্লুরাইড ফোঁটা, ট্যাবলেট, জেলি এবং ফ্লুরাইড-মিশ্রিত পানি (১ পিপিএম)।
উদ্গমকালে প্রায় সব দাঁতই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী থাকে। নষ্ট হয় শুধু আমাদের বদ-অভ্যাস এবং অনিয়মিত দাঁত পরিষ্কারের কারণে। বছরে অন্তত দুবার দন্ত চিকিৎসকের কাছে মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করানো ভালো। যাঁদের দাঁত ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁদের মনে রাখা উচিত, দেহের কোনো অংশের যত্ন নেওয়ার দরকার বা প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় না। স্বাভাবিক দাঁতকে যেভাবেই হোক, চিকিৎসা অথবা যত্নের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখাই শ্রেয়, নিরাপদ। আজকাল বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দন্ত চিকিৎসার প্রয়োগ ও প্রসার অনেক বেড়ে গেছে। তাই একটি মূল্যবান দাঁত ফেলে দেওয়ার আগে একটু ভেবে দেখা দরকার নয় কি?
ব্রাশ ও পেস্ট ছাড়াও দাঁত পরিষ্কার করা যেতে পারে। যেমন, নিমের ডালকে ব্রাশের মতো ছিলে ব্যবহার করা যায়। লক্ষ রাখতে হবে, দাঁতের ফাঁকে বা দাঁতের গায়ে লেগে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কার হয়েছে কি না। দাঁত পরিষ্কার করার পর একবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখে নেওয়া ভালো, সত্যি সত্যি দাঁত পরিষ্কার হয়েছে কি না।
অরূপ রতন চৌধুরী
সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান,
ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টিস্ট্রি,
বারডেম হাসপাতাল,
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৪, ২০১১
raju
sir.amr marite akti bron ar moto ghota otheche.aita theke fuz bahir hoy.akhon ami ki korbo
Bangla Health
অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নেবেন।
Md.Rajib islam
স্যার আমার মারির চারটা দাঁত গর্ত করেছে মাযে মাযে বেথা করে এখন আমি কি করব বললে ভাল হত
Bangla Health
গর্ত আরো বেশি বড় হওয়ার আগেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে ফিলিং করিয়ে নিন।