ফেসবুক, টেক্সটিং, ত্বরিত মেসেজ—এসব বিষয় ছোট ছেলেমেয়ে, তরুণ, টিনএজারের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে। এ রকমটাই দেখেছেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং নিয়ে একজন নামকরা গবেষক।
ডমিনগুয়ে হিল্স এ ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ল্যারি ডি রোজেন বলেন, যেসব টিনএজার ফেসবুক ব্যবহার করে, তারা আত্মপ্রেমিক বা আত্মবিলাসী হলেও যারা ফেসবুক ব্যবহার করে না, তাদের চেয়ে অনেক বেশি সমমর্মী।
উদ্বিগ্ন মা-বাবার প্রতি রোজেনের পরামর্শ—বাচ্চাদের ফেসবুকে বিনিময়, ভাব প্রকাশ গোপনে তদারক করা বা তাদের বিরত করা কাজের কথা নয়। কত দিন তাদের বিরত রাখা যাবে? বরং তাদের সঙ্গে এই নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করুন। বাচ্চাদের কাছ থেকেও অনেক জানার আছে, তারাও আলাপে উৎসাহিত হবে।
মার্কিন মনোবিজ্ঞানী সমিতির অধিবেশনে সম্প্রতি রোজেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের ঝুঁকি ও ভালো দিক নিয়ে কম্পিউটারনির্ভর সমীক্ষা পেশ করেন।
তবে সে সমীক্ষায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের সঙ্গে মনোগত প্রবণতার সম্পর্ক তুলে ধরা গেছে। এর কারণ ও ফলাফল এতে প্রতিফলিত হয়নি। ভালো দিক আগে বলি।
এক হাজার ২০০ টিনএজার ও তরুণের মধ্যে পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেল, ফেসবুক ও ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং বা ত্বরিতবার্তায় যত বেশি সময় তারা অতিবাহিত করেছে, তত বেশি অনলাইনে থাকা, বাস্তব জগতে সমমর্মী হওয়া, অন্যদের অনুভূতিতে সাড়া দেওয়া, সম্পর্কিত হওয়া বেড়েছে।
ডেভিড কার্লসন বলেন, ‘অনেক তরুণকে দেখেছি, তারা অনলাইনে বন্ধুদের কাছে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে, বন্ধুদের প্রতি অনেক কেয়ারিং এবং পর্যায়ক্রমে অফলাইনে এসেছে তারা, বাস্তব জগতে বন্ধুর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।’
ডিজঅ্যাবিলিটি গ্রুপের একটি অনলাইন ‘বিস্ক্যান’ তেমন একটি উদাহরণ এ দেশে। বিভিন্ন বয়সের তিন হাজার ৭০২ জনের মধ্যে সাম্প্রতিক দুটি সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, ৩২ বছর বয়স্ক লোক বা এর চেয়ে তরুণ বয়সী লোক ফেসবুককে যোগাযোগের মাধ্যম, যেমন—টেক্সটিং ও ফোনকোল হিসেবে ব্যবহার করে।
অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং লাজুক ছেলেমেয়ে ও টিনএজারদের ব্যক্তিগত দেখাদেখির চেয়ে আরও স্মার্ট কৌশল, যেমন—ফেসবুকের মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে অন্যের কাছাকাছি যেতে সহায়তা করে।
এর ঝুঁকির দিকও আছে।
এক হাজার ৩০ জন মা-বাবার মধ্যে ২০০৯ সালে একটি সমীক্ষায় রোজেন ও সহকর্মীরা দেখেছেন, শিশু ও টিনএজার যারা গণমাধ্যমে (অনলাইন ও অফলাইন) বেশি সময় ব্যয় করে, তাদের মধ্যে উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা, পেটব্যথা ও স্কুলে অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিতির মাত্রা বেশি।
টিনএজ যাদের হয়নি এবং টিনএজার যারা ভিডিও গেমে বেশি সময় ব্যয় করেছে, তাদেরও রুগ্ণ স্বাস্থ্য হয়েছে বেশি। ৭৭৭ জন টিনএজার ও তরুণের মধ্যে একটি চলমান গবেষণায় দেখেছেন ড. রোজেন। গড়পড়তা যারা বেশি সময় ফেসবুকে কাটায়, তাদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বাইপোলার ডিজ-অর্ডার বেশি—মনোবিজ্ঞান পরীক্ষায় দেখা গেছে।
২০১১ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পরিচালিত আরও একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এমন অভ্যাস যাদের আছে, তারা লেখাপড়া ও অন্যান্য কাজের ১৫ মিনিটের মধ্যে গড়ে তিন মিনিট সময় মনোযোগ হারায়।
ওয়েকফিল্ড রিসার্চের সমীক্ষায় দেখা যায়, ৭৩ শতাংশ কলেজছাত্র কোনো রকমের প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া অধ্যয়ন করতে পারে না, আর ৩৮ শতাংশ ছাত্র একটানা ১০ মিনিটের বেশি সময় তাদের ল্যাপটপ, ফোন বা অন্যান্য মাধ্যম চেক না করে থাকতে পারে না।
রোজেন বলেন, বাচ্চাদের সঙ্গে আগেভাগেই যথাযথ প্রযুক্তির ব্যাপার নিয়ে আলাপ করুন এবং বিশ্বাসের ভিত্তি নির্মাণ করুন। যখন কোনো সমস্যা হবে, বিরক্তিকর কোনো মেসেজ পাবে, তখন সে এ ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আলাপ করবে। বাচ্চাদের সঙ্গে আলাপের সময় মেঝেতে বসুন, যেন একই সমতলে বসেছেন। এরপর বলুন পাঁচ মিনিট এবং তাকে বলতে দিন ১৫ মিনিট। বলুন কম, শুনুন বেশি। কী দিয়ে আলাপ শুরু হবে বুঝছেন না? কেবল জিজ্ঞাসা করুন, ‘এ সপ্তাহে নতুন কোনো প্রযুক্তি সম্পর্কে শুনেছ?’ দেখবেন, কিছু না কিছু তারা শুনেই থাকবে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং আজ বিশ্বজুড়ে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৪, ২০১১
Forhad Hossain
I do apologise that my cell doesnot support bangali font whatever I am a Facebook user I don’t do it too much at all.i am 25 ,unmarried and Muslim guy.i must follow your advise when I would be a father.thank you very much sir for letting us know this quite valuable information.